‘সাওয়াসদেকা’ (মানে স্বাগতম) বলে আমাদের বরণ করে নিল থাই এয়ারওয়েজের সুন্দরী বিমানবালা ইরিকা। ‘২০তম এশিয়ান প্যাসিফিক কনভেনশনে’ যোগদানের জন্য বাংলাদেশের প্রতিনিধি হয়ে আটজন জুনিয়র অ্যাম্বাসেডর এবং দুজন পিস অ্যাম্বাসেডর তিথি ও তূর্যকে সাথে নিয়ে চ্যাপরন বা দলনেতা হিসেবে আমি যাচ্ছি জাপানের ফুকুওয়াকা শহরে।
৩ ঘণ্টা ১০ মিনিটের বিমানযাত্রা শেষে আমরা থাইল্যান্ডের সুবর্ণভূমি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাই স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে চারটায়। থাই বিমানবন্দরের ৮ ঘণ্টার যাত্রাবিরতিতে ছেলে- মেয়েরা খুব মজা করল। জীবনের প্রথম বিদেশ সফর ওরা ভীষণভাবে উপভোগ করছিল। বিশাল এয়ারপোর্টের ব্যাপক সব দক্ষযজ্ঞ দেখে ওদের বিস্ময়ের ঘোর যেন আর কাটে না।
স্থানীয় সময় রাত ১২টা ৫০ মিনিটে সুবর্ণভূমি বিমানবন্দর থেকে আবার আমাদের উড়াল দিতে হলো ফুকুওয়াকা শহরের উদ্দেশে। প্রায় সাড়ে ৬ ঘণ্টার যাত্রা শেষে ১১ জুলাই স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় আমরা পা রাখি ফুক্ওুয়াকা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। আসার পথে দলের ছোট্ট সদস্য রিশা একটু অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। আমার নিজেরও একটু খারাপ লাগছিল। পৃথিবী থেকে প্রায় ৩৫০০০ ফুট উঁচু দিয়ে বিশাল পথ পাড়ি দিয়েছি, একটু কাবু তো হতেই পারি।
২০তম এশিয়ান প্যাসিফিক কনভেনশন (APCC) সম্মেলনে যোগদানের জন্য থাই বিমানবন্দর থেকেই সহযাত্রী হিসেবে পেয়েছিলাম লাওস, ভুটান, পাকিস্তান, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ডের প্রতিনিধিদের। বিমানবন্দর থেকেই শুরু হয়ে গেছে বিভিন্ন দেশের ছেলেমেয়েদের মধ্যে পরিচয় ও বন্ধুত্বের পালা। ফলে যা হবার তাই, পুরো বিমানজুড়ে শুধু বাচ্চাদের কিচির-মিচির। ওদের এই আনন্দ ও হৈচৈ থাই বিমানবালারাও বেশ উপভোগ করছিল। বেশ সিরিয়াসলিই ওরা ওদের ক্ষুদে যাত্রীদের আপ্যায়ন করছিল।
বিমান থেকে নেমেই দেখতে পেলাম ‘ÔWe are the Bridge’ স্লোগান লেখা হলুদ টি-শার্ট পরা একঝাঁক স্বেচ্ছাসেবক অপেক্ষা করছে বিভিন্ন দেশ থেকে আগত প্রতিনিধিদের বরণ করে নেওয়ার জন্য।
ইমিগ্রেশনের যাবতীয় ঝামেলা শেষে বাইরে বেরুবার পর শুরু হলো APCC অফিসিয়াল ফটোসেশন পর্ব। এরপর আমাদের মূল গন্তব্য মেরিন হাউসের উদ্দেশ্যে যাত্রা। বিলাসবহুল বাসে করে যাচ্ছি আর পথের দু পাশের দৃশ্য, বাড়িঘর দেখছি। অতি উঁচু কোনো ভবন দেখতে পেলাম না। বড় বড় অফিস বা কোম্পানিগুলোও সর্বোচ্চ ৬ থেকে ৮ তলা। সাধারণ বাসাবাড়িগুলো একান্তই জাপানি স্টাইলে তৈরি। একতলা বা দোতলা বাড়ির ছাদগুলো টালি দেওয়া। সিমেন্টে তৈরি টালিগুলোর বেশির ভাগই লাল ও খয়েরি রঙের।
ফুকুওয়াকাকে নদীর শহর বলা যেতে পারে। একটু পরপরই নদী দেখতে পেলাম। নদীর পাড়গুলো খুব সুন্দর করে বাঁধানো। প্রশস্ত রাস্তা, দু পাশেই ফুলগাছের ঝাড়। অনেকটা আমাদের দেশের টগর ফুলের মতো ফুল ফুটে আছে তাতে। লাল ও গোলাপির মিশ্রণে ফুলের ঝাড়গুলো দেখতে অদ্ভুত সুন্দর লাগছিল। মূল রাস্তার সঙ্গে আশপাশ থেকে ছোট ছোট রাস্তা এসে মিলেছে। ফাঁকা রাস্তা, তারপরও ট্রাফিক সিগন্যালে হয়তো একটিমাত্র গাড়িই অপেক্ষা করছে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাস্তা। মাঝে মাঝে সাইকেলে করে মহিলা বা স্কুল ছাত্রছাত্রীরা ছুটে যাচ্ছে ফুটপাতের ওপর দিয়ে। সাইকেল চালানোর জন্য ফুটপাতের মাঝখানে হলুদ রঙের চিহ্ন দেওয়া আছে। কয়েকটা মোটরবাইক ছুটে চলেছে রাস্তার একেবারে পাশ দিয়ে। ফাঁকা রাস্তা বলে ইচ্ছে করলেই সাঁই করে রাস্তার মাঝখান দিয়ে যেতে পারে। কিন্তু ওরা তা করছে না, কারন নিয়ম মেনে চলা জাপানিদের অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য।
বাসে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে আমাদের সাথে ছিল ‘আন্টি’। খুবই মিশুক প্রকৃতির মেয়ে। স্থানীয় একটি হাসপাতালে নার্স হিসেবে কাজ করে । কয়েক দিন ছুটি পেয়েছিল, সেটা কাজে লাগাচ্ছে এই সম্মেলনে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করে ।
একটু এগুনোর পরই হাকাতা উপসাগর দেখতে পেলাম। আরো দূরে বেশ দীর্ঘ একটা সেতু দেখতে পেলাম। কিছু দূর পর পর ছোট জাহাজঘাটাও দেখা যাচ্ছিল। হাকাতা উপসাগরে ছড়ানো-ছিটানোভাবে চলাচল করছে ছোট ছোট জাহাজ, লঞ্চ আর স্পিড বোট। সবকিছুই কেমন ছবির মতো সুন্দর। আমি মুগ্ধ চোখে শুধুই দেখে যাচ্ছি। কথা বলতে ইচ্ছে করছিল না। তারপরও কথা চালিয়ে যেতে হচ্ছিল সহযাত্রীদের সাথে।
এক ঘণ্টার যাত্রা শেষে আমরা পৌঁছলাম আমাদের নির্দিষ্ট গন্তব্য মেরিন হাউস গেটে। মেরিন হাউসের নিজস্ব বন, উঁচু-নিচু, আঁকাাবাঁকা পথ পেরিয়ে আমরা পৌঁছলাম ওরিয়েন্টেশন হল রুমে। এখানেও দেখলাম হলুদ গেঞ্জিপরা একদল ব্যস্ত স্বেচ্ছাসেবক। যেহেতু ফুকুওয়াতে এখন গ্রীষ্মকাল, তাই স্বেচ্ছাসেবকরা সবাই হাফপ্যান্ট ও হলুদ গেঞ্জি পরা, যাতে লেখা আছে We are the Bridge এবং The 20th Asian-Pacific Children Convention in Fukuoka.
ওরিয়েন্টেশন হল রুমের আকৃতি ডোম বা গম্বুজ টাইপের এবং ফ্লোর বা মেঝে কাঠের তৈরি। আগত সব দলকেই প্রথমে এখানে এসে বসতে হয় এবং ফুকুওয়াকাতে থাকাকালে কী কী নিয়মকানুন মেনে চলতে হবে তা জানানো হয়। বিছানাপত্র গোাছানো, জুতোর ব্যবহার, এমনকি গোসলখানা ও টয়লেট ব্যবহারের নিয়মও ওরা দেখিয়ে দিল। অতি সাধারণ অথচ অতি দরকারি এসব নিয়মকানুন শেখার পর আমরা যে যার নির্ধারিত রুমে চলে গেলাম ।
শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত রুমে প্রবেশ করে দেখলাম এখানেও কাঠের মেঝে। মূল মেঝে থেকে একহাত ওপরে কাঠের মেঝে এবং মূল মেঝেতে জুতো খুলে রেখে কাঠের মেঝেতে উঠতে হয় । একরুমে সাতজন করে চ্যাপরন থাকার ব্যাবস্থা। রুম পার্টনার হিসেবে আমি পেলাম ভুটান, লাওস, নর্দার্ন মারিয়ানা, হাওয়াই, চীন ও কানাডার চ্যাপরনকে। রুমে ঢুকে বিছানাটা পেতে আর অপেক্ষা করতে পারলাম না, সটান শুয়ে পড়লাম। আহ কতদিন পর পিঠটাকে বিছানায় ঠেকাতে পারলাম। রাজ্যের ক্লান্তি এসে আমার ওপর ভর করল। কিছুক্ষনের মধ্যেই গভীর ঘুমে তলিয়ে গেলাম। চার ঘণ্টার ঘুম শেষে ক্লান্তি কিছুটা দূর হয়েছে বটে কিন্তু মাথার ভেতরের অস্বস্তির ভাবটা কিছুতেই কাটছে না।
ছেলেমেয়েদের দেখতে গেলাম। মা-বাবাকে ছেড়ে এতদূর এসেছে, হয়তো ওদের মন-টন খারাপ! কিন্তু কোথায় কী, ফিটফাট হয়ে সবগুলো দিব্যি হাসিমুখে ঘুরে বেড়াচ্ছে! দলের মধ্যে মুগ্ধ তো আগাগোড়াই ফুল অব এনার্জি, এখানে এসেও তার কোনো কমতি নেই, উৎস ও খোকনকে সাথে নিয়ে পুরো এলাকা চষে বেড়াচ্ছে। লিমা, রিশা, পড়শী ও টুকটুকিও বেশ ফুর্তিতে আছে বলে মনে হলো। ফ্যাশনদার জামাকাপড় পড়ে, সাজগোজ করে অন্য দেশের মেয়েদের সাথে বেশ ভাব করে ফেলেছে। পরাগকেও দেখা গেল ওদের দলে। আমাকে দেখতে পেয়েই সবাই দৌড়ে এসে, স^ল্প সময়ের বিচিত্র সব অভিজ্ঞতার কথা শোনাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ল, বিশেষ করে খাবার অভিজ্ঞতা। নতুন দেশ, নতুন পরিবেশ, নতুন নতুন সব বন্ধু। এর আনন্দ আর মজাই আলাদা, বোধ হয় বাড়ির কথা ওদের মনেও পড়ছে না।
চারিদিকে ঘুরে বেড়াচ্ছে নানা দেশের ফুটফুটে সব ছেলেমেয়েরা। ভাব প্রকাশের অন্যতম মাধ্যম ভাষা ওদের আনন্দের কাছে তুচ্ছ। ওদের দেখে মনে হচ্ছে, ভাষা বোঝার দরকার কী! কেউ বল নিয়ে ছুটছে, কোথাও ফ্রিজবি উড়ছে, কেউবা ক্রিকেট ব্যাট হাতে ছক্কা পেটাতে ব্যস্ত। দৌড়-ঝাঁপ, উঁচু থেকে নিচুতে গড়িয়ে পড়া, গান গাওয়া, হাসি-আনন্দ, হাই-হ্যালো, ওহাইও, আরিগাতো, কুন্নিচুয়া ইত্যাদি শব্দ লেগেই আছে। আর আছে APCC সম্মেলনের সে^চ্ছাসেবকদেও ছোটাছুটি। আমার কাছে মনে হচ্ছিল জাপানি মেয়েরা বোধহয় হাঁটতে জানে না, কোনো কাজ করতেও যায় দৌড়ে গিয়ে আবার কাজ শেষে ফিরেও আসে দৌড়ে। কোনো কাজে ওদের বিরক্তি বা আলস্যি নেই। সারাক্ষণ মুখে হাসি লেগেই আছে।
আমরা কয়েকজন চ্যাপরন মিলে মেরিন হাউসের ক্যাম্পাসটা ঘুরে দেখলাম। বিশাল এলাকাজুড়ে এই ‘ইয়ুথ ক্যাম্প’, যা ‘মেরিন হাউস’ নামে পরিচিত। বিশাল এলাকাজুড়ে মেরিন হাউসের নিজস্ব বন, যাতে পাইন গাছই বেশি। এছাড়া রয়েছে বিভিন্ন ধরনের গাছ। আরেক ধরনের গাছ দেখা গেল যার পাতাগুলো মোটা ও পুরু। সব গাছের গায়ে নাম লেখা ও নাম্বারিং করা। প্রকৃতিকে অক্ষুন্ন রেখে তৈরি করা হয়েছে আঁকাবাঁকা এবং ছোট ছোট পথ। উঁচু-নিচু টিলায় পাইন গাছের সারি। টিলার নিচ দিয়ে পাকা পথ, সেই পথ ধরেই আমরা হেঁটে চলেছি।
কিছুক্ষণ পরেই সন্ধ্যা নামবে, তারই প্রস্তুতি চলছে। অজস্র পাখির কিচির-মিচির শব্দ দেশের কথাই মনে করিয়ে দিচ্ছে বারবার। একটা পর্যায়ে গিয়ে পাকা পথ শেষ হয়ে গেল। শুরু হয়েছে মোটা দানার বালির পথ, যাতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ক্যাকটাস। পাঁচ মিনিটের বালির পথ অতিক্রম করার পরই আমরা হাকাতা সাগরের পাড়ে গিয়ে পৌঁছালাম। শান্ত-স্নিগ্ধ ঢেউগুলো একের পর এক কূলে আছড়ে পড়ছে। মেরিন হাউস কর্তৃপক্ষ আমাদের আগেই জানিয়ে দিয়েছিল, শান্ত এই সমুদ্র বড় নিষ্ঠুর। চোরাবালি, চোরাস্রোত ইত্যাদি মিলিয়ে অত্যন্ত বিপজ্জনক এই বিচ। রাতের খাবারের সময় হয়ে গিয়েছিল বলে তাড়াতাড়ি ফিরতে হলো। কিন্তু দুই পাহাড়ের মাঝখানে সূর্যাস্তের দৃশ্যটা কিছুতেই ভুলতে পারছিলাম না। মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলাম আগামীকাল আবার আসতে হবে।
খাবার ঘরের বাইরে লম্বা লাইন। প্রত্যেক দেশের ছেলেমেয়েদের জন্য সময় নির্ধারণ করা আছে। কিন্তু চ্যাপরনদের জন্য সময় উন্মুক্ত। খাবার ঘরের বাইরেই হাত ধোয়া ও মোছার ব্যবস্থা। ট্রে, বাটি, প্লাস্টিক নিয়ে মেন্যু অনুযায়ী খাবার নিতে হয়। ভেজেটেরিয়ানদের জন্য কমলা ট্রে ও নন-ভেজদের জন্য হালকা সবুজ রঙের ট্রে। মেন্যুতে মুরগি, মাছ, মাংস, সবজি, ভাত, নুডলস, নানরুটি, পাউরুটি সব আছে। আরো আছে দুধসহ বিভিন্ন রকমের ফলের জুস। খাবার সরবরাহসহ সব কাজেই সহযোগিতা করছে স্বেচ্ছাসেবক দল।
১২ জুলাই চ্যাপরন সিম্পোজিয়াম। ফুকুওয়াকা গার্ডেন প্যালেসে সিম্পোজিয়ামের মূল থিম Education of the Next Generation to be Self-sustaining Individuals-Improvement of Environments to Build Children into Self-sustaining Individuals.’ মূলত এশিয়ান-প্যাসিফিক অঞ্চলের দেশসমূহের শিক্ষাব্যবস্থা ও সামাজিক অবস্থান নিয়ে পারস্পরিক আলোচনা করে, কীভাবে শিশুবান্ধব পরিবেশে শিক্ষা প্রদান করে শিশুদের বিশ্বনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা যায় তা নির্ধারণ করাই এই সিম্পোজিয়ামের উদ্দেশ্য।
মূল অনুষ্ঠান শেষে ছিল জাপানি স্টাইলে চা পান উৎসব ও ডিনার পার্টি। সিম্পোজিয়াম শেষে মেরিন হাউসে ফিরে আসতে আসতে প্রায় সন্ধ্যা। এসে দেখি সব দেশের ছেলেমেয়েরা মিলে মেরিন হাউসের মাঠে পার্টি করছে। জোরে বাজনা বাজছে আর তার সাথে তাল মিলিয়ে ছেলেমেয়েরা নাচছে, হৈ হুল্লোড় করছে।
১৩ জুলাই ফুকুওয়াকার অত্যন্ত প্রাচীন ও ধর্মীয় উৎসব ‘ইয়ামাকাসার’ রেশ মেরিন হাউসেও বিরাজ করছিল। ‘ইয়ামাকাসা’ উৎসব অনেকটা আমাদের দেশের ‘রথযাত্রা’ উৎসবের মতো। ‘ইয়ামাকাসা’
নামের দেবতার বিশাল আকৃতির মূর্তি নিয়ে টানাগাড়িতে র্যালি বের করা হয়। নারীবিবর্জিত সেই র্যালি যখন পুরো ফুকুওয়াকা শহর প্রদক্ষিণ করে তখন পথের দু পাশে দাঁড়িয়ে থাকা পথচারীরা মগে বা বালতিতে করে ‘ওইস্যা’ বলে পানি ছুড়ে মারে। নানারকম বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা পেতে প্রতি বছর জুলাই মাসে ‘ইয়ামাকাসা’ উৎসব পালন করা হয়।
১৪ তারিখে আয়োজন করা হয় ‘চ্যাপরন অ্যাক্সকারশনের’। আমাদের অর্থ্যাৎ বিভিন্ন দেশের চ্যাপরনদের নিয়ে যাওয়া হয় ফুকুওয়াকার প্রাচীন শহর ‘হাকাতা’ পরিদর্শনে। একে মন্দিরের শহরও বলা যায়। পুরনো শহর, ফলে রাস্তাগুলো তত প্রশস্ত নয়। আমাদের পুরান ঢাকার মতো অসংখ্য গলি এবং গলির রাস্তাগুলোতে রকমারি জিনিসের পসরা সাজিয়ে বসে আছে দোকানিরা।
১৫ জুলাই কোনো অনুষ্ঠান না থাকায় অফুরন্ত বিশ্রাম । মেরিন হাউস চত্বরটা আবারো চক্কর দেওয়ার সুযোগ পাওয়া গেল।
১৬ জুলাই সকাল থেকেই রীশা, পড়শী, লিমা সবার মন খারাপ। কারণ আজ সবাই মেরিন হাউস ছেড়ে হোস্ট ফ্যামিলিতে উঠবে। গত কদিনেই মেরিন হাউসকে ওরা ভালোবেসে ফেলেছে। এত বড় ক্যাম্পাস, খোলামেলা সবুজ পরিবেশ ওদের মুগ্ধ করেছে। তাছাড়া স্বেচ্ছাসেবকদের সাথেও ওদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। দুপুরের খাবারের পর আমরা মেরিন হাউস ছেড়ে হোস্ট ফ্যামিলির সাথে সাক্ষাতের উদ্দেশে ‘কাসওয়া’ শহরের পথে পা বাড়ালাম আর মনে মনে বললাম ‘আরিগাতো ফুকুওয়াকা’ অর্থাৎ ‘ধন্যবাদ ফুকুওয়াকা’।
বাংলাদশে সময় ২১০৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৩, ২০১১