ঢাকা, শনিবার, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৭ মে ২০২৫, ১৯ জিলকদ ১৪৪৬

ফিচার

তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রশ্নে তরুণ প্রজন্মের ভাবনা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯:১৬, জুন ১৫, ২০১১
তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রশ্নে তরুণ প্রজন্মের ভাবনা

গত ১০ মে, ২০১১ সুপ্রিম কোর্ট ১৯৯৬ সালে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে।   যেখানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের বিরুদ্ধে বিএনপি ও জামায়াতসহ চারদলীয় ঐক্যজোট নানা ধরনের আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে। চলুন দেখি এই তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা নিয়ে দেশের তরুণ প্রজন্ম কি ভাবছে? তরুন প্রজন্মের এই ভাবনা নিয়ে লিখছেন ওয়ালিউল্লাহ এবং শেরিফ আল সায়ার

আশিকুর রহমান, ইন্টার্ন ডাক্তার
--------------------------------
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অনেক সময় গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াতে আঘাত করে। যেটা আমরা ওয়ান-ইলেভেনের পর দেখতে পেয়েছি। ঢালাওভাবে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের উপর অভিযোগ আনা হচ্ছিল। এটাও কিন্তু মেনে নেয়া সম্ভব না। অন্যদিকে রাজনৈতিক সরকারের অধীনে নির্বাচন করা কতটা নিরপেক্ষ সে ব্যাপারেও সন্দেহ থেকে যায়।   তাই এই বিষয়ে আরও আলোচনা জরুরি বলে আমার মনে হয়।

মিঠুন চক্রবর্তী, শিক্ষার্থী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
--------------------------------
--------------------
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা থাকা উচিৎ এবং শুধু তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নয়; নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা চালু করার জন্য বর্তমান সরকারকে অনুরোধ জানাচ্ছি। তত্ত্বাবধায়ক সরকার না থাকলে যেটা হবে তা হল, প্রথমত নির্বাচন নিরপেক্ষ হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে, দ্বিতীয়ত নিরপেক্ষ নির্বাচন না হলে জনগনের ভোটের কোন মূল্য থাকবে না, তৃতীয়ত নির্বাচন বিতর্কিত হওয়ার একটা সম্ভাবনা থাকে।

 
কামরুল হাসান, শিক্ষার্থী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
--------------------------------
--------------------

যে দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ; সে দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ছাড়া একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কিভাবে সম্ভব? আমার মনে হয়, তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা থাকা জরুরি। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা না থাকলে বাংলাদেশে আদৌও নির্বাচন হবে কিনা সন্দেহ। কারণ বড় বড় রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনে অংশ নাও নিতে পারে।


নিশান, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম
--------------------------------
----

আমাদের দেশের দুই বৃহৎ দলের এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা প্রয়োজন। যেহেতু ঘুরে-ফিরে এই দুই দলের উপরই দেশের মানুষ নির্ভর করছে। তাই তাদের মধ্যে যদি সমন্বয় না থাকে তাহলে রাজনীতি আবার দ্বন্দের মধ্যেই এগিয়ে যাবে।


নাজমুল হিমেল, শিক্ষার্থী, আইইউবি
--------------------------------
-

আমরা দেশের মানুষ নির্ভর করি আমাদের বিচার বিভাগের উপর। কিন্তু গত ১৫ বছরের গণতন্ত্রের দিকে তাকালে দেখা যায়, দুটি দলই আদালতকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছে। এবং সে কারণেই কিন্তু ওয়ান ইলেভেনের মতো একটি দিন আমাদের ইতিহাসে এসেছে। আমরা কেউ চাই না এই ধ্বংসের রাজনীতি। আমাদের বিচার বিভাগও রাজনৈতিক প্রভাবের আওতায় থাকবে সেটাও চাই না। তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রশ্নে বিচার বিভাগকে আলাদা করে অন্য কোনো নিরপেক্ষ ব্যক্তি খুঁজে পাওয়া যায় কিনা সেটা ভেবে দেখা উচিত।


মশিউর জনি, শিক্ষার্থী, এআইইউবি
--------------------------------

আমাদের দেশের রাজনীতিকে অবশ্যই ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার’ কনসেপ্ট থেকে বের হয়ে আসতে হবে। যে সরকার নির্বাচনকে প্রভাবিত করবে সে সরকার দেশ কিভাবে চালাবে? দেশের সব মানুষ দূর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে; সেই আন্দোলনের সফলতার জন্য সরকারকে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন করেই প্রমাণ করতে হবে।


শোয়ায়েব চমক, সাংস্কৃতিক সংগঠক
--------------------------------
--------------------

রাজনীতি এখন কোন দিকে যাবে সেটা নিয়ে আমরা নতুন প্রজন্ম সন্দিহান। আমরা ভেবেছিলাম রাজনীতিতে একটা পরিবর্তন আসবে। কিন্তু কোনো পরিবর্তনই দেখা যাচ্ছে না। সরকার-বিরোধী দল সবাই তাদের পুরাণ আচরণগুলো চালিয়ে যাচ্ছেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার লাগবে কি লাগবে না এই বিষয়ে দুই দলই জনগণ থেকে কোনো মতামত গ্রহণ করছেন বলে মনে হয় না। আমরা মানুষরা কী চাই(!) সেটা আগে রাজনৈতিক দলগুলোর জানা উচিত।


বাংলাদেশ সময় ১৮৫৪ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।