ঢাকা, সোমবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৯ মে ২০২৫, ২১ জিলকদ ১৪৪৬

ফিচার

শিম্পাঞ্জির শৃঙ্খলাবোধ!

ফিচারডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪:৪৬, মার্চ ২১, ২০১২
শিম্পাঞ্জির শৃঙ্খলাবোধ!

ঢাকা : এ বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে মানুষকেই (আশরাফুল মাখলুকাত) সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব বলা হয়। কেননা তাবৎ বিশ্বে কেবলমাত্র মানুষই মহাশূন্যে উড়িয়েছে বিজয়কেতন।

এক অর্থে বলতে গেলে জলে-স্থলে-অন্তরীক্ষে মানুষেরই জয়জয়কার। আর মানুষ ছাড়া জীবজগতের সবই তার অধীনস্থ।  

সৃষ্টিকর্তার অপারমহিমা আর রহস্যময়তা নিয়ে কবি কাজী নজরুল ইসলাম লিখেছেন- ‘খেলিছ এ বিশ্ব লয়ে/ বিরাট শিশু আনমনে/ প্রলয় সৃষ্টি তব পুতুল খেলা/ নিরজনে প্রভু, নিরজনে। ’

অনেক সময় প্রাণিদের মাঝেও পরিলক্ষিত হয়- অতিপ্রাণবিক গুণাবলী। যা সত্যিই হতবাক করে মানুষকে।
বর্তমানকালে পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে বিরোধ মেটাতে অন্যসব উপায়ের মধ্যে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে মধ্যস্ততা বা আপোষ মীমাংসার ফর্মূলাকে। অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা আর পর্যবেক্ষনের পর পারস্পরিক সমঝোতার পন্থাকেই বিচারিক কাজে সর্বাগ্রে বিবেচনা করা হচ্ছে।

সর্বশ্রেষ্ঠ জীব মানুষ আধুনিক যুগে এসেও রপ্ত করতে পারেনি যে আচরণ, জ্ঞান-বিজ্ঞান ও সভ্যতার আলো না পেয়েও বন্য প্রাণিদের মধ্যে যখন পরিলক্ষিত হয় উন্নত কোনো গুণাবলী- তখন বিস্ময় মানতে হয়!

সম্প্রতি সুইজারল্যান্ডের জুরিখ বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক প্রমাণ করলেন, শিম্পাঞ্জি বহুযুগ আগেই নিজগোত্রের বিরোধ নিষ্পত্তি করতে মধ্যস্থতা বা সমঝোতার পন্থা জানতো। নৃতত্ত্ববিদ কারেল ফন শাইক ও ক্লাউডিয়া রুডলফ ফন রোয়রের উদ্ধৃতি দিয়ে ডয়েচে ভেলে অনলাইন এ খবর জানিয়েছে।

খবরে বলা হয়, গবেষকদল নারী-পুরুষ, ছোট-বড় মিলিয়ে ১১টি শিম্পাঞ্জির ওপর এ গবেষণা করেন। ওই দলে প্রাথমিকভাবে দু’জন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ, তিন মহিলা, এক তরুণ ও দু’টি তরুণী শিম্পাঞ্জি ছিল। পরে এ দলে আরো প্রাপ্ত বয়স্ক ৩ নারী শিম্পাঞ্জির প্রবেশ ঘটে। এতে দুই প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ শিম্পাঞ্জির মধ্যে কে দলের প্রধান হবেন ও কে কোন নারীকে সঙ্গিনী করবে- এ নিয়ে তুমুল বিবাদ বেঁধে যায়।

সবাইকে বিস্মিত করে অল্প ক’দিনের মধ্যেই সংঘাত মেটাতে এগিয়ে আসে দলের জ্যেষ্ঠ শিম্পাঞ্জি। নৃবিজ্ঞানীরা দেখান, প্রায় ৬৯টি এ ধরণের বচসায় মিডিয়েশন মেকানিজম বা মধ্যস্থতা পন্থায় বিরোধ নিষ্পত্তির চেষ্টা করেছে ওই দলের বয়োজ্যেষ্ঠ শিম্পাঞ্জিটি। অনেকটা অবাক লাগলেও প্রায় ৬০ বার এ মধ্যস্থতায় কাজ হয়।

গবেষক ফন শাইক ও ফন রোয়র জানান, শিম্পাঞ্জি আর মানুষের ডিএনএ’র মধ্যে নাকি অন্তত ৯৯ শতাংশ মিল রয়েছে। পার্থক্য কেবল ‘জাঙ্ক’ ডিএনএ’র মধ্যে সীমাবদ্ধ। এর আগে এ জাতীয় বিস্তর গবেষণা হলেও শিম্পাঞ্জির মধ্যস্থতা কৌশল উন্মোচিত করার তথ্য একেবারেই নতুন ও ভিন্নতর অর্জন বলে মনে করছেন গবেষকরা।

বাংলাদেশ সময় : ১৪৩৪ ঘন্টা, মার্চ ২১, ২০১২
এআই
সম্পাদনা : সুকুমার সরকার, কো-অর্ডিনেশন এডিটর;

জুয়েল মাজহার, কনসালট্যান্ট এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।