‘মোর লেহাপড়া করতে ইচ্ছা করে! কিন্তু একলা একলা তো স্কুলে যাওন যায় না, হের লাইগ্যা আমারে এ্যাতোদিন স্কুলে ভর্তি করে নায়। আমি লেহাপড়া কইর্যা চাকরি করতে চাই।
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার টিয়াখালী ইউনিয়নের রজপাড়া গ্রামের দিনমজুর শহিদুল আলমের চার সন্তানের মধ্যে কুলসুম তৃতীয় । দারিদ্র্যতার কষাঘাতে পিষ্ট এ পরিবারের কেউই বিদ্যালয়ের গন্ডি পার করতে পারেনি। কিন্তু শারীরিক প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও কুলসুমের লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ বিপদে ফেলেছে দরিদ্র ওই পরিবারকে। মেয়ের লেখাপড়ার প্রতি প্রচন্ড আগ্রহের কারণে নিজের দিনমজুরি কাজ ফেলে মা রাশিদা বেগমের ১৩ বছরের মেয়েকে চার কিলোমিটার মেঠো পথ বয়ে নিয়ে প্রতিদিন স্কুলে আনা নেয়া অসম্ভব হয়ে পড়েছে ।
টিয়াখালী ইউনিয়নের পশ্চিম বাদুরতলী রেজিঃ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেনীর ছাত্রী কুলসুম। এ বয়সে তার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়ার কথা থাকলেও দারিদ্রতা ও শারিরীক প্রতিবন্ধকতা তাকে এখনও শিশু করে রেখেছে।
মেয়ের কথা বলতে গিয়ে কান্নাজড়িত কন্ঠে রাশিদা বেগম জানান, ‘মাইয়াডা খালি স্কুলে আইতে চায়। এতো বড়ো মাইয়া কোলে লইয়া রজপাড়া গ্রাম দিয়া কী রোজ আমার স্কুলে আওয়া সম্ভব? কিন্তু স্কুলে না আনলে বাসায় বইয়া খালি কান্দে। তাই কাজ ছাইড়া ওরে স্কুলে ভর্তি করছি। ’
পশ্চিম বাদুরতলী রেজিঃ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা মাকসুদা পারভীন জানান, কুলসুম লেখাপড়ায় সবার চেয়ে ভালো। ও নিয়মিত স্কুলে আসতে না পারলেও যেখান থেকে পড়া জিজ্ঞাসা করি তা বলতে পারে। ওর যদি একটি হুইল চেয়ার থাকতো তাহলে হয়তো প্রতিদিন বিদ্যালয়ে আসতে পারতো।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩০ ঘণ্টা, জুন ১১, ২০১১