পাশাপাশি এলাকার কয়েক হাজার মানুষ দৈনন্দিন কাজের জন্য একমাত্র ব্যবহার্য পানি উৎস এই খাল। যুগের আবর্তনে এবং জলবায়ু পরিবর্তন, দখল ও অপরিকল্পিত উন্নয়নের কারণে নিজের অস্তিত্ব হারাতে বসেছে ঐতিহ্যের এই খালটি।
জানা গেছে, ১০ বছর আগেও লাউকাঠী নদী হয়ে তেলিখালী খালের সংযোগ দিয়ে ট্রলার, মালবাহী বড় বড় নৌকা চলাচল করতো। বিভিন্ন গ্রামের মানুষ ছোট ছোট নৌকা দিয়ে কৃষি পণ্য পরিবহন ও যাতায়াত করতেন। কচুরিপানায় খাল গ্রাস করায় ছোট ছোট নৌকাও চলাচল করতে পারছে না। পলি মাটি জমে শাখা খাল ভরাট হয়ে যাওয়ায় চাষাবাদের জমিতে পানি প্রবেশ করতে পারছে না। এর আগে যাও একটু জোয়ার ভাটার পানি প্রবাহ হতো তা এখন প্রায় বন্ধ রয়েছে। এতে ভোগান্তি আরও বেড়েছে।
অপরদিকে ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার বর্জ্য বিভিন্ন জায়গায় ফেলে রাখার ফলে দুর্গন্ধ ও মশা-মাছিসহ বিভিন্ন রোগজীবাণুর প্রজননের সহায়ক হচ্ছে। খালে পানি চলাচল না করায় কচুরিপানা ও বিভিন্ন আগাছায় ভরে গেছে খালটিতে। খালপাড়ে গেলেই যে কারও নজরে পড়বে বিভিন্ন পোকামাকড়সহ বিষাক্ত সাপ। খালে কচুরিপানা জমে পানি চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এতে ওই এলাকার কয়েকশ একর জমিতে আমন ও বেরোচাষ হুমকির মুখে পড়েছে। খালে পলি মাটি জমে থাকায় এবার আশাপাশের জমিতে আমনচাষ হয়নি।
জমিগুলো আগাছায় ভরে থাকায় আসন্ন বোরো মৌসুমে বোরোচাষ নিয়েও কৃষক উদ্বিগ্ন। এলাকাবাসী অবিলম্বে কচুরিপানা অপসারণ করে খালে পানির গতিপ্রবাহ স্বাভাবিক করতে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
তবে এ বিষয়ে পটুয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাসানুজ্জামান জানান, সরকারের ডেল্টা প্ল্যানের আওতায় জেলার সব নদী ও খাল আগের মতো পানি প্রবাহ সচল করতে কাজ করা হচ্ছে। এই নদীতেও পর্যায়ক্রমে কাজ করা হবে। কোনো খাল খনন থেকে বাদ দেওয়া হবে না।
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকালে খালটির পাড় ঘুরে ছবি সংগ্রহ করেছেন পটুয়াখালী ইয়ুথ ফোরামের সদস্য গোপাল হালদার রাহুল। পলি-মাটি জমে নাব্যতা হারিয়েছে তেলিখালী খাল। সকালে ভাটার শেষ মুহূর্তের দৈনন্দিন কাজের পানি সংগ্রহ করেছেন এক গৃহিনী। হাত-মুখ পরিষ্কারের পর কাদা পেরিয়ে প্লাস্টিকের পাত্র হাতে খালের তীর থেকে উঠে আসছেন একজন ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধ।
কচুরিপানায় কানায় কানায় ভরা তেলিখালী খাল।
বাংলাদেশ সময়: ১০১৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২০
এএটি