নিবর তাদের অভিব্যক্তি! তাদের মাঝে পরস্পরের কোনো প্রকার শব্দ নেই। আওয়াজ নেই।
জেলা শহরের গিয়াসনগর ইউনিয়নের ঢাকা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের একপাশে ভাই ভাই স্যানিটেশন নামক একটি প্রতিষ্ঠান। তার ভেতর চিড়িয়াখানার মতো করে তাদের অবস্থান। বর্ণিল রঙের কারুকাজ যেন কাছে ডাকে। আহ্বান জানায় এগিয়ে এসে দেখে যেতে।
ভাই ভাই স্যানিটেশন প্রতিষ্ঠানের পরিচালক আলতাফ মিয়া বলেন, আমাদের এলাকায় কিছু কিছু পরিবার রয়েছেন যাদের কেউ না কেউ প্রবাসে থাকেন। তারা তাদের বাড়ি সাজাতে সবসময়ই ‘আনকমন’ কিছুর ব্যবহার করতে চান। তাদের কথা মাথায় রেখেই আমরা প্রাণির এই ভাস্কর্যগুলোর তৈরি করেছি। তাছাড়া মৌলভীবাজার জেলায় অনেক রিসোর্ট, গেস্ট হাউজ, রেস্ট হাউজ প্রভৃতি বিলাশবহুল আবাসন রয়েছে। তাদের প্রতিষ্ঠানগুলো ডেকোরেশনের কথা মাথায় রেখেও আমরা আমাদের এই উদ্যোগটি নিয়েছি।
তিনি আরো বলেন, আমার এখানে একটি প্লেন, দুটি করে হরিণ, ময়ূর, দোয়েল, পানির ফোয়ারা এবং চারটি বক তৈরি করা রয়েছে। ঢাকার এক ভাস্কর্য শিল্পীকে এনে এগুলো তৈরি করা হয়েছে। এতে সময় লেগেছে প্রায় দুই মাস। প্রায় দেড় লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। এগুলোর দাম দুই হাজার থেকে শুরু করে ৬০ টাকা পর্যন্ত রয়েছে। তবে আলোচনা সাপেক্ষে কমানো যাবে।
এই স্ট্যাচুগুলোর নির্মাণ শিল্পী হাবিব গাজী বাংলানিউজকে বলেন, এই ভাস্কর্যগুলো তৈরিতে আমার সময় লেগেছে প্রায় দুই মাস। অত্যন্ত যত্ন করে তৈরি করেছি। ময়ূরের ওপর দুইজন উঠে বসলেও কিছু হবে না। এগুলো সবই পাথরের গুড়ো এবং শক্তিশালী রড দিয়ে ঢালাই করে মজবুকভাবে তৈরি করা। প্রায় একশত বছরেও কিছু হবে না।
তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ভাই আমার টাকা-পয়সা তেমন নেই। তাই এতো বছর কাজ করার পরও আমি স্বাবলম্বী হতে পারিনি। খুব কষ্টে চলে সংসার। আমি চাই আমার এই কাজগুলো ছড়িয়ে পড়ুক। সরকারি বা অন্য কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে আবেদন জানাচ্ছি, আমাকে অর্থনৈতিক কিছু সুযোগ-সুবিধা দিলে আমি সেই প্রতিষ্ঠানের পক্ষে বা তাদের জন্য দারুণ দারুণ পশুপাখির নানান ভাষ্কর্যসহ বিভিন্ন আকৃতির অন্য ভাস্কর্যও তৈরি করে দিতে পারবো।
ভাস্কর্যের সঙ্গে আমার ভালোবাসা অনেক বছর ধরে। একটা সুন্দর কিছু দেখলেই ভাবতে থাকি, এমন যদি আমি তৈরি করতে পারতাম। কিন্তু অর্থের অভাবে তা আর কথা হয়ে উঠে না বলে জানান শিল্পী হাবিব গাজী।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০১৭
বিবিবি/এএটি/বিএস