নারায়ণগঞ্জ: ‘মৃত্যু ছাড়া আমাকে কেউ নির্বাচন থেকে সরাতে পারবে না’- নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আগে এমন দৃঢ় আত্মপ্রত্যয়ী বক্তব্য দিয়েছিলেন বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকার।
কিন্তু শেষ মুহুর্তে মৃত্যু নয় বরং দলের নির্দেশেই তাকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে হয়েছে।
এ চারজন এখন স্থানীয় বিএনপি মহলে ‘খলনায়ক’ হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছেন। এ চারজনের ভূমিকা আর কলকাঠি নাড়া প্রসঙ্গে অনেক ঘটনা-ই স্পষ্ট থাকলেও তাদের ব্যাপারে সরাসরি মুখ খুলছে না কেউ। কারণ তাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত বিএনপির নীতি নির্ধারক পর্যায়ের অনেকে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, কথিত ‘৪ খলনায়ক’ এর মধ্যে ৩ জনের উদ্দেশ্য ছিল তৈমুর ঠেকাও আর অপরজনের অ্যাসাইনেমন্ট ছিল আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী শামীম ওসমানকে ঠেকানো।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এ ধরনের কূটকৌশল করতে গিয়ে এ সিন্ডিকেটের মোটা অঙ্কের টাকাও খরচ করতে হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিন্ডিকেট ঘনিষ্ঠরা বলছেন, এ খরচের পরিমাণ গিয়ে ঠেকেছে প্রায় ১০ কোটি টাকার উপরে। আর এ অর্থের যোগান দিয়েছেন দু’জন নামী ব্যবসায়ী। তাদের শেষ মুহূর্তের বাজিমাত আওয়ামী লীগ সমর্থিত শামীমসহ সবাইকে চমকে দিলেও এ চার কুশীলব ও তাদের অনুগামিরা ৩০ অক্টোবরের বেশ আগে থেকেই প্রায় নিশ্চিত হয়েছিলেন- শেষ মুহুর্তে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবেন বা সরে দাঁড়াতেই হবে তৈমুরকে।
বিএনপি সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নির্বাচন হয়ে যাওয়ার পরে ধীরে ধীরে বিষয়টি সবার কাছে পরিষ্কার হয়ে উঠছে। এখন বিএনপিপন্থী নিবেদিত রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের অনেকেই ওই ৪ কুশীলবকে ‘খলনায়ক’ হিসেবে অভিহিত করছেন।
খলনায়ক-১
অনুসন্ধানে জানা গেছে, সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আগে গত ১৮ সেপ্টেম্বর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বৈঠকে নাসিক নির্বাচনে তৈমুরকে দলের সমর্থন দেওয়ার ঘোষণা দেন। এসময় তিনি তৈমুরের পক্ষে কাজ করতে বৈঠকে উপস্থিত নারায়ণগঞ্জ-৫ (শহর-বন্দর) আসনের সাবেক এমপি আবুল কালামকে নির্দেশ দেন।
গুলশানের কার্যালয়ে বৈঠকের পর নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে জেলা বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের এক সভায় আবুল কালামকে আহবায়ক করে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে সিটি করপোরেশন নির্বাচনের কার্যক্রম পরিচালনা করতে ‘নারায়ণগঞ্জ নগর উন্নয়ন কমিটি’ গঠন করা হয়। ওই সভায় বিএনপির কথিত সংস্কারবাদী ও নিস্ক্রিয় নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।
অভিযোগ রয়েছে, এ কমিটির গুরুত্বপূর্ণ সদস্য এক বিএনপি নেতা চাননি তৈমুর আলম খন্দকার নির্বাচন করুক। তবে তিনি চেয়েছিলেন নির্বাচন কমিটির হর্তাকর্তা হয়ে তার বিরুদ্ধে থাকা সংস্কারবাদী ও নিস্ক্রিয়তার অভিযোগের কলঙ্ক ঘুচিয়ে দলের ব্যাকফুট অবস্থান থেকে কামব্যাক করতে। ওই নেতাকে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়াসহ নির্বাচন পরিচালনায় ৫০১ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হলেও নির্বাচনের আগে পর্যন্ত এ কমিটির কোনও সভা অনুষ্ঠিত হয়নি। বরং তার নেতৃত্বে অনেকটা বিচ্ছিন্নভাবে চলেছিল কমিটির কার্যক্রম।
বিএনপি সংশ্লিষ্টরা জানান, ওই নেতা প্রায় সময়েই তৈমুরের সঙ্গে গণসংযোগ করলেও তাকে বাসা থেকে বের করতে প্রায় গলদঘর্ম হতে হয়েছে অন্যদের। গণসংযোগে অংশগ্রহণ এড়াতে ‘গাড়ি নেই, শরীর ভালো না’ সহ নানা বাহানা দেখাতেন তিনি।
একটি ভয়েস টেপে শোনা গেছে, ওই নেতাকে তার পুত্র জিজ্ঞেস করেছিল, ‘বাবা তৈমুর তোমার বিরুদ্ধে রয়েছে। তারপরও তুমি কেন তৈমুরের জন্য এভাবে মাঠে নেমেছ?’ জবাবে ওই নেতার উত্তর ছিল, ‘বাবারে, শেষ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা কর, তখন বুঝবি আমি কেন তৈমুরের পক্ষে কাজ করছি। ’
এখানে উল্লেখ্য ওই নেতার পুত্র নারায়ণগঞ্জের ছাত্রনেতা হিসেবে পরিচিত।
নারায়ণগঞ্জের এ বিএনপি নেতা ছিলেন সাবেক এমপি। স্থানীয়ভাবে তিনি ‘ড্রয়িং রুম’ পলিটিশিয়ান হিসেবেই পরিচিত। তিনি গত বিএনপি সরকারের আমলে ২০০৯ সালে দলের বিভিন্ন পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
আরো জানা গেছে, এ নেতার সঙ্গে বিএনপির এক শীর্ষস্থানীয় নেতার শ্বশুরপক্ষের আত্মীয়তার সম্পর্ক রয়েছে। কেন্দ্রীয় কমিটির ওই নেতা ২৯ অক্টোবর দুপুরেও ঢাকার নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করে বলেছিলেন, ‘পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতেই বিএনপি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নেবে। ’
তবে ওই ঘোষণার পরও রাতের বেলায় বদলে যায় দৃশ্যপট।
খলনায়ক-২
নাসিক নির্বাচনের আরেক খলনায়ক ক্ষণিক সময়ের জন্য জনপ্রতিনিধি হয়েছিলেন। ফতুল্লা এলাকাতে বসবাসকারী এই ব্যবসায়ী নেতা স্থানীয় বিএনপির রাজনীতিতে ‘কিং মেকার’ হিসেবে পরিচিত। ২০০১ সালের ১ অক্টোবর সংসদ নির্বাচনের আগে কৃষক লীগ থেকে গিয়াসউদ্দিনকে বিএনপিতে যোগ দেওয়ার পেছনে কাজ করেন ওই কিং মেকার। ওই নির্বাচনে গিয়াসউদ্দিন এমপি নির্বাচিত হলেও পরে নানা বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়। এই কিং মেকার ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনেও বিএনপি প্রার্থী শাহ আলমের জন্য কাজ করেন। তবে নির্বাচনের মাত্র কয়েকদিন আগে তাদের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, আলোচিত কিং মেকার সাহেবের মূল উদ্দেশ্য ছিল শামীম ওসমানকে ঠেকানো। তিনি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াত আইভীর পক্ষে কাজ না করলেও শামীম ওসমানকে ঠেকাতে নানা কূট-চাল চালেন।
এ খলনায়ক ঢাকাতে অন্য ব্যবসায়ী নেতাদের ম্যানেজ করে বিএনপির শীর্ষ নেতাকে বার্তা পৌঁছে দেন যে, নারায়ণগঞ্জে বিএনপির অবস্থা ভালো নয়। এ নির্বাচনে গেলে বিএনপির পরাজয় ঘটবে।
খলনায়ক-৩
৩ নাম্বার খলনায়কের ভূমিকাতে ছিলেন নারায়ণগঞ্জের বহুল সমালোচিত সাবেক একজন এমপি। তার বাড়ি নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলায়। বারবার দল পাল্টানো এ নেতার সঙ্গে তৈমুর আলম খন্দকারের বিরোধ সেই ২০০১ সালের নির্বাচনের পর থেকেই। ২০০৩ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি তৈমুরের ছোট ভাই ব্যবসায়ী নেতা সাব্বির আলম খন্দকার হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই মূলত দু’জনের বিরোধের সূত্রপাত। পরে ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার নিয়ে সে বিরোধ প্রকট আকার ধারণ করে।
সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তৈমুরকে ঠেকাতে এ ‘খলনায়কের’ ভূমিকা ছিল অনেক বেশি। এমন অভিযোগ রয়েছে দলের ভেতর থেকেই। দলের একটি সূত্র জানায়, ৩০ অক্টোবর নির্বাচনের ভোট গ্রহণের ১০-১২দিন আগে সাবেক এ এমপি, ওয়ান ইলেভেনের পর থেকে সক্রিয় ও বর্তমানে সোনারগাঁও থানা বিএনপির এক শীর্ষ নেতা, একজন চলচ্চিত্র ব্যবসায়ি বিএনপি নেতা, সদর উপজেলার একজন মুক্তিযোদ্ধা মিলে বিএনপির শীর্ষ নেতার সঙ্গে দেখা করতে ঢাকার গুলশান অফিসে যান। সেসময় এসব নেতা বিএনপির শীর্ষ নেতার সঙ্গে কথা বলার একপর্যায়ে সিটি করপোরেশন নির্বাচন প্রসঙ্গ টেনে আনেন।
সোনারগাঁওয়ের ওই নেতা সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে কথা বলার একপর্যায়ে তাকে রীতিমত ধমক দিয়ে চুপ করতে বলেন বিএনপির শীর্ষ নেতা। পরে কথা বলতে শুরু করেন সাবেক ওই এমপি। তখন তাকেও বিএনপির শীর্ষ নেতা এ বিষয়ে কথা না বাড়িয়ে তৈমুরের পক্ষে কাজ করার নির্দেশ দেন।
গুলশান অফিসে যাওয়া এসব নেতাদের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র বাংলানিউজকে জানান, গুলশান অফিসে শীর্ষ নেতাকে বোঝাতে ব্যর্থ হওয়ার পর নারায়ণগঞ্জ থেকে যাওয়া নেতৃবৃন্দ অনেকটা হতাশ হয়ে পড়েন। এরপর তারা সিদ্ধিরগঞ্জে এক জরুরি সভা করে তৈমুরকে ঠেকাতে পরিকল্পনা করেন। ওই বৈঠকে থাকা এক নেতা জানান, তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল তৈমুরকে ঠেকানো। কিন্তু এর ফলে কেন্দ্রীয় নেতাদের বিরাগভাজন হওয়ার আশঙ্কাতে স্থানীয় ওই নেতাদের কেউ প্রকাশ্যে তৈমুরের বিরোধীতা করতে পারেননি।
অপরদিকে, সিটি করপোরেশন এলাকার নির্বাচনের কিছুদিন আগে থেকেই নারায়ণগঞ্জে আসতে শুরু করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা। তাদের বেশিরভাগই তৈমুরের পক্ষে সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকাতে গণসংযোগ করেন। নির্বাচন পরিচলানায় দায়িত্ব পাওয়া এসব নেতাদের মধ্যে ঢাকার কেরানীগেঞ্জের বাসিন্দা বিএনপির এক কেন্দ্রীয় নেতার গোপন বৈঠক হয় নারায়ণগঞ্জের সাবেক ওই এমপির। বৈঠকে ওই এমপির ঘনিষ্ঠ কয়েকজন ছাড়া আর কেউ উপস্থিত ছিলেন না।
খলনায়ক-৪
৪ নাম্বার খলনায়কের ভূমিকাতে ছিলেন নারায়ণগঞ্জের বন্দরে বসবাসরত এক ধনাঢ্য ব্যবসায়ি। বিএনপির ভবিষ্যত কাণ্ডারী ভাবা নেতার ছোটকালের বন্ধু তিনি। তার সঙ্গে জিয়া পরিবারের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। তবে তিনি কখনো বিএনপির রাজনীতিতে জড়াননি। বিগত বিএনপি সরকারের আমলে তিনি খেলাধুলা সম্পর্কিত এক বোর্ডের মিডিয়া কমিটির প্রধানের দায়িত্ব পালন করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তরুণ এ ব্যবসায়ীর সঙ্গে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াত আইভীরও মি্রতা রয়েছে। এরই সূত্র ধরে এ ব্যবসায়ী নেতার মূল টার্গেট ছিল আইভীকে জয়ী করে আনা।
দলের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ধনাঢ্য এ ব্যবসায়ী-ই মূলত বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির বেশ কয়েকজন নেতা ও নীতি নির্ধারককে ম্যানেজে ভূমিকা রাখেন।
২দিন আগে থেকেই অভিনন্দন
৩০ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হয় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন। কিন্তু এর ২দিন আগে থেকেই আইভীকে মুঠোফোনে বিএনপির কয়েকজন শীর্ষ নেতা আগাম শুভেচ্ছা জানাতে শুরু করেন।
আইভীর বাসায় বিশেষ দূত
সিটি করপোরশেন নির্বাচনের আগে আইভীকে বিএনপিতে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপি নেতাদের দাবি, এরই ধারাবাহিকতায় অক্টোবর মাসের গোড়ার দিকে জসিম নামে বিএনপির গুলশান অফিসের এক কর্মকর্তা বিশেষ দূত হিসেবে আসেন আইবীর বাড়িতে। মেয়র নির্বাচনের বিএনপির সমর্থন দেওয়ার প্রস্তাব দিয়ে ওই দূত আইভীকে কিছু শর্তের কথা জানান। এর মধ্যে ছিল দলের সদস্য ফরম পূরণ করে বিএনপিতে আনুষ্ঠানিক যোগদান, দলের চেয়ারপারসনের সঙ্গে সাক্ষাত ও জিয়াউর রহমানের মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ। কিন্তু এসব শর্তে রাজী হননি আইভী। এ কারণেই অনেক গুঞ্জন থাকলেও শেষ পর্যন্ত বিএনপিতে যোগ দেননি তিনি।
২৯ অক্টোবর বিকেল থেকে আসতে থাকে একের পর এক ফোন
৩০ অক্টোবর ভোটগ্রহণের আগে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা নারায়ণগঞ্জে এসে তৈমুরের পক্ষে প্রচারণা চালান। ২৮ অক্টোবরের পর ২৯ অক্টোবর বিকেল থেকেই কেন্দ্রীয় নেতারা নারায়ণগঞ্জের স্থানীয় নেতাদের কাছে ফোন করে পরিস্থিতি জানার চেষ্টা করতে থাকেন। কিন্তু যেসব নেতা তৈমুরের নির্বাচন পরিচালনার ক্ষেত্রে অন্যতম মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন তারাই তখন হঠাৎ করে অজানা কোনো কারণে বেঁকে যান। ওই সময়ে ঘটনা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণকারী এক নেতা বলেন, তখন তারা একজোট হয়ে তৈমুরকে ঠেকাতে কাজ শুরু করে দেন। তারা কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে নারায়ণগঞ্জে বিএনপির অবস্থা ভালো নয় বলেও মত দেন। তৈমুরের নির্বাচন পরিচালনা বোর্ডের এক শীর্ষ নেতা, সিদ্ধিরগঞ্জের কয়েকজন নেতাও বারবার কেন্দ্রীয় নেতাদেরকে ফোন করে তৈমুরের অবস্থান সম্পর্কে নেতিবাচক মতামত দেন।
...এবং কেন্দ্রীয় নেতারাও বেঁকে বসলেন শেষ মুহুর্তে
নারায়ণগঞ্জের স্থানীয় এসব নেতাদের মতামত পেয়ে ২৯ অক্টোবর সন্ধ্যের পর থেকেই কেন্দ্রীয় বিএনপির মত নির্বাচনে অংশগ্রহণে বিরত থাকার পক্ষে সরে যেতে থাকে ক্রমশ। তারা দলের চেয়ারপারসনসহ অন্যদের বোঝানোর চেষ্টা করেন- সেনাবাহিনী ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। তাছাড়া ইভিএম মেশিনে এ নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী জয়ী হলেও পরে সংসদ নির্বাচন এ পদ্ধতির বিরোধীতা করা কঠিন হবে। এছাড়া তৈমুরের ওই ধরনের কোনও ভাবমূর্তি বা অবস্থান নেই যে তিনি নির্বাচনে জয়ী হবেন।
নেতারা এসব নিয়ে তাদের যুক্তি তুলে ধরলে এক পর্যায়ে বিএনপি নির্বাচন থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে বিলম্ব করার মূল কারণ ছিল- তৈমুর যেন দলের সিদ্দান্তের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে পরিস্থিতি কাঁচিয়ে দেওয়ার কোনও সুযোগ না পান। অর্থাৎ ‘নো চান্স ফর তৈমুর’ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার কোনও সুযোগই রাখা হয়নি।
বাংলাদেশ সময় : ১৭১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০১১