মুক্তিযুদ্ধ বাঙ্গালি জাতির ইতিহাসে এক গৌরবময় অধ্যায়। ১৯৭১ সালে দীর্ঘ নয় মাস সশস্ত্র সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ৩০ লক্ষ শহীদের তাঁজা প্রাণ ও দুই লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে প্রিয় মাতৃভূমির স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছিল বাঙালি জাতি।
বাঙালি জাতি তার এ অর্জনকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে প্রতিনিয়ত। ৭১ সালের এ মহান বিজয়কে স্মরণীয় করে রাখার জন্য দেশের বিভিন্ন স্থানে নির্মাণ করা হয়েছে নানা স্মৃতিস্তম্ভ। ঠিক তেমনি বাঙালি জাতির এই গৌরব ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিকে ধরে রাখতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণ করা হয়েছে স্মারক ভাস্কর্য ‘সংশপ্তক’।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে এক পায়ের ওপর ভর করে দাঁড়িয়ে আছে এ ভাস্কর্যটি। যুদ্ধে নিশ্চিত পরাজয় জেনেও লড়ে যান যে অকুতোভয় বীর সেই সংশপ্তক। মহান মুক্তিযুদ্ধের অকুতোভয় বীরদের স্মরণে এটি নির্মাণ করা হয়।
এক পায়ের ওপর ভর করে দাঁড়িয়ে থাকা এ ভাস্কর্যটির মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে যুদ্ধে শত্রুর আঘাতে এক হাত, এক পা হারিয়েও রাইফেল হাতে লড়ে যাচ্ছেন দেশমাতৃকার বীর সন্তান। মাতৃভূমিকে শত্রুমুক্ত করা যাদের স্বপ্ন, শত্রুর বুলেটের সামনেও জীবন তাদের কাছে তুচ্ছ।
১৯৯০ সালের ২৬ মার্চ এই ভাস্কর্যটি নির্মাণ করা হয়। ভাস্কর্যটির শিল্পী হামিদুজ্জামান খান। এটি উদ্বোধন করেন তৎকালীন জাবির উপাচার্য অধ্যাপক কাজী সালেহ আহম্মেদ। তরুণ প্রজন্ম স্বচক্ষে দেখেনি মুক্তিযুদ্ধ। তবে তাদের স্মৃতির পাতায় স্বর্ণাক্ষরে স্থান পেয়েছে মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় স্মৃতি। দেশের সর্বোচ্চ এ বিদ্যাপীঠে শিক্ষার্থীদের অধিকার সংবলিত যে কোনো আন্দোলন-সংগ্রামের প্রেরণা হিসেবে কাজ করে এটি। প্রতি মুহূর্তে শিক্ষার্থীদের স্মরণ করিয়ে দেয় ৭১-এর যুদ্ধ জয়ের ঘটনা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী হিরু বলেন, ‘সংশপ্তক আমাদের প্রতিনিয়ত স্মরণ করে দেয় মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস। যখনই এ ভাস্কর্যটি দেখি তখনই শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের। শ্রদ্ধায় মাথা অবনত করি তাদের প্রতি যারা আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১১