সভ্যতার ইতিহাস অনেক পুরনো। সেই সভ্যতার বুকে বর্বরতা আর ধংসের ইতিহাসও তেমনি পুরনো।
সভ্য মানুষের বর্বর আচরণের এক প্রকৃষ্ট উদাহরণ জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকি। ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ৬ আগস্ট হিরোশিমা ও ৯ আগস্ট নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমা হামলা চালায় তথাকথিত বিশ্বমোড়ল যুক্তরাষ্ট্র। ওই দুই হামলায় তাৎক্ষণিকভাবে মারা যায় প্রায় দেড় লাখ মানুষ।
১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট। মার্কিন বোমারু বিমান বি-২৯ ইনোলা গে ‘লিটল বয়’ নামে একটি পারমাণবিক বোমা নিয়ে হিরোশিমার দিকে যাত্রা শুরু করে। বোমাটির দৈর্ঘ্য ছিল ৩ মিটার এবং প্রস্থ ছিল ৬০ মিটার। ওই দিন সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে প্লেন থেকে বোমাটি হিরোশিমা শহরের নিক্ষেপ করা হয়। হিরোশিমা থেকে প্রায় ৫০০ মিটার ওপরে বিস্ফোরিত হয় বোমাটি। শান্ত শহরের দৃশ্যপট পাল্টে যায় মুহূর্তেই। চোখের পলকে ধ্বংস হয়ে যায় শহরের ৬০ ভাগ। তাৎক্ষণিকভাবে মারা যায় ৭৫ হাজার নিরীহ প্রাণ।
হিরোশিমার ধাক্কা সামলে উঠতে না উঠতেই তার ঠিক তিন দিনের মাথায় আবারও হামলা। তিনিয়ন দ্বীপ থেকে বি-২০ নামে একটি বিমান ‘ফ্যাটম্যান’ নামের বোমাটি নিয়ে নাগাসাকির উদ্দেশে রওনা হয়। বোমাটি ছিল লম্বায় ৪ মিটার এবং প্রস্থে ২ মিটার। নাগাসাকি শহরে ৯ আগস্ট বেলা ১১টা ২ মিনিটে মাটি থেকে ৫০০ মিটার ওপরে বিস্ফোরিত হয় বোমাটি। চোখের পলকে নিভে যায় ৪০ হাজার প্রাণ।
১৯৫০ সাল পর্যন্ত ওই দুই বোমার আঘাতে হিরোশিমা এবং নাগাসাকিতে মারা যাওয়া মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল প্রায় তিন লাখ। এ তো গেল শুধু হিসাবের অংকের কথা। কিন্তু হিসাবের বাইরেও মানুষ মারা গিয়েছিল অসংখ্য। বোমা হামলা-পরবর্তী পারমাণু তেজস্ক্রিয়তায় মারা যায় আরও হাজার হাজার মানুষ। আজও জাপানের হিরোশিমা-নাগাসাকির মানুষ ভোলেনি সেই দিনের কথা। এখনও কোথাও কোথাও জন্মে বিকলাঙ্গ শিশু।
মানবতার ইতিহাসের এই দুই কলঙ্কজনক ঘটনার কিছু স্থিরচিত্র দেওয়া হলো।