ঢাকাঃ যুক্তরাষ্ট্রে এবার ২০ সহস্রাধিক অবৈধ ইমিগ্র্যান্ট বাংলাদেশির ভাগ্য সুপ্রসন্ন হতে চলেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা সম্প্রতি আইনের যে প্রস্তাব এনেছেন তাতে বাংলাদেশিসহ ১২ লক্ষাধিক অবৈধ ইমিগ্র্যান্টের দু:স্বপ্ন দূর হবার মত বিশাল সুসংবাদ।
ওবামার ৬ জানুয়ারি পেশকৃত প্রস্তাব চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে তথা নভেম্বরে নির্বাচনের আগেই আইনে পরিণত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সূত্র ঢাকাকে জানিয়েছে- এ প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের সিটিজেন স্বামী/স্ত্রী অথবা সন্তান রয়েছে এমন অবৈধ ইমিগ্র্যান্টদের (আন ডকুমেন্টেড ইমিগ্র্যান্ট) স্ট্যাটাস অ্যাডজাস্টমেন্টের অপেক্ষার সময় একেবারে কমিয়ে ফেলার কথা বলা হয়েছে।
শুধু তাই নয়, ইমিগ্রেশনের আইন লঙ্ঘন করে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানের খেসারত হিসেবে সংশ্লিষ্ট অবৈধ ইমিগ্র্যান্টদের নিজ দেশে ফেরার সময় থেকে কমপক্ষে ৩ বছর এবং সর্বোচ্চ ১০ বছর পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশাধিকার না পাবার যে বিধি রয়েছে- সেটিও দূর হয়ে যাবে এ বিধি আরোপের ফলে।
উল্লেখ্য, অবৈধ ইমিগ্র্যান্টদের স্বদেশে পাঠিয়ে দিলে তার স্বজন (সিটিজেন অথবা গ্রিনকার্ডধারী স্ত্রী/স্বামী-সন্তানরা) চরম দুরাবস্থায় নিপতিত হবার আশঙ্কা থাকলেই প্রস্তাবিত এ বিধি প্রয়োগ করা যাবে।
এ প্রস্তাবের প্রশংসা করেছেন ইউএস সিটিজেনশিপ অ্যান্ড ইমিগ্রেশন সার্ভিসের পরিচালক আলেজান্দ্রো মেয়রকাস।
এ প্রসঙ্গে মেয়রকাস ৬ জানুয়ারি অপরাহ্নে সাংবাদিকদের বলেন, স্ট্যাটাস অ্যাডজাস্টমেন্টের জন্যে প্রচলিতরীতি অনুযায়ী সিটিজেন/ গ্রিনকার্ডধারী আপনজনকে আমেরিকায় রেখে নিজ দেশে গিয়ে ৩ বছর থেকে ১০ বছর পর্যন্ত আর অপেক্ষা করতে হবে না। তারা আমেরিকায় অবস্থান করতে পারবেন এবং অপেক্ষার সময় সপ্তাহ থেকে মাস খানেক হতে পারে।
তিনি বলেন, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূর করার বিশেষ উদ্যোগের অংশ হিসেবে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এ সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন। যাতে সিটিজেনদের মধ্যে বিচ্ছিন্নতা দু:খবোধ কাজ না করে।
রিপাবলিকানরা এ প্রস্তাবের কঠোর সমালোচনা করলেও ডেমোক্র্যাটরা উল্লসিত এজন্যে যে, নভেম্বরের নির্বাচনে হিসপ্যানিকদের ভোট পেতে হলে এ ধরণের পদক্ষেপের বিকল্প ছিল না।
২০০৮ সালের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট বরাক ওবামার অঙ্গীকারও ছিল অবৈধ ইমিগ্র্যান্টদের শর্তসাপেক্ষে বৈধতা প্রদানের। তিনি চেষ্টা করেছেন কিন্তু রিপাবলিকান সিনেটর ও কংগ্রেসম্যানদের সীমাহীন অসহযোগিতার কারণে তা সম্ভব হয়নি।
কম্যুনিটি এবং ইমিগ্র্যান্টদের অধিকার ও মর্যাদা নিয়ে কর্মরত সংগঠনগুলো উল্লেখ করেছে- এ প্রস্তাব আইনে পরিণত করতে কংগ্রেসের অনুমোদনের প্রয়োজন হবে না। তবে সর্বসাধারণের মতামত নিতে হবে এবং এজন্যে অন্তত: ৬০ দিন অপেক্ষা করতে হবে।
নিউইয়র্ক ইমিগ্রেশন কোয়ালিশনের নির্বাহী পরিচালক চাং ওয়াহ হং তাৎক্ষণিক এক প্রতিক্রিয়ায় এ মিডিয়াকে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ভঙ্গুর ইমিগ্রেশন ব্যবস্থার কারণে আমেরিকার ইতিহাস-ঐতিহ্য ভুলুন্ঠিত হতে চলেছে।
লক্ষাধিক বাংলাদেশিসহ সোয়া কোটি ইমিগ্র্যান্ট বছরের পর বছর ধরে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। বরাক ওবামার এ প্রস্তাবে কিছুটা হলেও অবসান ঘটবে অসহনীয় সে পরিস্থিতির।
এজন্যে তিনি ইমিগ্র্যান্টদের পক্ষ থেকে প্রেসিডেন্ট ওবামাকে ধন্যবাদ জানান এবং অবিলম্বে কংগ্রেসে ইমিগ্রেশন রিফর্ম বিল পাশের দাবি জানান।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৭, ২০১১