ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফিচার

৭০০০ টাকায় সুখ!

বৃষ্টি দে, চেন্নাই থেকে | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৫৩ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০১৫
৭০০০ টাকায় সুখ!

চেন্নাই (ভারত): পৃথিবীতে এমন অনেক মানুষ আছে যাদের কাছে কোটি টাকা থাকলেও সুখ খুঁজে পান না। আবার অনেকেই নামমাত্র আয় রোজগারেই পেয়ে যান সুখের দেখা! এমনই একজন চেন্নাইয়ের বাসিন্দা ২৪ বছর বয়সী সংগীতা মহালিঙ্গম।



মাত্র ৭ হাজার টাকা আয় দিয়েই চলে যায় সংগীতার সংসার। আর তা ভালোভাবে, বলতে গেলে মহাসুখেই!

স্বামী কৈলাশ মহালিঙ্গমকে নিয়ে ভারতের মোটরগাড়ি শিল্পের রাজধানী চেন্নাইয়ের তারামানি এলাকায় রাস্তার পাশে চায়ের দোকান চালান তিনি।
এ দোকানের আয় দিয়েই তিন সন্তানসহ তাদের সংসার চলে। এই সামান্য আয় নিয়ে বেশ তুষ্টও তারা।

চাকচিক্যের এ শহরে সবাই যখন সুখের আশায় আর টাকার নেশাই মগ্ন, পরিবারকে সময় না দিয়ে সম্পদের পাহাড় বানাতে ব্যস্ত, তখন সংগীতা তার পরিবারকেই মনে করেন সুখের খনি!

সংগীতার স্বামী ক্যাটারিং সার্ভিসে ডিপ্লোমা ডিগ্রি অর্জন করেছেন এবং কর্ণাটক শহরে প্রশিক্ষণও নিয়েছেন, যা দিয়ে কোনো ভালোমানের  হোটেল-রিসোর্টে চাকরি খুঁজে নিতে পারতেন। কিন্তু তাদের কাছে টাকা শুধু জীবনধারণের উপকরণ মাত্র।

তাই তো যখন কৈলাশের কাছে জানতে চাই কেন তিনি চাকরি না করে এই চায়ের দোকানে সময় কাটান। তা ভাষ্যমতে, আমরা এভাবেই সুখে আছি। বাড়তি টাকার লোভে বতর্মানের সুখকে নষ্ট করতে আমি রাজি নই।

যদিও সংগীতা ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন এবং দারিদ্র্যের জন্য ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও আর এগোতে পারেননি। তাই তার ইচ্ছে নিজের স্বপ্নটাকে সন্তানের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত করা।

এজন্য ভবিষ্যতের জন্য অর্থও সঞ্চয় করছেন। এমন কি প্রয়োজনানুস‍ারে রোজগারের নতুন উৎসও খুঁজে নেবেন বলে আলাপে জানান ‍এই সুখী দম্পতি।

তবে সংগীতা জানালেন, ছেলে-মেয়ের পড়াশোনার জন্য সঞ্চিত অর্থ দিয়েই করা ‍যাবে। কেননা ভারতীয় সরকারের নেওয়া পদক্ষেপ ‘সবার জন্য শিক্ষা’ নিশ্চিত করতে বেতন মওকুফ ও বৃত্তির ব্যবস্থাও রয়েছে।

এই সুখি দম্পতির প্রায় ১০ বছর ধরে এখানে ব্যবসা করছেন, এজন্য  তাদের কোনো ভোগান্তি পোহাতে হয় না। কেননা সংগীতাদের মতো দারিদ্র্য মানুষদের আত্ম-কর্মসংস্থানের জন্য ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের খাস জমি ব্যবহার করতে দেয় দেশটির সরকার।

সংগীতা দম্পতি বললেন, মাঝে মাঝে পুলিশ আসে, চা-সিগারেট খায়, তারপর চলে যায়। টাকা দাবি করে না কখনও।

বাংলাদেশ সময়: ০২৫২ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০১৫
বিডি/এমএ/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।