চাটমোহর (পাবনা): গ্রাম এমনকি শহর এলাকার মানুষের নিত্যদিনকার ব্যঞ্জনের অতিপ্রিয় অনুষঙ্গ কুমড়া বড়ি। আবহমান গ্রামবাংলার তৈরি সুস্বাদু এই খাবারের নাম শুনলেই বাঙালি রসনায় পানি আসে।
বাড়ির বউ-ঝিরা ভোর থেকেই শুরু করে কুমড়া বড়ি তৈরির কাজ। মাসকালাইয়ের ডাল, কালো জিরাসহ অন্যান্য উপকরণ মিশিয়ে চাল কুমড়া দিয়ে একটি বিশেষ কায়দায় তৈরি হয় রসনা তৃপ্তিকারী এ খাবার। তবে প্রাথমিক প্রক্রিয়া শেষে ৫/৭ দিন রোদে শুকানোর পর কুমড়া বড়ি পরিপূর্ণতা লাভ করে।
পল্লী অঞ্চলের অনেক দরিদ্র পরিবার এখনও কুমড়া বড়ি বানিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছে। গৃহস্থের বাড়ির আঙিনা ছেড়ে এই বড়িজীবন-জীবিকার পণ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে অনেক আগে থেকেই।
দেশের অন্য অনেক এলাকার মত পাবনার চাটমোহর উপজেলার দোলং, মথুরাপুর, ফৈলজানা, পার্শ্বডাঙ্গা, হান্ডিয়াল এলাকায় প্রায় দেড় হাজার পরিবার বাণিজ্যিকভাবে কুমড়া বড়ি উৎপাদন ও বিপননের সঙ্গে জড়িত।
চাটমোহর পৌর এলাকার দোলং মহল্লার কুমড়া বড়ি উৎপাদনকারী দুলু রানী পাল ও বিজলী রানী বাংলানিউজকে জানান, চাটমোহরসহ আশপাশের প্রত্যন্ত অঞ্চল জুড়ে মানুষের অতি প্রিয় খাবার এটি। তরকারির উপকরণ হিসেবে কুমড়া বড়ির প্রচলন বেশি।
উষা রানী বাংলানিউজকে জানান, কার্তিক মাস থেকে ফাল্গুন মাস পর্যন্ত এই ব্যবসা ভাল চলে। কুমড়া বড়ি সাধারণত নারীরাই তৈরি করে থাকেন। শীতকালেই এর চাহিদা বেশি। এসময় সর্বত্রই ঘরে ঘরে কুমড়া বড়ি বানানোর ধুম পড়ে যায়। মাছসহ অন্যন্যা রান্নায় কুমড়া বড়ি স্বাদে তৃপ্তি আনে।
স্বপ্না রানী ও বিজলী রানী বাংলানিউজকে জানান, মিঠা পানির রকমারি মাছের সঙ্গে সম্পর্ক এই বড়ির। মাছের তরকারিকে সুস্বাদু করতে তুলনাহীন কুমড়ার বড়ি আজকাল ১২০টাকা থেকে ২০০টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
তারা আরও বলেন, অর্ডার দিয়ে বানালে খরচটা আরো বেশি পড়ে।
শুধু গ্রামাঞ্চলেই নয়, শহরের মানুষও আজকাল কুমড়া অধিক বড়ি পছন্দ করতে শুরু করেছে। তাই চাটমোহরের উৎপাদিত কুমড়া বড়ি স্থানীয় বাজার থেকে জেলা শহর হয়ে এখন রাজধানী ঢাকার কাঁচা বাজারগুলোতে স্থান করে নিয়েছে। আত্মীয়-স্বজনদের হাত হয়ে কুমড়া বড়ি এখন প্রবাসী বাঙালিরও রসনা তৃপ্ত করে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২২ ঘণ্টা, ০৩ নভেম্বর, ২০১১