ঢাকা: কোটিপতি হতে ইচ্ছা সবার। কথায় আছে ‘ভাগ্যে থাকলে ঠেকায় কে’।
অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, দেশটির পশ্চিমবঙ্গের ওই শিক্ষক পারিজাত সাহা রাতারাতি হয়ে গেছেন ৪৯ হাজার কোটি টাকার মালিক। যার মাসিক বেতন ছিল মাত্র পঁয়ত্রিশ হাজার টাকা, তবে...৻
স্কুল শিক্ষক পারিজাত সাহা প্রতি মাসে তার ব্যাংকের রেকারিং অ্যাকাউন্টে এক হাজার করে টাকা জমাচ্ছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করে অতিরিক্ত কিছু টাকার প্রয়োজন পড়ে তার। ঠিক করলেন ওই অ্যাকাউন্টের রেকারিং ডিপোজিট ভেঙ্গে ফেলবেন৻ এ কাজ করতে তিনি স্টেট ব্যাংকের ওয়েবসাইটে লগ ইন করেন রোববার সন্ধ্যায়।
কিন্তু অবিশ্বাস্য! চমকে উঠলেন পারিজাত সাহা। তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হয়েছে বিশাল অঙ্কের টাকা। যেন আকাশ থেকে পড়লেন। নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারলেন না। আবার দেখলেন, সেই বিশাল অঙ্ক।
পারিজাত সাহা বিবিসিকে জানান প্রতি মাসে তিনি রেকারিং অ্যাকাউন্টে এক হাজার টাকা করে জমাচ্ছিলেন।
‘লগ ইন করে দেখলাম দশ হাজার টাকার বদলে একাউন্টে জমা হয়েছে ৪৯ হাজার ৫৭০ কোটি টাকা৻ অবাক তো হয়েইছিলাম। ’
এত বড় অঙ্ক গুনতেও সমস্যা হচ্ছিল তার।
‘বুঝতেই পারছিলাম যে কোথাও কোনো গণ্ডগোল হয়ে গেছে৻ স্টেট ব্যাংকে কর্মরত এক বন্ধুকে ফোন করে ঠাট্টার ছলেই বলি যে তোদের ব্যাংকের কি টাকা বেশি হয়ে গেছে?’
হঠাৎ করে প্রায় অর্ধ লাখ হাজার কোটি টাকার মালিক বানিয়ে দেওয়া এই অত্যাশ্চর্য ঘটনাটা ঘটল কিভাবে?
স্টেট ব্যাংকের যে বালুরঘাট শাখায় পারিজাত সাহার অ্যাকাউন্ট আছে, সেখানকার প্রধান ম্যানেজার জানিয়েছেন যে ওই ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে তাকে নিষেধ করা হয়েছে৻
তবে কলকাতায় স্টেট ব্যাংকের কয়েকটি সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে যে, নিজের অ্যাকাউন্টে ওই বিপুল পরিমাণ টাকা দেখতে পেলেও পারিজাত সাহার পক্ষে সেটা তুলে নেওয়া সম্ভব ছিল না। কারণ ওটা আনক্লিয়ার্ড অ্যামাউন্ট হিসাবে দেখানো ছিল৻
এদিকে ঘটনার খবর পেয়েই কলকাতার মুম্বাই জুড়ে স্টেট ব্যাংকে তদন্ত শুরু হয়ে গেছে। ভুলটা কোথায় তা বের করতে তোড়জোড়ে ব্যস্ত কর্মকর্তারা।
গলদ যে কোথাও আছে, শিক্ষক পারিজাত সাহা সেটা বুঝতে পেরে নিজেই ব্যাংক কর্মকর্তাদের জানান।
কিন্তু নিউজিল্যান্ডে বছর কয়েক আগে নিজের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ভুলবশত জমা হওয়া প্রায় সোয়া পাঁচ মিলিয়ন ডলার হাতিয়ে নিয়েছিলেন সে দেশের এক নাগরিক৻ পরে হংকং-এ ধরা পড়েন তিনি। সে ঘটনার দু’বছর পর গত ডিসেম্বরে তাকে নিউজিল্যান্ডে ফিরিয়ে নিয়ে বিচার শুরু হয়েছে৻
কিন্তু পারিজাত সাহা এখন খুশি। কারণ, তার নিজের প্রয়োজন ছিল যে হাজার দশেক টাকার, সেটা তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা পড়েছে। আর ব্যাংক অবশেষে ফিরিয়ে নিয়েছে ৪৯ হাজার ৫৭০ কোটি টাকা৻
বাংলাদেশ সময়: ৪৫৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০১২