জড়াজড়ি করে বসে আছে দুই ভাই। চারদিকে শুধু ময়লার স্তূপ।
ছবিটি তোলা হয়েছে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর একটি ময়লা ফেলার জায়গা থেকে। আর এই হৃদয়স্পর্শী ছবিটি তুলেছেন হংকংয়ের বাসিন্দা আলোকচিত্রী চ্যাং কাউক হুং।
আলোকচিত্রটি সম্পর্কে চ্যাং বলেন, ‘আমি এই ছবিটি তুলেছি কাঠমান্ডু থেকে। কাঠমান্ডুর এক ময়লা ফেলার জায়গায় ওরা দুই ভাই তাদের দাদির সঙ্গে বাস করে। প্রতিদিন ওরা দুই ভাই ময়লা হাতড়ে বেড়ায় কিছু পাবার আশায়, যা বিক্রি করে তারা কিছু খাবার কিনবে। আর তারা যেদিন কিছু সংগ্রহ করতে না পারে, সেদিন তাদের দাদি তাদের খুব গালমন্দ করেন। ’
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এমন অনেক মানুষই আছে যারা তাদের বাসস্থান হারিয়েছে। হারিয়েছে বেঁচে থাকার ন্যূনতম সম্বল। বাসস্থান হারিয়ে রাস্তার ধার কিংবা করপোরেশনের ময়লা ফেলার জায়গা হয়েছে তাদের ঠিকানা।
বর্তমান সময়ে জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে জলজ্যান্ত উদাহরণ থাইল্যান্ড। ধারণা করা হচ্ছে, চলতি বন্যায় পুরো থাইল্যান্ডই এবার ডুবে যেতে পারে। বিগত ৫০ বছরের মধ্যে থাইল্যান্ডবাসী এরকম ভয়াবহ বন্যার মুখোমুখি হয়নি। লাখ লাখ মানুষ হয়ে পড়েছে গৃহহীন।
উন্নত বিশ্বের উন্নয়নের জোয়ারে ভেসে যেতে হচ্ছে আমাদের মতো তথাকথিত উন্নয়নশীল দেশের মানুষদের। উন্নত বিশ্বের অধিক কার্বন নির্গমন এবং অজৈব পদার্থের ব্যবহার দিন দিন বেড়েই চলছে। আর উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বনায়নের নামে ঢুকছে হাইব্রিড গাছ, যা রোপণ করলে মাটি হয়ে যায় শুষ্ক-রুক্ষ।
বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্তের তালিকায় আছে বাংলাদেশ। আমাদের দেশেও জলবায়ু উদ্বাস্তুদের অবস্থা ছোট্ট ওই দুটি মানব সন্তানের চেয়ে কম নয়। বরং অনেক ক্ষেত্র বেশি। তথাকথিত উন্নয়নের জোয়ার যদি এভাবে চলতে থাকে, তাহলে হয়তো একদিন বিশ্ব মানচিত্র থেকে বাংলাদেশ নামের ভূখণ্ডটিকেও আর খুঁজে পাওয়া যাবে না।