প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই সেখানে স্থান পায়, যা কিছু ভালো, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ।
তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এ গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে বাংলানিউজের পাঠকদের জন্য নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিন’।
সোমবার, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ২ ফাল্গুন ১৪২৭ বঙ্গাব্দ, ২ রজব ১৪৪২। এক নজরে দেখে নিন ইতিহাসের এ দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনের জন্ম-মৃত্যুদিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।
ঘটনা
১৭৬৪: স্প্যানিশ লুইসিয়ানায় (বর্তমানে মিসৌরিতে অবস্থিত) সেইন্ট লুইস শহর প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৭৯৮: রোমান প্রজাতন্ত্র ঘোষিত হয়।
১৮৬২: আমেরিকার গৃহযুদ্ধ: জেনারেল উলিসেস এস. গ্রান্ট টেনেসির ফোর্ট ডেনেলসন আক্রমণ করেন।
১৮৭৯: নারী অধিকার: যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি রাদারফোর্ড বি. হেইজ সুপ্রিম কোর্টে নারী আইনজীবীদের মামলায় অংশগ্রহণের অনুমতি সংক্রান্ত বিলে স্বাক্ষর করেন।
১৯৪২: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ: সিঙ্গাপুরের পতন। জাপানের আক্রমণের পর ব্রিটিশ জেনারেল আর্থার পার্সিভিল আত্মসমর্পণ করেন। এসময় প্রায় ৮০ হাজার ভারতীয়, ইংরেজ ও অস্ট্রেলীয় সৈনিক যুদ্ধবন্দি হয়।
১৯৭৬: গণভোটে কিউবার সংবিধান গৃহীত।
১৯৮৯: সোভিয়েত-আফগান যুদ্ধ: আফগানিস্তান থেকে সব সৈনিক ফেরত এসেছে, ঘোষণা করে সোভিয়েত ইউনিয়ন ঘোষণা।
১৯৯৬: বাংলাদেশে ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচন।
জন্ম
১৫৬৪: গ্যালিলিও গ্যালিলি, ইতালীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও পদার্থবিজ্ঞানী
১৭১০: পঞ্চদশ লুইস, ফ্রান্সের রাজা
১৮২০: সুসান বি. এন্থনি, আমেরিকান সামাজিক সংস্কারক, নারী ভোটাধিকার ও দাসপ্রথাবিরোধী আন্দোলনের কর্মী
১৮৬১: আলফ্রেড নর্থ হোয়াইটহেড, ইংরেজ গণিতবিদ ও দার্শনিক
১৮৬৩: কেদারনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, ভারতের বাঙালি কবি ও সাহিত্যিক
১৯১৬: শাহ আবদুল করিম, বাংলাদেশি বাউল গানের শিল্পী
১৯৩০: রমাতোষ সরকার, ভারতের বিশিষ্ট বাঙালি জ্যোর্তিবিজ্ঞানী
মৃত্যু
১৮৬৯: মির্জা গালিব, ভারতীয় কবি
১৯৫৯: ওয়েন উইলান্স রিচার্ডসন, ইংরেজ পদার্থবিজ্ঞানী, পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল বিজয়ী
১৯৮৮: রিচার্ড ফাইনম্যান, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী মার্কিন পদার্থবিজ্ঞানী
১৯৯৯: হেনরি ওয়ে কেন্ডাল, আমেরিকান পদার্থবিজ্ঞানী, পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল বিজয়ী
২০১৯: বাংলাদেশের প্রখ্যাত কবি ও সাহিত্যিক আল মাহমুদ
মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ, যিনি আল মাহমুদ নামে অধিক পরিচিত— ছিলেন আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি। তিনি একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক, ছোটগল্প লেখক, শিশুসাহিত্যিক এবং সাংবাদিক ছিলেন।
বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়াংশে সক্রিয় থেকে তিনি আধুনিক বাংলা কবিতাকে নতুন আঙ্গিকে, চেতনায় ও বাকভঙ্গিতে বিশেষভাবে সমৃদ্ধ করেছেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন প্রবাসী সরকারের দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তীকালে প্রতিষ্ঠিত সরকারবিরোধী সংবাদপত্র দৈনিক গণকণ্ঠ (১৯৭২-১৯৭৪) পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন।
১৯৫০-এর দশকে যে কয়েকজন লেখক বাংলা ভাষা আন্দোলন, জাতীয়তাবাদ, রাজনীতি, অর্থনৈতিক নিপীড়ন এবং পশ্চিম পাকিস্তানি সরকার বিরোধী আন্দোলন নিয়ে লিখেছেন তাদের মধ্যে মাহমুদ একজন। লোক লোকান্তর (১৯৬৩), কালের কলস (১৯৬৬), সোনালী কাবিন (১৯৭৩), মায়াবী পর্দা দুলে ওঠো, ইত্যাদি তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ। কবি আল মাহমুদ তার অনবদ্য গল্প ও উপন্যাসের জন্যও খ্যাতি অর্জন করেছিলেন।
তিনি ১৯৬৮ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার এবং ১৯৮৬ সালে একুশে পদক ১৯৬৮ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন।
আল মাহমুদ ১৯৩৬ সালের ১১ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার মোড়াইল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ২০১৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ৮২ বছর বয়সে ঢাকার ধানমণ্ডির ইবনে সিনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তিনি নিউমোনিয়াসহ বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ০২০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২১
এফএম