ঢাকা, রবিবার, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৮ মে ২০২৫, ২০ জিলকদ ১৪৪৬

ফিচার

৫২ থেকে ৭১: প্রতিটি আন্দোলনের সূতিকাগার ছিল নারায়ণগঞ্জ

তানভীর হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮:০৬, ডিসেম্বর ১৫, ২০১১
৫২ থেকে ৭১: প্রতিটি আন্দোলনের সূতিকাগার ছিল নারায়ণগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জ: রাজধানী ঢাকার পাশের নারায়ণগঞ্জ দেশের রাজনৈতিক আন্দোলনের সূতিকাগার হিসেবে পরিচিত। ৫২’র ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত প্রত্যেক আন্দোলনে সে সময়ে নারায়ণগঞ্জের ভূমিকা ছিল উল্লেখযোগ্য।

স্বাধীকার আন্দোলনের অন্যতম সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জন্ম এ নারায়ণগঞ্জ জেলাতেই। এ কারণে বিজয়ের ৪০ বছর পূর্তিতে স্বাধীকার আন্দোলনে নারায়ণগঞ্জের সেই অনবদ্য ও গৌরবোজ্জল ভূমিকাকে স্মরণ করে তুষ্ট এখানকার মানুষ। আর আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা উচ্ছ্বসিত বিজয়ের ৪০ বছর পূর্তির সময়ে তাদের দল ক্ষমতায় থাকায়।

স্বাধীনতার ৪০ বছর উপলক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জ শহরকে সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে। শহরের চাষাঢ়ায় বিজয় স্তম্ভের চারদিকে নানা রংয়ের আলোকসজ্জা দিয়ে বর্ণিল করা হয়েছে। এছাড়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সহ বিভিন্ন স্থানেও আলোকসজ্জা করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক সামছুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের ৪০ বছর পূর্তিকে আরো বর্ণিল করতেই এবার ব্যাপক আয়োজন করা হয়েছে। ’

নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক মফিজুল ইসলাম। বঙ্গবন্ধু তাকে চিনতন। তিনি ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ নেতা শামীম ওসমানের প্রয়াত বাবা একেএম সামসুজ্জোহার ঘনিষ্ঠ জন।

এককালের এ তুখোড় নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা মফিজুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ‘স্বাধীনতার কথা বলতে গেলে নারায়ণগঞ্জ ও আওয়ামী লীগের নাম আসবেই। আমাদের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে এ দু’টি নাম অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। কারণ, এ নারায়ণগঞ্জেই আওয়ামী লীগের জন্ম হয়েছে। শহরের চাষাঢ়ায় শামীম ওসমানের দাদা খান সাহেব ওসমান আলীর মালিকানাধীন ‘বায়তুল আমান’ নামের বাড়িতে গণতন্ত্রের মানসপুত্র হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মজলুম জননেতা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাষানী বিভিন্ন সময়ে এসে থেকেছেন। এ বায়তুল আমানেই হয়েছে আওয়ামী লীগের প্রথম বৈঠক।

এবার স্বাধীতার ৪০ বছরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকায় বেশ তুষ্ট এ প্রবীণ নেতা।

নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক এমপি শামীম ওসমান বাংলানিউজকে বলেন, “৫২’র ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধ ও পরবর্তী প্রতিটি আন্দোলনে নারায়ণগঞ্জবাসী ও জেলা আওয়ামীলীগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সরকার যখন ক্ষমতায় ঠিক সেসময় বিজয়ের ৪০ বছর পূর্তি উৎসব আমাদের জন্য গৌরবময়। আর এ গৌরব আরো উজ্জ্বল হবে যখন দ্রুত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্য্যক্রম শেষ হবে। ”

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রথম মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভী বাংলানিউজকে বলেন, ‘বিজয়ের ৪০ বছর পূর্তিতে আমি প্রথম নারী হিসেবে জনগণের সেবা করার সুযোগ পেয়ে নিজেকে ধন্য মনে করছি। বহু আন্দোলন ও জীবনের বিনিময়ে আমাদের এ স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। এখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়। আর আমার গায়ে আওয়ামী লীগের জন্য নিবেদিন প্রাণ আমার প্রয়াত পিতা আলী আহাম্মদ চুনকার রক্ত বইছে। সুতরাং অন্য বছরের তুলনায় ৪০ বছর পূর্তির এ বিজয় দিবস লগ্নে একটু বেশী ভালো লাগছে। ’

বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নারায়ণগঞ্জ জেলা কমাণ্ডার সামিউল্লাহ মিলন বাংলানিউজকে বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের আন্দোলনে নারায়ণগঞ্জের অবদান ছিল অনেক বেশি। শহরের চাষাঢ়ায় যে স্থানে এখন শহীদ জিয়া হল মিলনায়তন রয়েছে সে স্থানেই ৬৯ এর ৬ দফা ঘোষণা করা হয়েছিল। ’

মুক্তিযোদ্ধা কমাণ্ডার গোপিনাথ দাস বাংলানিউজকে বলেন, ‘ভাষা আন্দোলন থেকেই নারায়ণগঞ্জ ভূমিকা রাখতে শুরু করে। ৫২ সালে বায়তুল আমান থেকেই ভাষা সৈনিক শফি হোসেন খান, মাহবুব জামিল, মোস্তফা সারোয়ার সহ অনেকেই গ্রেপ্তার হয়ে জেল খেটেছিলেন। তখন থেকেই এ জেলায় আন্দোলন দানা বাধতে শুরু করে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।