মাত্র বিশ হাজার ডলার দিয়ে শুরু। এখান থেকেই ৫ মিলিয়ন ডলার।
ডিসকভারি চ্যানেলের সৃষ্টি ১৯৮৫ সালে। কানাডার একটি ব্রডকাস্ট কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত হয়ে হ্যানড্রিকস তার প্রথম অনুষ্ঠান সম্প্রচার করেন। মাত্র এক বছরের মধ্যেই ডিসকভারি চ্যানেলটি বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তার শীর্ষে উঠে আসে।
এই চ্যানেলটি সম্পর্কে হ্যানড্রিকস বলেন, ডিসকভারি একেবারে শুরু থেকেই দর্শক জনপ্রিয়তা পেয়ে আসছে। তখনই গ্রাহক সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৫৬ হাজার। এখনও প্রথম দিনের কথা মনে পড়ে।
এটা ১৯৮৫ সালের ১৭ জুন। এদিন দুপুর তিনটায় প্রথম অনুষ্ঠান হয়। দশ মিনিট যেতে না যেতেই স্টুডিওতে ফোন আসা শুরু হয়। দিনটি ছিল চ্যানেলের জন্য বিস্ময়কর।
একবার এক সাক্ষাৎকারে হ্যানড্রিকসকে প্রশ্ন করা হয়, কোন আইডিয়া থেকে এমন একটি চ্যানেল শুরু করলেন? এর উত্তরে তিনি বলেন, আশির দশকের শুরুতে সংবাদনির্ভর চ্যানেল আসতে শুরু করে। এর কিছুদিন পরে সঙ্গীতনির্ভর চ্যানেল এমটিভি আসে।
তখন ভাবলাম, নতুন আইডিয়া আসছে ঠিকই, কিন্তু শিক্ষামূলক উপাদান তেমন নেই। তাই শিক্ষামূলক কিছু করার আগ্রহ থেকেই কাজ শুরু করি। যখন কাজ শুরু করি তখন এর নাম দেওয়া হয় ‘কেবল এডুকেশন নেটওয়ার্ক’।
পরিকল্পনার একেবারে শেষ পর্যায়ে এসে মাথায় ‘ডিসকভারি’ নামটি আসে। এটাকেই চ্যানেলের নাম হিসেবে বেছে নেই। তবে অবজেকটিভ বরাবরই শিক্ষার দিকেই ছিল। তাই শিক্ষকদের নিয়েই প্রথম যাত্রা। এমনকি পড়াশোনার জন্য কেউ যদি কোনো ভিডিও কপি চায় তাহলে ডিজিটাল সার্ভিসের মাধ্যমে তা দেওয়া হয়।
জন হ্যানড্রিকস এ চ্যানেলটিকে সব ধরনের মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন। এখনও প্রতিটি অনুষ্ঠান নির্বাচনে তিনি নিখুঁত হওয়ার চেষ্টা করেন। সাধারণ মানুষের কাছে পৃথিবীর অজানা রহস্যগুলোকে সচিত্র তুলে ধরতে ডিসকভারি চ্যানেল সব সময়ই অবিচল।
হ্যানড্রিকস একবার এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, মানুষের মনোভাব নিয়ে আমার ভাবনা। মানুষের মন প্রতি সেকেন্ডে বদলে যায়। তাই মনের কথা চিন্তা করে ডিসকভারি শুরু করিনি। মানুষের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের মধ্যে শুধু একটি স্বভাব সহজে বদলায় না। তা হচ্ছে কৌতুহল।
জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত কৌতুহল নিয়েই সময় পার করে যায়। তাই ডিসকভারি মানুষের কৌতুহল নিয়ে অনুষ্ঠান তৈরি করে। কৌতুহল থেকে আসা সব প্রশ্নের উত্তর জন্যই ডিসকভারি নিরলস কাজ করে।
এ পৃথিবী রহস্য ঘেরা। বিজ্ঞান রহস্যের উন্মোচনে কাজ করেন স্টিফেন হকিং। তারা গবেষণা করেন। আর জন হ্যানড্রিকস এ সব গবেষণার ফলকে বিশ্বের কাছে সচিত্রের মাধ্যমে বৈচিত্র্যপূর্ণভাবে উপস্থাপন করেন। পৃথিবীর হাজারো মানুষের কৌতুহল আর জিজ্ঞাসার উত্তর আবিস্কারের মধ্যেই জন হ্যানড্রিকস আনন্দ খুঁজে পান।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০১২