বাইক্কা বিল, শ্রীমঙ্গল থেকে ফিরে: আলোরা ডুব দেবে জলে, লুকোবে পদ্মপাতা আর উলুখাগড়াবনে। গোধূলি বেলায় আলোর জল ছোট ছোট ঢেউয়ে খেলবে রঙকেলি।

দিনমনি হেলেছে তখন পশ্চিমাসাগর তীরে। ভরপেট পাখিরা খুশিমনে দেয় উঁকি। ডানার ভেলকিতে শুভ্র বকেরা দেখছে অন্তিম দিনের অলি গলি।

চুপ চুপ ওই ডুব দেয় পানকৌড়ি…। ভুঁশ করে ডুব মেরে উঠলো ভেসে জলপাখিটি। আনন্দে যেন উঠলো নেচে নিলাদ্রির দেশে। জল মোরগের জলছায়ায় বিদায় বেলার হাসি।

শুভ্র বকের ধবল দেশে তিমিররঙা পাখির বেশ। ডানা মেলে উড়ছে ওই, ওড়ার তো নেইকো শেষ।

ডানায় ভর করেছে ধবল বক। লম্বা জলমাখা পায়ে ডানা মেলে ফিরছে নিরাপদ গন্তব্যে। ওড়ার ভঙ্গিতে তার সারাদিনের তৃপ্তি, আনন্দ।

সন্ধ্যা নেমেছে পাখির দেশ বাইক্কা বিলে। সারাদিন কেটেছে ছুটোছুটি, লাফালাফি, খুনসুঁটিতে। ক্লান্ত প্রাণ এখন। দূররেখার গোধূলি জানান দিচ্ছে সময় হলো ঘরে ফেরার। তাই ঝাঁক বেঁধেছে সরালি, পিয়াং হাঁস, জল মোরগ, পানকৌড়ি। দিনের শেষে মিলেমিশে একাকার সবাই।

আহা কী আনন্দ আকাশে বাতাসে… পাখি ডাকে শাখে শাখে... কী যে শোভা চারিপাশে। গানের কলিগুলো যে কত সত্য, চমৎকার, অাবেগী অনুভূতির-তা টের পাবেন সন্ধ্যার বাইক্কা বিলে। হিজল-কড়স-তমালে শালিকের কলকাকলি। পাখিদের সে গান সন্ধান দেবে নতুন কোনো আবেশী অনুভূতির।

‘সমস্ত দিনের শেষে শিশিরের শব্দের মতন সন্ধ্যা আসে;/ডানার রৌদ্রের গন্ধ মুছে ফেলে চিল;/পৃথিবীর সব রং নিভে গেলে পাণ্ডুলিপি করে আয়োজন,/ তখন গল্পের তরে জোনাকির রঙে ঝিলমিল;/সব পাখি ঘরে ফেরে-সব নদী-ফুরায় এ জীবনের সব লেনদেন;/ থাকে শুধু অন্ধকার...’
বাংলাদেশ সময়: ০০৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০১৪