ঢাকা, রবিবার, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৮ মে ২০২৫, ২০ জিলকদ ১৪৪৬

ফিচার

কুকুরের বিষ্ঠার বিনিময়ে স্বর্ণ!

ফিচার ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯:৩২, ডিসেম্বর ১০, ২০১১
কুকুরের বিষ্ঠার বিনিময়ে স্বর্ণ!

এক অভিনব পন্থায় শহরের রাস্তাঘাট কুকুরের বিষ্ঠামুক্ত রাখতে সফল হয়েছে তাইওয়ানের নিউ তাইপে সিটি কর্তৃপক্ষ । তাদের এ কৌশলের ফলে শহরের ৪হাজারের বেশি বাসিন্দা ১৪ হাজার ৫শ’ ব্যাগ বিষ্ঠা সংগ্রহ করে জমা দিয়েছে।

তবে তারা এমনি এমনি এ ধরনের কাজ করেছেন ভাবলে ভুল হবে। এজন্য শহরের কুকুর পোষা নাগরিকদের সামনে স্বর্ণলাভের মূলো দেখাতে হয়েছে। অর্থাৎ- কুকুরের বিষ্ঠার বিনিময়ে স্বর্ণ! প্রতি ব্যাগ বিষ্ঠা জমাদানের বিপরীতে একটি করে লটারির টিকিট দেওয়া হয়েছে।

নিউ তাইপে সিটি কর্মকর্তারা জানান, এ মহতি কাজ করে পাওয়া ওই লটারির টিকিটের সূত্রেই প্রথম পুরস্কার হিসেবে  ৫০ বছর বয়সী এক নারী ২২ শ’ ডলার (প্রায় পৌনে ২ লাখ টাকা) মূল্যমানের একটি স্বর্ণের চাকতি পুরস্কার পেয়েছেন। মোট ৮৫জন কুকুর-বিষ্ঠা সংগ্রাহককে এভাবে পুরস্কৃত করেছে কর্তৃপক্ষ। তাদের মধ্যে ওই নারীসহ আরও ৪জন পেয়েছেন স্বর্ণচাকতি। আর অন্যরা গৃহস্থালী সামগ্রীসহ নানা ধরনের উপকরণ পেয়েছেন।

বিবিসি’র তাইপে প্রতিনিধি সিন্ডি সুই জানান, নগর কর্তৃপক্ষের নেওয়া সফল এ কৌশলের ফলে রাজধানীর কাছের ওই শহরের রাস্তাঘাটে পড়ে থাকা কুকুরের বিষ্ঠার পরিমাণ এখন স্বাভাবিকের চেয়ে অর্ধেকে নেমে এসেছে।

কুকুরের বিষ্ঠা নিশ্চিতভাবেই স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এতে যে ধরনের ব্যাকটেরিয়া থাকে তা পেটের মারাত্মক পীড়ার কারণ হয়ে থাকে। কুকুরের বিষ্ঠা এছাড়াও টক্সোক্যারিয়াসিস (toxocariasis) নামের এক ধরনের প্যাঁচ-কৃমির সংক্রমণও ঘটায় যা শিশুদের ক্ষেত্রে মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনতে পারে।

তবে সব সাফল্যেরই পেছনের একটি গল্পও থাকে। কখনও তা ইতিবাচক আবার কখনও তা হয় নেতিবাচক। নগর কর্মকর্তারা সংবাদ মাধ্যমের কাছে স্বীকার করেছেন যে, তারা আসলে নিশ্চিত নন যে ওইসব বিষ্ঠা সংগ্রাহক আসলেই কুকুরওয়ালা অর্থাৎ কুকুরের মালিক কি না। কারণ বিষ্ঠা সংগ্রহ ও জমাদানের এ কার্যক্রমটার আয়োজনই করা হয়েছিল- যারা কুকুর পোষেণ তাদেরকে হিসেবে ধরে। নগর কর্তৃপক্ষ মনে করেছিল- এ কায়দায় যার যার পোষা কুকুরের বিষ্ঠা নিজে থেকেই পরিষ্কার করে শহরকে পরিচ্ছন্ন রাখায় ভূমিকা রাখবে নাগরিকরা।

তবে যিনি ২২ শ’ ডলার দামের সোনার চাকতির প্রথম পুরস্কার পেয়েছেন, সেই নারী তার এলাকার একটি স্বেচ্ছাসেবী পরিচ্ছন্ন দলের সদস্য বলে জানা গেছে। ওই দলটি এলাকার রাস্তাঘাট পরিষ্কারসহ কুকুরের বিষ্ঠাও সরিয়ে থাকে। সুতরাং, বিষ্ঠা সরানোয় তার অবদান সত্যিকারে আসলে কতটুকু, তাও নিশ্চিত করে বলা যায়নি।  

এদিকে, গত আগস্টে শুরু হয়ে অক্টোবরে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও জনগণের কাছ থেকে আশাতীত সারা পাওয়ার ‍কারণে শহরের রাস্তা থেকে বিষ্ঠা সরানোর এ কার্যক্রমের সময় বাড়ানো হয়। বাড়ানো হয় পুরস্কারের সংখ্যাও। তবে সম্প্রতি এ কার্যক্রমের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে নগর কর্মকর্তারা বলেন, কর্তৃপক্ষ কুকুরের বিষ্ঠার বিনিময়ে স্বর্নের চাকতি বিতরণের মত ব্যয়বহুল কর্মসূচি কোনোমতেই দীর্ঘকাল চালিয়ে যেতে পারে না। আমরা আশা করি, ইতিমধ্যে নাগরিকরা রাস্তা থেকে কুকুরের মল সরানোর অভ্যেস গড়ে তুলতে পারবেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৯ ঘণ্টা, ১০ ডিসেম্বর, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।