ঢাকা, রবিবার, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৮ মে ২০২৫, ২১ জিলকদ ১৪৪৬

ফিচার

জলবায়ু পরিবর্তন: ঝুঁকি মোকাবেলায় বিশেষ প্রকল্প

আশরাফুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯:৫৪, জানুয়ারি ২৩, ২০১২
জলবায়ু পরিবর্তন: ঝুঁকি মোকাবেলায় বিশেষ প্রকল্প

ঢাকা: জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সংকট মোকাবেলায় বেশ কিছু কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ। চলমান ও ভবিষ্যত সংকট মোকাবেলায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এসব প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে।

কারণ দেশের খাদ্য উৎপাদন প্রক্রিয়া জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সবচে’ বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ পরিচালিত এসব কর্মসূচির মধ্যে ইতোমধ্যে (২০১১ সালে) কাজ শেষ করেছে একটি প্রকল্প, অপরটির কার্যক্রম শেষ হবে ২০১৪ সালে।

সদ্য সমাপ্ত বৃহত্তর বরিশাল ও খুলনা অঞ্চলের লবণাক্ত ও পতিত জমিতে কৃষি সম্প্রসারণ কর্মসূচি: লবণাক্ত পরিবেশে কৃষি আবাদের জন্য কৃষকদের সচেতন ও প্রশিক্ষিত করে তোলার উদ্দেশ্য নিয়ে শুরু হয়। ২০০৯ সালের জুলাই মাসে শুরু করা এই প্রকল্পটির মেয়াদ শেষ হয় ২0১১ সালের জুন মাসে।
প্রকল্পটি দেশের উপকূলীয় ৭টি জেলার ৪৬টি উপজেলায় কার্যক্রম পরিচালিত করে।   এগুলো হচ্ছে- বরিশাল জেলার বরিশাল সদর, বাবুগঞ্জ, উজিরপুর, বাকেরগঞ্জ, বানারীপাড়া, গৌরনদী, আগৈলঝাড়া, মূলাদী, হিজলা ও মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা, পটুয়াখালী জেলার পটুয়াখালী সদর, বাউফল, দুমকী, দশমিনা, গলাচিপা, কলাপাড়া ও মির্জাগঞ্জ,  ঝালকাঠি জেলার সদর, নলছিটি, রাজাপুর ও কাঠালিয়া উপজেলা, বরগুনা জেলার বরগুনা সদর আমতলী, বেতাগী, বামনা ও পাথরঘাটা উপজেলা, পিরোজপুর জেলার পিরোজপুর সদর, নাজিরপুর, মঠবাড়িয়া, ভান্ডারিয়া, নিসারাবাদ, কাউখালী ও জিয়া নগর উপজেলা,  ভোলা জেলার ভোলা সদর, দৌলতখান, বোরহানউদ্দিন, তাজিমুদ্দিন, মানপুরা, লালমোহন ও চরফ্যাশন উপজেলা এবং বাগেরহাট জেলার বাগেরহাট সদর, ফকিরহাট, মোল্লারহাট, মোড়লগঞ্জ, রামপাল ও চিতলমারী উপজেলা।

বৃহত্তর বরিশাল ও খুলনা অঞ্চলের লবণাক্ত পতিত জমিতে কৃষি সম্প্রসারণ কর্মসূচি প্রকল্পের পরিচালক কৃষিবিদ রিফাতুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, ‘কর্মসূচির অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল লবণাক্তপ্রবণ এলাকাগুলোতে কৃষি আবাদ করতে কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া। এছাড়া সেসব এলাকাতে কয়েক প্রকারের লবণ সহিষ্ণু ধানের জাত, ভুট্টা, মুগডাল, মসলা জাতীয় ফসল ও বিভিন্ন প্রকারের ফলের জাত আবাদ সম্প্রসারণ করা হয়েছে। প্রকল্প পরিচালিত এলাকাগুলো পূর্বে একরকম পতিত ছিল। বর্তমানে সেখানে সন্তোষজনক চাষাবাদ হচ্ছে। ’

ডিসিআরএমএ প্রজেক্ট
‘ডিজাস্টার অ্যান্ড ক্লাইমেট রিস্ক ম্যানেজমেন্ট ইন অ্যাগ্রিকালচার প্রজেক্ট’ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে কৃষি খাতের সামগ্রিক ঝুঁকি মোকাবেলায় একটি অগ্রাধিকার প্রকল্প। ২০১১ সালের এপ্রিল মাসে শুরু হওয়া এ প্রজেক্টটি চলবে ২০১৪ সাল পর্যন্ত। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কৃষিক্ষেত্রে দূর্যোগপ্রবণ ২৬টি জেলার ৫২টি উপজেলায় এ প্রকল্পের কার্যক্রম পরিচালিত হবে। এগুলোর মধ্যে খরাপ্রবণ, উপকূলীয় লবনাক্তপ্রবণ, বন্যাপ্রবণ ও আগাম বন্যাপ্রবণ এলাকা রয়েছে।  

কৃষিক্ষেত্রে দুর্যোগ ও জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় সম্প্রসারণ বিভাগের সার্বিক সক্ষমতা বৃদ্ধি, দূর্যোগ মোকাবেলায় তথ্য প্রযুক্তির নেটওয়ার্ককে শক্তিশালী করা, সক্রিয় কৃষক মাঠ স্কুলসমূহের সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ ও ক্লাইমেট চেঞ্জ মাঠস্কুল গঠন, জলবায়ু পরিবর্তনে অভিযোজনকল্পে সমন্বিত সহযোগিতা ও অভিযোজন কলাকৌশল প্রয়োগগত দিক প্রকল্পে অগ্রাধিকার পাবে।

ডিসিআরএমএ’র প্রকল্প পরিচালক ড. আবু ওয়ালী রাগিব হাসান বাংলানিউজকে জানান, ‘প্রকল্পটি জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতির শিকার স্থানীয় জনগোষ্ঠী ও কৃষকের চাহিদা ভিত্তিক এবং জীবনযাত্রা নির্ভর। ‘কাজ করে শেখা’ প্রক্রিয়া গ্রহণের মাধ্যমে তাদের সক্ষমতা উন্নয়ন, সচেতনতা বৃদ্ধি, কার্যকরি যোগাযোগ সৃষ্টি ও কলাকৌশল সমূহের মাঠ প্রদর্শণী কার্যক্রম পরিচালনা করবে এ প্রকল্প। ’  

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৬ ঘণ্টা, ২৩ ডিসেম্বর, ২০১২

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।