ঢাকা, শনিবার, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৭ মে ২০২৫, ১৯ জিলকদ ১৪৪৬

ফিচার

মঙ্গলবার শুরু হচ্ছে একুশে বইমেলা

চলছে স্টল সাজানোর শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি

সাইদ আরমান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬:৪৬, জানুয়ারি ৩০, ২০১১

ঢাকা: আগামী মঙ্গলবার বাংলা একাডেমী প্রাঙ্গণে শুরু হচ্ছে অমর একুশে বইমেলা। চলছে শেষ মুহূর্তের স্টল সাজানোর প্রস্তুতি।

ব্যস্ত লেখক-প্রকাশকরা। নিজ নিজ বইয়ের কাজ নিয়ে। মেলার পুরো আয়োজন নিয়ে ব্যস্ত বাংলা একাডেমীও।

মহান রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের মাস ফেব্রুয়ারির প্রথম দিনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেলার উদ্বোধন করবেন। একই সঙ্গে তিনি বর্ধমান হাউজে জাতীয় সাহিত্য ও লেখক জাদুঘরেরও উদ্বোধন করবেন।

মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. অমর্ত্য সেন। সোমবার দুপুরে তিনি একটি বিশেষ বিমানে ঢাকা এসে পৌঁছাবেন।  

এবারের মেলায় ৫২২টি স্টল থাকছে। গেল বারের চেয়ে এবারের মেলায় ১০টি স্টল বেশি থাকছে। তবে আরও কিছু স্টল বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন বাংলা একাডেমীর কর্মকর্তারা।
 
মেলার প্রস্তুতি নিয়ে বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক ড. শামসুজ্জামান খান বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমরা  আমাদের প্রস্তুতি শেষ করে ফেলেছি। অতীতের চেয়ে এবারের মেলা হবে আরও বর্ণিল। ’

তিনি বলেন, আগের বছরগুলোর মতো এবারও রাস্তার দু’পাশ দিয়ে স্টল থাকছে। তবে মেলা প্রাঙ্গণে স্টলগুলোর মাঝে বেশ খালি জায়গাও থাকছে। যাতে বইপ্রেমীরা সহজে চলাফেরা করতে পারেন এবং লেখকদের আড্ডার জন্যও একটি বিশেষ জায়গা থাকছে।  

স্টল বরাদ্দে অনিয়ম হওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, এখানে ২১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি কাজ করে। অনিয়মের সুযোগ নেই।

তবে স্টল বরাদ্দের জন্য অনেক চাপ থাকার কথা স্বীকার করেন ড. শামসুজ্জামান।

তিনি বলেন, ‘তবে এসব চাপকে ভালোভাবেই নিতে চাই। ’

মেলা নিয়ে মানুষের আগ্রহের বহিঃপ্রকাশই হিসেবেই এ চাপকে দেখছেন তিনি।

এদিকে, মেলা ঘুরে দেখা গেল স্টল তৈরির সরঞ্জাম ও রঙ তুলি নিয়ে ব্যস্ত শিল্পী উত্তম শিকদার। দম ফেলার সময় নেই পর্যন্ত। কর্কশিটের ওপর রং দিয়ে আঁকছিলেন স্টলের নকশা।  

উত্তম শিকদারের মতো আরও অনেক শিল্পীই অমর একুশে গ্রন্থমেলার আয়োজন নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন।  

কেউ হাতুড়ি নিয়ে পেরেক ঠোকার কাজে ব্যস্ত। কেউ কাপড় কাটছেন। কেউবা বোর্ডের কাজ করছেন। কেউ রঙ নিয়ে।  

বাংলা একাডেমীর প্রাঙ্গণ তাই কর্মমুখর। চারপাশে নানা ঠোকাঠুকির শব্দ। দম ফেলার ফুসরত নেই কারও। ভোরে শুরু হয়ে কাজ চলে রাত অবধি।

তবে কাজ আগামীকালের মধ্যে শেষ করতে পারবেনÑএমনটা বলতে পারছেন না কর্মীরা। তারা বলছেন, পুরো মেলা প্রস্তুত হতে আরও তিন চার দিন লেগে যেতে পারে।

গত ২৬ জানুয়ারি লটারির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্টল বুঝিয়ে দেওয়া হয়। এখন চলছে মেলা স্টল সাজানোর কাজ।

কথা হয় ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশের আদিত্য অন্তরের সঙ্গে।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, মেলার কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। তারপরও আগামীকালের মধ্যে কাজ শেষ করা সম্ভব হবে না। তবে আমরা বই নিয়ে বসে যাব।

তার মতে, আরও দু’তিন দিন আগে স্টল বরাদ্দ দিলে ভালো হতো। তবে এবারের স্টলের সারি নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন তিনি।

এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রকাশক বাংলানিউজকে বলেন, মেলায় এবারও স্টল বরাদ্দে অনিয়ম হয়েছে। অতীতে যাদের বিরুদ্ধে নোটবই বিক্রিসহ কপি করার অভিযোগ উঠেছে এবং প্রমাণ হয়েছে, তাদেরও স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

আবার নীতিমালা অনুসারে যাদের পর্যাপ্ত ভালো বই নেই, তাদেরও দু’ তিনটা করে স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

এদিকে, আয়োজকরা বাংলানিউজকে জানান, জাতীয় সাহিত্য ও লেখক জাদুঘরের কাজও এগিয়ে চলছে।

জাদুঘরে কবি লেখকদের হাতের লেখা, জিনিসপত্র, সাহিত্যকর্ম স্থান পাবে বলে জানান তারা।

এবারের মেলার থিম হচ্ছে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তাই মেলাজুড়ে প্রাধান্য পাবে কবির জীবন ও সাহিত্যকর্ম।

ভারত থেকেও অনেক লেখক এবং কবি মেলার বিভিন্ন সেমিনারে অংশ নেবেন বলে জানান বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।