ঢাকা: গাছে, আবার কোথাও কোনো পুরোনো বাড়ির ছাঁদে কিংবা দেয়ালে চাক বাঁধে মৌমাছি।
হাজার হাজার মৌমাছিকে তাড়িয়ে সাবধানে মধু সংগ্রহ করতে হয় মৌয়ালদের।

মৌমাছির হুল সহ্য করে আনা মধু পানে প্রাণ জুড়িয়ে যায়। কিন্তু হিমালয়ের পাদদেশের মৌচাক সংগ্রহ কিন্তু সাধারণ মৌচাক সংগ্রহের মতো নয়। প্রাণকে হাতে নিয়ে তাদের মধু সংগ্রহ করতে হয়।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় মধুর চাক নেপালের অংশে পড়া হিমালয় পাদদেশে। বিশ্বের বৃহত্তম মৌচাক সংগ্রহের গৌরবের অধিকারী হলেও নেপালের কাসকি জেলার আদিবাসীদের অন্য দেশের মৌয়ালদের চেয়ে বেশি ঝুঁকি নিতে হয়।

কাসকির গুরুং আদিবাসীদের দড়ি আর লাঠি দিয়ে তৈরি ঝুলন্ত মই বেয়ে ধোঁয়া দিয়ে মৌমাছি তাড়িয়ে মধু সংগ্রহটা রোমাঞ্চকর।
পাহাড়ে গা ঘেঁষে থাকা মৌচাক সংগ্রহে মৌয়ালরা পাহাড় চূড়া থেকে নিচের দিকে আগে মই ফেলে দেন, সেই মই বেয়ে একজন উপরে উঠেন। এরপর ধোঁয়া দিয়ে মৌমাছি তাড়িয়ে দুটি লাঠির সহায়তায় একটি চাটাইয়ে মৌচাক বসিয়ে তা নিচে নামিয়ে দেওয়া হয়। নিচে থাকা সহযোগীরা সতর্কতার সঙ্গে মৌচাকের চাটাই নামিয়ে নেন।

সহজে বর্ণনা করা গেলেও গুরুং আদিবাসীদের মৌচাক সংগ্রহ প্রত্যক্ষ করলে গা শিরশির করবে। নিচ থেকে মই বেয়ে ১৬৪ ফুট উপরে উঠতে হয়। ভারসাম্য রক্ষা করতে না পারলে ঘটে যেতে পারে দুর্ঘটনা।

তবে এই দুঃসাহসিক মধু সংগ্রহ প্রক্রিয়া আজকালের নয়, এর ইতিহাস অনেক পুরোনো। ১১০০০ খ্রিস্ট পূর্বাব্ধ থেকে বংশ পরম্পয়ায় চলে আসছে এ মধু সংগ্রহ।

তবে দিন যত যাচ্ছে তাদের এ জীবিকা নির্বাহের ধরনে আসছে পরিবর্তন। জলবায়ুর পরিবর্তনে মৌমাছি কমে যাচ্ছে, আগের মতো মৌচাকও তেমন আর হয় না।
বাংলাদেশ সময়: ১০৩৭ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০১৪