ঢাকা, রবিবার, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৮ মে ২০২৫, ২০ জিলকদ ১৪৪৬

ফিচার

ঢাবির এভারেস্ট জয়ের স্বপ্ন

ফিচার ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১:১৬, অক্টোবর ২৫, ২০১১
ঢাবির এভারেস্ট জয়ের স্বপ্ন

২০১৪ সালের মধ্যে এভারেস্ট অভিযানে যাওয়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে চলেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় টিম এভারেস্ট।   এজন্য প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি ও সেপ্টেম্বর মাসে দুবার এ বিশ্ববিদ্যালয়ের আগ্রহী শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে যোগ্যদের বেছে নেওয়া হবে।

চূড়ান্ত দল যাবে প্রশিক্ষণ ও পর্বতারোহণ অভিযানে।

এবারের দলটি ঢাবির সাবেক শিক্ষার্থী ও এভারেস্টবিজয়ী প্রথম বাংলাদেশী মুসা ইব্রাহীমের তত্ত্বাবধানে ৪ অক্টোবর থেকে অনুশীলন করছে। আগ্রহী ৪৫ জন শিক্ষার্থীর মধ্য থেকে ৫ জনের একটি প্রাথমিক দল গঠন করা হয়েছে। প্রাথমিক দলে রয়েছেন ইংরেজি বিভাগের ওয়াশিউর রহমান ও আওয়াল হোসেন, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ইব্রাহীম খলিল রুবেল, আইইআর-এর হাসান আল জুবায়ের রনি, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের রফিকুল ইসলাম ও ইনস্টিটিউট অব সোশ্যাল ওয়ার্ক অ্যান্ড রিসার্চ বিভাগের মোস্তাফিজুর রহমান। তারা আগামী ২৮ অক্টোবর বাংলাদেশ থেকে নেপালে রওনা দেবেন। নেপালে সদস্যরা পর্বতারোহণের ওপর আরও প্রশিক্ষণ নেবেন এবং অন্নপূর্ণা হিমালয়ে অবস্থিত ২১,৫৯৫ ফুট উঁচু চুলু ইস্ট পর্বত জয়ের চেষ্টা করবেন।

এই দলের সদস্যদের শারীরিক ও মানসিক গঠনে প্রতিদিন সকালে ঢাবির শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রে সহায়তা করেন এই কেন্দ্রের পরিচালক শওকতুর রহমান, এক্সট্রিম বাংলার সভাপতি কাজী হামিদুল হক, বাংলাদেশ বিমানের পাইলট ক্যাপ্টেন মাকসুদ ও ক্যাপ্টেন এনাম তালুকদার, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়াজ মোর্শেদ পাটওয়ারী ও মুসা ইব্রাহীম।

এই দলের নেপালযাত্রা উপলক্ষে  সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরনো সিনেট ভবনে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. আআমস আরেফিন সিদ্দিক উপস্থিত থেকে এই দলকে শুভেচ্ছা জানান। এ সময় তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গৌরবময় ইতিহাস রয়েছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সব ক্ষেত্রেই দেশকে নেতৃত্ব দিয়ে এসেছেন। একইভাবে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা যাতে নিজেদের শারীরিক-মানসিকভাবে প্রস্তুত করে পর্বতারোহণের মতো কঠিন কাজে নিজেদের সক্ষমতা প্রমাণ করতে পারে, সে উদ্দেশ্যে এ উদ্যোগ।

সংবাদ সম্মেলনে কাজী হামিদুল হক বলেন, অ্যাডভেঞ্চার কর্মকাণ্ডে অংশ নিয়ে নিজের সক্ষমতা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি এ ধরনের অ্যাডভেঞ্চার আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে এখন অপরিহার্য। এ উদ্যোগ নেওয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সাধুবাদ জানাই।

এভারেস্টজয়ী মুসা ইব্রাহীম বলেন, আমাদের সবার সবকিছু করার সক্ষমতা আছে- এই বিশ্বাস গড়ে তোলাই হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিম এভারেস্টের প্রশিক্ষণ ও পর্বতারোহণের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। এই দলের সদস্যরা এখন বিশ্বাস করেন, আমরাও পারি। এই প্রশিক্ষণে সহযোগিতা করার জন্য নর্থ আলপাইন ক্লাব বাংলাদেশের সদস্যদের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

এনাম তালুকদার বলেন, আমাদের সময়ে পর্বতারোহণ প্রশিক্ষণ নেওয়ার এত সহজ উপায় ছিল না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমন সুযোগ তৈরি হওয়ায় এ দেশের তরুণ-তরুণীরা উপকৃত হবে। এজন্য তাদেরকে নিরাপত্তা, স্বাবলম্বী হওয়া, টিমওয়ার্ক এবং দেশপ্রেম সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন ঢাবির শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রের পরিচালক শওকতুর রহমান। তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিম এভারেস্টের প্রশিক্ষণ অনেকটাই ছিল মিলিটারি প্রশিক্ষণের মতো। এখানে নিয়ম মেনে চলা, সময়ানুবর্তিতা ও দল গঠনে টিম ওয়ার্কের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। পর্বতারোহণের মতো কঠিন কাজে এ বিষয়গুলো অনেক জরুরি। আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমন একটা উদ্যোগ গ্রহণ করায় আমি ব্যক্তিগতভাবে কৃতজ্ঞবোধ করছি।

বাংলাদেশ স্থানীয় সময় ২১০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।