প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই সেখানে স্থান পায়, যা কিছু ভালো, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ।
তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এ গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে বাংলানিউজের পাঠকদের জন্য নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিন’।
শনিবার, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ৭ ফাল্গুন ১৪২৭ বঙ্গাব্দ, ৭ রজব ১৪৪২। এক নজরে দেখে নিন ইতিহাসের এ দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনের জন্ম-মৃত্যুদিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।
ঘটনা
১৫০৩: পর্তুগিজ নাবিক ভাস্কো দা গামা দক্ষিণ ভারতের কান্নানো বন্দর থেকে আফ্রিকায় মোজাম্বিকের উদ্দেশে যাত্রা করেন।
১৮০৯: সায়াগোসার যুদ্ধে ফরাসিদের কাছে স্পেনীয়রা পরাজিত হয়।
১৮১১: অস্ট্রিয়া নিজেকে দেউলিয়া ঘোষণা করে।
১৯৬২: প্রথম মার্কিন নভোচারী জন এইচ গ্লেন পৃথিবীর তিনটি কক্ষপথে পরিভ্রমণ করেন।
১৯৭২: বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয় মরিশাস।
১৯৭৫: এক প্রেসিডেন্সিয়াল আদেশের মাধ্যমে বলা হয়, আওয়ামী লীগের সকল সংসদ সদস্য বাকশালের সদস্য হিসেবে বিবেচিত হবে।
১৯৭৭: বাংলাদেশ সরকার রাষ্ট্রীয় পুরস্কার একুশে পদক প্রবর্তন করে।
১৯৮৪: রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল ওসমানীকে সিলেটে দাফন সম্পন্ন করা হয়।
১৯৯১: যুগোশ্লাভিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন হতে স্লোভেনিয়ার পার্লামেন্ট সদস্যদের ভোটে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গৃহীয় হয়।
১৯৯৯: ভারতের প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী ১০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক বাস সার্ভিসে করে পাকিস্তান সফর করেন।
জন্ম
১৭৫৯: জার্মান চিকিত্সক যোহান খৃস্টান রেইল জন্মগ্রহণ করেন
১৭৯৪: আইরিশ লেখক উইলিয়াম কারলেতন জন্মগ্রহণ করেন
১৯৩৭: নোবেল পুরস্কার বিজয়ী জার্মান রসায়নবিদ রবার্ট হুবার
১৯৫১: গর্ডন ব্রাউন, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী
১৯৮৬: নুসরাত ইমরোজ তিশা, বাংলাদেশি অভিনেত্রী
মৃত্যু
১৭০৭: মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেব
১৯০৭: নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ফরাসি রসায়নবিদ হেনরি মিশান
১৯১৬: নোবেল বিজয়ী সুইডিশ সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদ ক্লাস পন্টুস আরনল্ডসন
১৯২৮: বাংলাদেশের প্রখ্যাত সাংবাদিক, সাহিত্যিক ও রাজনীতিবিদ ফয়েজ আহমেদ
১৯৪৯: স্বাধীনতা আন্দোলনে কংগ্রেসের সদস্য অবিভক্ত স্বাধীন বাংলা তথা ‘সার্বভৌম বাংলাদেশ’ গঠনের অন্যতম প্রবক্তা ও লেখক কিরণশঙ্কর রায়।
১৯৫০: শরৎচন্দ্র বসু, বাঙালি জাতীয়তাবাদী, পেশায় ব্যারিস্টার এবং ভারতের স্বাধীনতা কর্মী।
১৯৭২: নোবেল বিজয়ী জার্মান বংশোদ্ভূত আমেরিকান পদার্থবিদ ও একাডেমিক মারিয়া গ্যোপের্ট-মায়ার
১৯৭৬: নোবেল বিজয়ী ফরাসি বিচারক রেনে কাসাঁ
১৯৮৬: বাংলা সাহিত্যে গোয়েন্দা চরিত্র কিরীটি রায়ের স্রষ্টা ভারতীয় বাঙালি সাহিত্যিক নীহাররঞ্জন গুপ্ত
২০০৩: গোলাম মুস্তাফা, বাংলাদেশি অভিনেতা
২০১২: ফয়েজ আহমদ, বাংলাদেশের প্রখ্যাত সাংবাদিক, সাহিত্যিক, রাজনীতিবিদ ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব।
ফয়েজ আহমদ ১৯২৮ সালের ২ মে ব্রিটিশ ভারতে ঢাকা জেলার বিক্রমপুর পরগণার বাসাইলভোগ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। গ্রামটি বর্তমানে মুন্সীগঞ্জ জেলার অন্তর্ভুক্ত।
১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগ দেন তিনি। ১৯৪৮ সাল থেকে জড়িয়ে পড়েন সাংবাদিকতার সঙ্গে।
একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ এবং পরে নব্বইয়ের দশকে এরশাদবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছিলেন ফয়েজ আহমদ। সে সময়কার দুই বিরোধী নেত্রী শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়াকে একসঙ্গে মুখোমুখি বসানোর পেছনে মুখ্য ভূমিকা রেখেছিলেন তিনি।
ফয়েজ আহমদের প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা প্রায় ১০০। এর মধ্যে প্রচুর বই তিনি লিখেছেন শিশুদের জন্য। তার চার খণ্ডের কলাম সংকলন ‘মধ্যরাতের অশ্বারোহী’ ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। এছাড়াও তার ‘সত্যবাবু মারা গেছেন’ শীর্ষক বইটি প্রচুর জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
ফয়েজ আহমদের ছেলেবেলা থেকেই জড়িত ছিলেন পত্রিকা ও লেখালেখির সঙ্গে। ছড়াকার হিসেবেও প্রসিদ্ধ ছিলেন প্রবীণ এ সাংবাদিক। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক আন্দোলনের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন তিনি এবং শিল্পাঙ্গণ গ্যালারি নামে একটি উঁচুমানের গ্যালারি প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা নেন।
১৯৭৬ সালে শিশু সাহিত্যে অবদানের জন্য বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পান ফয়েজ আহমদ এবং ১৯৯১ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে সাংবাদিকতায় অবদানের জন্য একুশে পদক দেয়।
২০১২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি ৮৪ বছর বয়সে দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে তার মৃত্যু হয়।
বাংলাদেশ সময়: ০১২২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২১
এফএম