ঢাকা, রবিবার, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৮ মে ২০২৫, ২০ জিলকদ ১৪৪৬

ফিচার

দক্ষতার সঙ্গে দরকার মনস্তাত্বিক দৃঢ়তা

মীর সানজিদা আলম, নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬:২৬, মার্চ ১৪, ২০১৪
দক্ষতার সঙ্গে দরকার মনস্তাত্বিক দৃঢ়তা

ঢাকা: বাংলাদেশের ক্রিকেট দলের প্রতি আমাদের প্রত্যাশা অনেক। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই প্রত্যাশা পূরণ করতে পারছে না টাইগাররা।

বেশ কয়েকটি ম্যাচে জিততে জিততে হেরে গেছে। বিষয়টিকে আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি আর মানসিক দুর্বলতার কারণ বলে মনে করছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা।

সেই সঙ্গে মানসিকতার পরির্তন এবং খেলার পদ্ধতিগত পরিবর্তনের কথাও বলেছেন তারা।

শুক্রবার বাংলানিউজের নাগরিক মন্তব্যে অংশ নেওয়া পাঠকদের মতামত বিশ্লেষণ করে এমন তথ্যই পাওয়া গেছে।

ক্রিকেট পাগল সেহজাদ ইসলাম বলেন, খেলায় উন্নতি হচ্ছে, কিন্তু ধারাবাহিকতা নেই। মাঠে সঠিক সিদ্ধান্ত আসছে না। ফলে হারার আগেই হেরে যাচ্ছে টাইগাররা।

এছাড়া খেলোয়‍াড়দের চিন্তা চেতনায় বা মানসিকতায় পরিবর্তনের কথাও বলেন তিনি।

তিনি বলেন, ছোট দলের সঙ্গে খেলার আগেই আমাদের চিন্তা-ভাবনা এমন যে, আমরা আগেই জিতে বসে আছি। এই মানসিকতার পরিবর্তন না হলে খেলায় ভালো করা সম্ভব নয়। এছাড়া বড় দলগুলোর কাছ থেকেও আমরা শিক্ষা নিতে পারছি না।

এদিকে, ক্রিকেটে খেলোয়াড়দের মানসিক অনুপ্রেরণা জরুরি বলে মনে করেন আশরাফুন্নবী আসিফ ও মিরপুর সেনানিবাস এর মাজহারুল ইসলাম তুহিন।

তাদের মতে, ক্রিকেট সম্পূর্ণ মনস্তাত্বিক খেলা, অনুপ্রেরণামূলক কথা ও দিক- নির্দেশনা প্রয়োজন।

এছাড়া সাকিব-মুশফিকদের মানসিকভাবে আরও শক্ত হওয়া প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রামের বেসরকারি কর্মকর্তা মুহাম্মদ বেলাল উদ্দিন

বাংলাদেশ ক্রিকেট দল ভালো খেলেও শেষের দিকে হেরে যাচ্ছে। মানসিক দুর্বলতাই এর অন্যতম কারণ।

পাশাপাশি খেলোয়াড়দের আত্মবিশ্বাসী হওয়া দলের মধ্যে বোঝাপড়ার প্রতি জোর দিয়েছেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাসেল আহমেদ ও প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন ।

তারা বলেন, বাংলাদেশ দল এখন আরো গোছানো, তারপরও সামান্য আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি রয়েছে। বাংলাদেশ দলের একটি উইকেটের পতন হলে অন্যরা যেন হাল ছেড়ে দেন, যা দলের সবচেয়ে বড় সমস্যা। এ অবস্থা থেকে দলকে বেরিয়ে আসতে হবে।

শুধু মানসিক দিক দিয়েই নয় ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশকে আরও মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন অনেকে।

বাংলাদেশের পরপর বেশ কয়েকটি ম্যাচে হারের অন্যমত আরেকটি কারণ শেষ দিকে স্পিন বোলিংয়ের ব্যবহার। যা থেকে প্রতিপক্ষ ব্যটসম্যানরা সহজেই ফায়দা নিতে পারেন, যার প্রমাণ এত রান করার পরও পাকিস্তানের বিপক্ষে হার।
 
ভালো পারফরম্যান্সের জন্য দলে স্পিন নির্ভরতা কমানোর পরামর্শ দিলেন ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ছাত্র ফজলে রাব্বি ও বেসরকারি ওষুধ কোম্পানির কর্মকর্তা তুহিন আহমেদ।

তারা মনে করেন, আগে ব্যাট করে যত বেশি রানের টার্গেটই হোক না কেন ম্যাচের শেষে স্পিনার দিয়ে বল করানো উচিত নয়।

এছাড়া স্পিনারের পাশাপাশি অন্তত দু’জন ভালো পেস বোলার রাখা উচিত বলে মন্তব্য ফাতাহ আসিফ। বেশি গতিতে বল করা থেকেও বিরত থেকে উইকেট লক্ষ্য করে বল করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ব্যাট, বল ও ফিল্ডিং নিয়ে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছেন ফাতাহ আসিফ।

বোলিং নিয়ে এ তরুণ বলেন, অবশ্যই শর্ট বল করা যাবে না। স্লগ ওভারে ইর্য়কার টাইপের বল করতে হবে।

ব্যাটিং প্রসঙ্গে ফাতাহ সাইফ বলেন, ম্যাচের প্রথম ১০ ওভারে কোনো উইকেট হারানো যাবে না। অ্যারিয়েল শটেও খেলা যাবে না। ব্যাটিং পাওয়ার প্লেতে কমপক্ষে ৫০ থেকে ৬০ রান নিতে হবে।

ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশি প্লেয়াররা একদমই কাঁচা বলে মনে করেন অনেকেই। ভালো ফিল্ডিংয়ের কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করছেন তারা।

ফিল্ডিংয়ের দিকে নজর দেওয়ার কথা বললেন নোয়াখালীর মো. মহসিন ও প্রবাসী শিহাব আল মাহমুদ।

তিনি বলেন, ইদানিং দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশ ফিল্ডিংয়ে একেবারেই ভালো করছে না। বার বার ক্যাচ মিস করছে। বিশেষ করে শেষ ১০ ওভারে তাদের আরও ভালো ফিল্ডিং করা উচিত।

এছাড়া অলরাউন্ডার জিয়াউর রহমানকে দলে রেখে তার যথাযথ ব্যবহারের কথা বলেন আসিফ ও শিক্ষার্থী জিতু।

এছাড়া ক্রিকেটের ভেতরে রাজনীতি না আনার পরামর্শ দিয়েছেন জিতু।

সবশেষে অতীতের ভুল সংশোধন করে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার কথা বলেন মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর প্রবাসী মো. নাসিফ হোসেন নয়ন। আর এ ক্ষেত্রে পরিস্থিতি বুঝে মাথা ঠাণ্ডা রেখে খেলার কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৭ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।