রত্ন বলতেই হীরে, মুক্তো, পান্নার কথা মনে পড়ে যায়। কিন্তু আপনি কী কখনো ‘ফরডাইট’ নামে কোনো রত্নের কথা শুনেছেন? অবশ্য এটার কথা যত শুনবেন ততই অবাক হবেন।

হরেক রঙের মিশেলে দৃষ্টিনন্দন চকচকে এ রত্নটি কোনো পাথর নয়, খনি থেকে তুলে আনা রত্নও নয়। এটা গাড়ির রং দিয়ে তৈরি করা রত্ন! কথাটা শুনে আপনি একচোট হেসে নিতেই পারেন। গাড়ির রং দিয়ে আবার রত্ন তৈরি করে কীভাবে?
তাহলে খুলেই বলি।

যেসব কারখানায় অনেক আগে যানবাহন রং করা হতো, সেসব কারখানায়ই তৈরি হয়েছে ফরডাইট। ডেট্রয়েটে এটি বেশি তৈরি হয় বলে এর আরেক নাম ডেট্রয়েট অ্যাগেইট।

গাড়ি রং করার কারখানায় গাড়ির রঙের স্তর জমে জমে তৈরি হয় ফরডাইট। অনেকগুলো স্তর পর পর জমে এই অদ্ভুত সুন্দর রত্নগুলো তৈরি হয়। কারখানার ওভেনে অনেক তাপে থেকে বিভিন্ন রঙের স্তরের কিছু অংশ ঘন ও পুরু হয়ে যায়। তখন সেগুলো ফেলে দিতে হয়। সেগুলো শক্ত হয়ে সৃষ্টি হয় ফরডাইট। এরপর এগুলো সুন্দর আকৃতিতে কেটে পলিশ করে তৈরি হয় একেকটি ফরডাইট পাথর।

তবে ফরডাইট কীভাবে কারখানার বাইরে গিয়ে সুন্দর পাথরে পরিণত হলো তা কেউ জানে না, তবে সম্ভবত কারখানার শৈল্পিক মনের অধিকারী কিছু কর্মী এগুলোকে বাড়িতে নিয়ে গিয়েছিল এবং পরবর্তীতে সেগুলো রত্ন হিসেবে ব্যবহার করে গয়না গড়িয়ে নিয়েছিল।
তবে দুঃখের ব্যাপার হলো, অসম্ভব সুন্দর ফরডাইটগুলো কিন্তু এখন আর তৈরি হয় না। গাড়ি রং করার পদ্ধতি পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এটিও বিলুপ্ত হয়ে গেছে বলা যায়।

আগের সেই কারখানাগুলোর বেশিরভাগই এখন আর নেই। সুতরাং হারিয়ে গেছে ফরডাইটও। তবে ফরডাইট দিয়ে তৈরি জুয়েলারির এখনো এক অন্যরকম আবেদন রয়েছে সবার কাছে। এ ধরনের জুয়েলারি খুঁজে পাওয়া অবশ্য দুষ্কর। ফরডাইটও আজকাল একদমই পাওয়া যায় না বলা যায়।
হয়তো এভাবেই একটা সময়ে পুরোপুরি হারিয়ে যাবে দৃষ্টিকাড়া এই রত্নটি।
বাংলাদেশ সময়: ০৪৫৫ ঘণ্টা, মে ১৯, ২০১৪