ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফিচার

‘কাজ না পাইলে না খাইয়া থাকমু’

এ জেড খান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৫৭ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০১৫
‘কাজ না পাইলে না খাইয়া থাকমু’ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: বেলা গড়িয়ে যাচ্ছে। কাজের আশায় মুখে হাত দিয়ে বসে আছেন কিশোরগঞ্জের শফিক।

বৃষ্টির কারণে দু’দিন কাজ না পাওয়ায় পকেট খালি তার। কাজ পেলেই খাবার জুটবে, তাই কাজের জন্য অপেক্ষা।
 
শফিক একজন দিনমজুর। তার ভাষ্যে- মাটি কাটা, ইট ভাঙা, রাজমিস্ত্রির জোগালি, রংমিস্ত্রির কাজই বেশি করি। আজ কোনও কাজই পাইলাম না। কী আর অইবো, কাজ না পাইলে না খাইয়া থাকমু।

পাশে বসা জাকির হোসেন বললেন, ঈদের সময় কাজের চাহিদা কমে যায়। ঈদের পর কাজ পামু।

ভোর থেকে কাজের আশায় বসে আছেন আরেক দিনমজুর মোস্তফা। দুপুর পার হয়ে গেলে কাজ আর কপালে জুটবে না। বিষণ্ণ মুখে কোদাল ও ঝাকা নিয়ে ঘরে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি।

প্রতিদিন বুকভরা আশা নিয়ে এভাবেই রাজধানীর বিভিন্ন দিনমজুরের হাঁটে জড়ো হন শফিক, জাকির, মোস্তফার মতো শত শত দিন মজুর। উদ্দেশ্য সারাদিন কায়িক শ্রম বিক্রি করে সংসারের খরচ জোগানো।
 
শনিবার (১১ জুলাই) রাজধানীর নতুন বাজার মোড়ে শ্রম বিক্রির হাঁটে হাজির হয়েছিলেন তারা। সকাল গড়িয়ে বিকেল হয়ে গেলেও কাজ না পেয়ে ঘরে ফিরেছেন অনেকে।  
 
মোস্তফার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তার বাড়ি নেত্রকোনায়। ভাই-বোন আর মা-বাবাকে নিয়ে মহানগরীর নতুন বাজার এলাকায় থাকেন।

প্রতিদিন সকালে কোদাল, শাবল ও ঝুড়ি নিয়ে নতুন বাজার মোড়ে মোস্তফার মতো দিনমজুরেরা জড়ো হন। কাজের ধরন বুঝে চুক্তি হয় মালিক বা মহাজনের সঙ্গে। কাজ পেলে দিনে ৪শ’ থেকে ৫শ’ টাকা আয় হয়।

শ্রম বিক্রির হাঁটে এসে মহাজন বা মালিকরা স্বাস্থ্যবান ও কর্মঠ দেখে শ্রমিক বাছাই করেন। চলে দরকষাকষি। সবকিছু ঠিকঠাক হলে শ্রম বেঁচতে যান দিনমজুরেরা।
 
শীর্ণ শরীরের এই মানুষগুলো কাজ না পেলে আহার জোটে না পরিবারের অন্য সদস্যদের। দু’বেলা দু’মুঠো খাবার যোগানোই জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য বলে জানান তারা।
 
বাংলাদেশ সময়:  ০০৫৭ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০১৫
এজেডকে/এসইউ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।