শরতের নির্মল সকাল৷ ক্যাম্পাসে ফুলের মো মো গন্ধ। ঘুম ভাঙতেই এক ঝাঁক মিষ্টি হাওয়া এসে মনটাকে ভরিয়ে দিল ৷ ঘড়ির দিকে চোখ পড়তেই দেখি সব্বনাশ! ৯টা বাজে! তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে ছুটলাম গোলচত্বরের দিকে ৷ সেখানে সবাই নির্ধারিত টি-শার্ট গায়ে পৌঁছে গেছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকরাও চলে এসেছেন গোলচত্বরে। এ যেন এক প্রাণের মেলা। কিছুক্ষণ পরেই শুরু হলো বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ৷ ব্যানার হাতে সবাই এগুচ্ছে মিলনায়তনের দিকে ৷
বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটরিয়ামে পৌঁছাতেই উদ্বোধন করা হল দেশের সর্বপ্রথম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিকদের মিলনমেলা ‘দি অ্যাডবিডি-চুয়েটজেএ জাগরণ উৎসব‘ ২০১১৷ গত ২৩ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠানটি আয়োজন করেছে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (চুয়েটজেএ)।
‘লেখনীর ভুবনে, প্রাণের আহ্বানে‘ সেøাগান নিয়ে শুরু হওয়া উৎসবটির উদ্বোধন করেন চুয়েটের উপাচার্য ড.শ্যামল কান্তি বিশ্বাস ৷
উদ্বোধনের শেষেই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রভাষক মাধব দ্বীপের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনায় ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতার গুরুত্ব’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়৷
চুয়েটজেএ’র সভাপতি আতাউর রাব্বির সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান মোরশেদুল ইসলাম। বিশেষ অথিতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়েট শিক্ষক সমিতির সাধারণ স¤পাদক মীর মো: সাকী কাউসার এবং উৎসবের টাইটেল স্পন্সর ‘দি অ্যাডবিডি`-এর চেয়ারম্যান সফিকুল আহাদ ৷
সেমিনারে বক্তারা বলেন, ‘পত্রপত্রিকা কিংবা ইলেকট্রনিক মিডিয়াগুলোতে আজকাল শুধুমাত্র ছাত্র-রাজনীতি, মারামারি কিংবা খুনের খবর প্রকাশিত হয় ৷ কিন্তু শুধুমাত্র এসব খবর দিয়ে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মানদ- বিচার করা সম্ভব নয়৷ তাই রাজনৈতিক খবরের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক সাংবাদিকতা আজ সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে ৷’
বক্তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরার আহবান জানান।
অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষনীয় ইভেন্ট ছিল কুইজ প্রতিযোগিতা। ‘কচু খেলে গলা কেন চুলকায়?’ প্রশ্ন উপস্থাপকের ৷ অনেকেই বলে, ‘কচুতে একটি বিশেষ ধরনের এসিড থাকে; ওই এসিডের কারণেই গলা চুলকায়। ’ কিন্তু সে এসিডের নাম কি? সেটা কেউ আর বলতে পারে না।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত জানা গেল, উত্তরটি হবে ‘অক্সালিক এসিড’৷ এ রকমই মজার মজার সবপ্রশ্ন নিয়ে সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হয় কুইজ প্রতিযোগিতার ৷ এ প্রতিযোগিতার প্রধান শর্ত ছিল- দর্শকদের মধ্যে যিনি আগে হাত তুলে সঠিক উত্তর দিতে পারবেন তিনিই পাবেন আকর্ষনীয় পুরস্কার ৷
তাই সবার আগে সঠিক উত্তরটি দেওয়ার জন্য দর্শকদের মধ্যে দেখা যায় ব্যাপক উৎসাহ ৷ শেষ পর্যন্ত এদের মধ্য থেকেই বেছে নেওয়া হয় দশজন সেরা সঠিক উত্তরদাতাকে ৷
সন্ধ্যায় ‘জাগরণ উৎসব’ উপলক্ষ্যে মিলনায়তনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশনা করে চুয়েটের সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘জয়ধ্বনি’ ৷ নাটক, নাচ, একক সংগীত পরিবেশনা মুহুর্তেই অনুষ্ঠানে যোগ করে দেয় এক ভিন্ন মাত্রা ৷ সাংস্কৃতিক
অনুষ্ঠান শেষে শুরু হয় পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান ৷ এতে সেরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক, সেরা চুয়েট প্রতিবেদককে পুরস্কৃত করা হয়। চুয়েটের অনলাইন নিউজপোর্টাল চুয়েটনিউজ২৪.কম থেকে নির্বাচিত হয়েছেন সেরা প্রতিবেদক ও সেরা ফটোগ্রাফার।
আয়োজকরা জানান, প্রতি বছরই ‘জাগরণ উৎসব’ করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩০ ঘণ্টা, ৫ অক্টোবর, ২০১১