বিশ্বের প্রতিটি অঞ্চলের মানুষের ব্যবহার্য্য সামগ্রী ওই অঞ্চলের ইতিহাস, ঐতিহ্য আর সেখানকার অধিবাসীদের রুচিবোধ-আত্নপরিচয় তুলে ধরে। অর্থনৈতিক সম্বৃদ্ধির ক্ষেত্রে অনেক সময় এসব সৌখিন সামগ্রী খুব বেশি অবদান না রাখলেও স্থানীয় অধিবাসীদের আবেগকে ধারণ করে বেশ ভালো মতই।
এক্ষেত্রে রাশিয়ার লোমের তৈরি জুতার প্রসঙ্গটি উল্লেখযোগ্য।
রাশিয়ার জাতীয় ঐতিহ্য হিসেবে বিবেচিত এই লোমের জুতার রুশ নাম ভালেনকি (ফেল্ট বুট)। প্রবল শৈত্য প্রবাহের সময় অতীতে ভেড়ার পশমের তৈরি ভালেনকি পরতেন রাশিয়ার সাধারণ মানুষ থেকে নিয়ে অভিজাত বিশিষ্ট লোকেরা এমনকি শাসক জার পরিবারের সদস্যরাও। তবে গত শতাব্দীর শেষার্ধ থেকে রাশিয়ার শহরাঞ্চলে এর কদর অনেকটা কমে আসে। সাধারণত হাঁটু বা হাঁটুর নিচে পর্যন্ত লম্বা শীতকালে পড়ার উপযোগী এ জুতো পানিরোধী (ওয়াটার প্রুফ) নয়। তাই অধিকাংশ সময়ে এর ওপরে চামড়া বা রাবারের তৈরি একটি আলাদা জুতা (গ্যালোশ) পড়ে একে ভিজে যাওয়া থেকে রক্ষা করা হয়।
সম্প্রতি সাইবেরিয়ার ইশিম শহরের ঐতিহাসিক শিল্প সংগ্রহের যাদুঘরের এক প্রদর্শনীতে স্যুভেনির হিসেবে ঐতিহ্যবাহী মাতিওশকা পুতুলকেও পেছনে ফেলেছে লোমের তৈরি এ জুতা।
ঐতিহাসিক তথ্যমতে, সাইবেরিয়াতে প্রথম ভালেনকির উদ্ভব হয়ছিল খ্রীস্টপূর্ব চতুর্থ শতকে।
ইশিম শহরের ঐতিহাসিক শিল্প সামগ্রী যাদুঘরের ডিরেক্টর গালিনা লুকোশিনা বলেন, ‘আমাদের প্রর্দশনীতে দু’শো বছর আগের গাড়োয়ানদের ভালেনকিও রয়েছে। এই জুতোগুলো বিশেষ ধরণের- হাঁটুর চেয়ে উঁচু করে বানানো। বরফঢাকা ঠাণ্ডা পথে চলতে গিয়ে যাতে ঠাণ্ডায় গাড়োয়নদের পা জমে না যায়, তাই এভাবে বানানো হতো ভালেনকি। আর তার ওপরে অনেক অলঙ্করণ থাকতো। ’
বাংলাদেশ সময়: ২২২৪ ঘণ্টা, ১৩ জানয়ারি, ২০১২