ঢাকা, রবিবার, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৮ মে ২০২৫, ২০ জিলকদ ১৪৪৬

ফিচার

বসুন্ধরা সিটির ‘দেশীদশ’

চোখধাঁধানো দেশি পোশাক

সাইদ আরমান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯:০৭, আগস্ট ১৫, ২০১১
চোখধাঁধানো দেশি পোশাক

ঢাকা: বিদেশি পোশাকের সঙ্গে সমান তালে পাল্লা দিয়ে চলছে দেশে তৈরি বিভিন্ন ধরনের পোশাক। আর ক্রেতাদের রুচির সঙ্গে মানিয়ে দেশীয় বুটিকস হাউজগুলোও ঈদকে সামনে রেখে বুনন ও নকশায় এনেছে নতুনত্ব ও আধুনিকতা।

সোমবার সরকারি ছুটির দিন। নগরবাসী যেন দিনটি রেখে ছিলেন ঈদের কেনাকাটার জন্য। তাই রাস্তায় ভিড় খুব একটা না থাকলেও নগরের বিপণিবিতান এলাকাগুলোতে ভীড় ছিলো লক্ষণীয়। আর এসব এলাকায় যানজটেও পড়তে হয়ে সাধারণ ক্রেতাদের।
 
বৃহত্তম শপিং মল বসুন্ধরা সিটি ঈদের কেনাকাটায় সব সময়ই ক্রেতাদের গন্তব্যের শীর্ষে। হোক দেশি বা বিদেশি পোশাক। বাহারি সব পোশাকই মিলবে এখানটাতে। আর দেশীয় পোশাক তো কথাই নেই। বসুন্ধরা সিটির লেভেল-৭ এ দেশীয় দশটি ফ্যাশন হাউসের সম্মিলিত ব্র্যান্ড ‘দেশীদশ। ’  

ক্রেতারা একটি থেকে বের হয়ে আরেকটিতে যাচ্ছেন। নেড়ে চেড়ে দেখছেন কাপড়ের নকশা। এরপর দেখছেন দাম। বাজেটের সঙ্গে মিলে গেলেই কিনে নিচ্ছেন। ক্রেতাদের সামাল দিতে শোরুমগুলোর বিক্রয়কর্মীরা রীতিমত হিমশিম খাচ্ছেন। সোমবার বসুন্ধরা সিটির লেবেল ৭-এর দেশীদশে গিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতাদের এমন দৃশ্যই দেখা যায়। শুধু এখানে নয়, দেশি সব বুটিক হাউজগুলোতেই এখন ক্রেতাদের সমাগম অনেক বেড়েছে।

সালোয়ার-কামিজ, শাড়ি, পাঞ্জাবি, শার্ট, গেঞ্জি, টিশার্ট, ফতুয়া, মেয়েদের তৈরি করা থ্রি পিস, থ্রি পিসের কাপড়, ওড়না, টপস, মেয়েদের ফতুয়া, শিশুদের পোশাক, কুর্তা, সব ধরনের পোশাকই দেশি দশের বুটিক হাউসগুলো নিয়ে এসেছে।

কথা হয় ব্যাংকার ফেরদৌসি রহমানের সঙ্গে। নিজের জন্য কেনাকাটা করতে এসেছেন। আমি উৎসব পার্বনে সব সময় দেশীয় পোশাকই পরে থাকি। পরতে আমার ভালোও লাগে। নকশা ও কাজেও দেশীয় বুটিকসগুলো এখন এগিয়ে।

তার সঙ্গে বিক্রেতারাও একমত। প্রবর্তনার ব্যবস্থাপক আশরাফুল ইসলাম জানান, সব বয়সের মানুষের ভিড় এখন দেশীয় বুটিকসগুলোর দিকে। বিশেষ করে ফ্যাশন সচেতন তরুণ-তরুণীদের। আর আমরাও তাদের রুচিকে মাথায় রেখে প্রতি ঈদে নিয়ে আসি নান্দনিক সব পোশাক। বেচা বিক্রিও ভালো। ’

শিশু, তরুণ, তরুণী সবার পোশাকেই কাপড়ের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে সুতি, অ্যান্ডি ও পাতলা খাদি কাপড়। এরপরেই রয়েছে সিল্ক, ভয়েল, কটন, হাফ সিল্ক, মসলিন, ডুপিয়ান। টাঙ্গাইল, নরসিংদী ও সিরাজগঞ্জের তাঁত, কুমিল্লার খাদি, মানিকগঞ্জের অ্যান্ডি কটন ও রাজশাহী সিল্কের ব্যবহারও করেছে ফ্যাশন হাউসগুলো। এর সঙ্গে আছে সফট সিল্ক, কাতান কাপড়। ওড়নায়ও ব্যবহার করা হয়েছে নিজস্ব তাঁতে বোনা কাপড়। কাপড়ের মধ্যেমিল থাকলেও নকশা ও কাজে ভিন্নতা আনার চেষ্টা করেছে দেশিয় বুটিক হাউসগুলো।

সাদাকালো: পোশাকে সাদা আর কালোর মিশেলে হাল ফ্যাশনের পোশাক তৈরিতে নতুনত্ব নিয়ে এসেছে সাদাকালো। প্রতিষ্ঠানটি এবারের ঈদেও ফ্যাশন সচেতনদের জন্য নিয়ে এসেছে বাহারি পোশাক। শিশু, তরুণ, তরুণী থেকে সব বয়সের জন্যই তাদের আয়োজন। এখানে ছোটদের পাঞ্জাবি পাওয়া যাবে ৩৫০ টাকা থেকে ৭০০ টাকায়, ফতুয়াও পাবেন প্রায় একই দামে, কুর্তার দাম পড়বে ৫২০ থেকে ২৬শ ২০ টাকা। পাঞ্জাবি দাম রাখা হচ্ছে ৫৮০ টাকা থেকে ৯ হাজার টাকা। মেয়েদের থ্রি পিসের দাম ১২শ টাকা থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা। আর সাদাকালোর শাড়ির দাম এক হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা।  

নগরদোলা: বাহারি পোশাকের সঙ্গে নগরদোলায় পাবেন গৃহস্থলিও। এখানে ছেলেদের পাঞ্জাবি পাওয়া যাবে ৬৯০ টাকা থেকে সাড়ে তিন হাজারে, শাড়ী দেড় হাজার থেকে ৬ হাজার টাকা, ফতুয়া মিলবে ৫৩০ থেকে ৭২০ টাকাতে। মেয়েদের থ্রি পিসের দাম এক হ্জাার থেকে ২ হাজার ৩০০ টাকা। আর কাপড় পড়বে ৭৫০ টাকা থেকে ৬ হাজার টাকা পর্যন্ত।

বাংলার মেলা: বাংলার মেলায় আপনি পাঞ্জাবি পাবেন ৫৫০ টাকা থেকে এক হাজার টাকায়, শাড়ি কিনতে লাগবে ৫০০ টাকা থেকে ৮ হাজার টাকা, আর থ্রি পিসের দাম রাখা হয়েছে ১৫শ থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা। এখানে ছেলেদের শার্টস বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৯৫০ টাকায়।

ক্রে ক্রাফট: দেড় হাজার টাকা থেকে সাড়ে ৬ হাজার টাকা লাগবে আপনি যদি এখান থেকে থ্রি পিস কিনতে চান। আর পাঞ্জাবির দাম ৭০০ থেকে দেড় হাজার টাকা। বাহারি রং ও চোখ ধাঁধানো কাজের শাড়ি পাওয়া যাবে ৭০০ টাকা থেকে ১১ হাজার টাকা। সুতি শার্টের দাম ৫০০ থেকে এক হাজার টাকা।

নিপুন: ফ্যাশন সচেতনদের জন্য নিপুনের আয়োজন বরাবরের চেয়ে এবারর ঈদে আর নতুনত্ব নিয়ে আসা হয়েছে বলে জানান এর ব্যবস্থাপক রফিকুল মিয়া। নিপুনের থ্রি পিসের দাম ১২শ থেকে ৪ হাজার, পাঞ্জাবি ১৩শ থেকে ২৫শ টাকা। আর শাড়ির দাম পড়বে ৯০০ টাকা থেকে সাড়ে ৭ হাজার টাকা। এছাড়া নিপুনে শার্ট ও ছোটদের পোশাকও মিলবে।

বিবিয়ানা: বিবিয়ানা মূলত নারীদের ফ্যাশন হাউস। এখানে নারীদের প্রায় সব ধরনের পোশাক পাওয়া যাবে। এখানে মেয়েদের স্যান্ডেল থেকে শাড়ি পর্যন্ত পাওয়া যাবে। শাড়ির দাম ৭০০ থেকে ৬ হাজার টাকা, পাঞ্জবি ৫০০ থেকে ১৭শ। সালোয়ার কামিজের দাম পড়বে এক হাজার থেকে ২৬শ টাকা। মেয়েদের ফতুয়ার দাম ৪০০ টাকা থেকে ১২শ টাকা।

অঞ্জনস: ছোটদের পাঞ্জবির দাম হবে ৬০০ টাকা থেকে ১৭শ টাকা। ৯ হাজার টাকায় বিয়ের সেরওয়ানি পাবেন। আর সাধারণ পাঞ্জাবি পাওয়া যাবে ৯৫০ থেকে ৫ হাজার ৬৯০ টাকাতে। কটনের থ্রি পিসের দাম দেড় হাজার থেকে ৮ হাজার ৯০০ টাকাতে। শাড়ীর দাম পড়বে ৭৫০ টাকা থেকে ৩০ হাজার টাকা।

দেশাল: দেশালে বাচ্চাদের ফতুয়া পাওয়া যাবে দেড়শ টাকা থেকে ২৫০ টাকাতে। শর্ট পাঞ্জাবির দাম ৪৩০ থেকে ৫৭০ টাকা, মেয়েদের শুধু ওড়না ২০০ টাকা থেকে ৩৩০ টাকা। টপস পাওয়া যাবে ৪২০ থেকে ৮৬০ টাকাতে। থ্রি পিসের দাম ৮০০ টাকা থেকে আড়াই হাজার টাকা।  

রঙ: বিভিন্ন কাজ কার রঙের পাঞ্জাবির দাম ৮৫০ টাকা থেকে ৫ হাজার টাকা, মেয়েদের থ্রি পিসের দাম ১২শ থেকে আড়াই হাজার টাকা। শার্ট কিনতে লাগবে ৫৯০ থেকে ২২শ টাকা। আর যারা শাড়ি পাবেন ৫০০ টাকা থেকে ২০ হাজার টাকার মধ্যে।  

প্রবর্তনা: প্রবর্তনার পাঞ্জাবির দাম ৮০০ টাকা থেকে ২২শ টাকা। আর ছোটদের পাঞ্জাবি পাবেন ৩৪০ টাকা থেকে এক হাজার টাকাতে। মেয়েদের সালোয়ারের দাম ১৪শ টাকা থেকে ২২শ টাকা। তবে গজ কাপড় কিনতে লাগবে ১৯০ টাকা গজ থেকে ২৭৫ টাকা গজ। শাড়ি কিনতে খরচ পরবে ৪৪০ টাকা থেকে ১৬ হাজার টাকা।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫২ ঘণ্টা, ১৫ আগস্ট, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।