বয়স্ক চড়ুইদের কাছ থেকে অল্পবয়সীরা গানটা ভালো মতো শিখে নেয় এবং চর্চা করতে থাকে। একই পদ্ধতিতে পরের প্রজন্মগুলোও সুরটা রফত করতে থাকে।
বিজ্ঞানীদলের প্রধান ও লন্ডনের কুইন মেরি বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানী রবার্ট লাসলান বলেন, গান শেখার সময় এসব চড়ুইদের কোনো ভুল হয় না বললেই চলে এবং শেখার সময় নিজের জন্য সবচেয়ে সহজ সুরটা বেছে নেয়।
মানুষের মতোই চড়ুইগুলো বড়দের অনুকরণ করতে করতে একে-অপরের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন শেখে। কিন্তু চারপাশের সব গান মুখস্থ করে না তারা। যে সুর তারা সবচেয়ে বেশি সংখ্যকবার শুনেছে এবং মনে রাখা সহজ কেবল সেটাই বেছে নেয়। নিজে যে বিষয়ে পারদর্শী কেবল সেটাতেই দক্ষতা অর্জন করার এই কৌশলকে বিজ্ঞানীরা বলেন ‘কনফর্মিস্ট বায়াস’। মনে করা হয়, কেবল মানুষই এই কৌশল অবলম্বন করে।
২০০৮ সাল থেকে ২০০৯ সালের মধ্যে বিজ্ঞানীরা যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রায় ৬১৫টি পুরুষ চড়ুইয়ের সুরেলা গান রেকর্ড করেন। অ্যাকিউস্টিক অ্যানালাইসিস সফটওয়্যারের মাধ্যমে এ গানগুলো নোট আকারে ভেঙে ফেলেন। এতে গানের কম্পোজিশনে কোনো বৈচিত্র্য থাকলে সহজেই ধরা পড়ে। দেখা যায়, মাত্র দুই শতাংশ চড়ুই মূল গানের সুর থেকে অল্প একটু সরে এসেছে।
আমেরিকান চড়ুইদের অসাধারণ অনুকরণ ক্ষমতা ও কনফর্মিস্ট বায়াস স্বভাবের কারণে তাদের সমাজে একটা ঐতিহ্য তৈরি হয়েছে যা হাজার বছর ধরে টিকে আছে। উত্তর আমেরিকার জলাভূমিতে আজ চড়ুই পাখিরা যেভাবে গাইছে এক হাজার বছর আগেও ঠিক একই ডাক শোনা যেত সেখানে।
বিজ্ঞানীদের মতে, আমেরিকান চড়ুইদের এই সুরেলা ডাক পাখিদের দুনিয়ার সবচেয়ে প্রাচীন ঐতিহ্য। তাছাড়া গবেষণাটি পাখিদের ডাকের বিবর্তন সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে সাহায্য করবে বলে মনে করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৮২০ ঘণ্টা, জুন ২৭, ২০১৮
এনএইচটি