মেসি, লুইস সুয়ারেজ, জেরার্ড পিকেদের মতো সিনিয়র সদস্যরা নেইমারের বিষয়টি নিয়ে ক্লাব প্রেসিডেন্ট হোসে মাতিয়া বার্তমেউ’র ওপর বেশ ক্ষুব্ধ। বিশেষ এটা জানার পর যে, বার্সেলোনা আসলে নেইমারের জন্য মাত্র ১৪০ মিলিয়ন ইউরোর প্রস্তাব দিয়েছে।
এতদিন শোনা গেছে, নেইমারকে ধারে এক মৌসুমের জন্য আনার পর ১৫০ মিলিয়ন ইউরো দিয়ে স্থায়ীভাবে কিনে নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে বার্সা। অথচ শুরু থেকেই পিএসজি দাবি করছে ২৫০ মিলিয়ন ইউরো। কিন্তু নেইমারের কাছ থেকে নতুন তথ্য শুনে ক্লাব প্রেসিডেন্টের উদ্দেশ্য নিয়েই সন্দেহ দেখা দিয়েছে ড্রেসিং রুমে। বার্সার প্রস্তাব যে পিএসজি মানবে না তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। এখন আর এটা গোপন নেই যে, নেইমারকে ফিরিয়ে আনতে যথেষ্ট চেষ্টা না করায় বার্সার ড্রেসিং রুমে হতাশা ছড়িয়ে পড়েছে।
এটা ঠিক যে, খেলোয়াড় কেনার জন্য কোন পথ বেছে নেওয়া হবে তা ক্লাব কর্তৃপক্ষের এখতিয়ার। কিন্তু গত মৌসুমের শেষে খেলোয়াড়দের কাছে নেইমারকে ফিরিয়ে আনার কথা দিয়েই ঝামেলাটা পাকিয়েছেন বার্তমেউ। তিনি বর্তমান স্কোয়াডের কাছে বলেছিলেন, নেইমারকে আনার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করবেন। কিন্তু ১৪০ মিলিয়ন ইউরোর অফার কিন্তু তার প্রচেষ্টার ঘাটতির সাক্ষ্য দিচ্ছে। সেসময় তিনি হয়তো মেসিদের খুশি করতেই বলেছিলেন। সিনিয়র খেলোয়াড়দের কাছে অন্তত তাই মনে হচ্ছে।
এদিকে বার্সার দুর্বলতার সুযোগ নিচ্ছে রিয়াল ও জুভেন্টাস। এটাও বার্সার খেলোয়াড়দের জন্য পীড়াদায়ক। বিশেষ করে নেইমার যদি চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদে যান, সেটা হবে মেসিদের জন্য রীতিমত কঠিন এক পরিস্থিতি। কিন্তু বার্সার সঙ্গে পিএসজির সম্পর্কও ভালো নয়।
ফরাসি জায়ান্টদের কাতারি মালিক নাসির আল-খেলাইফির সঙ্গে রিয়াল প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্তিনো পেরেজের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথাও সবার জানা। এরইমধ্যে তিন খেলোয়াড় (গ্যারেথ বেল, হামেস রদ্রিগেজ ও কেইলর নাভাস) প্লাস ১০০ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে নেইমারকে নেওয়ার প্রস্তাবও দিয়েছে স্প্যানিশ জায়ান্টরা। তবে এই প্রস্তাবে না করে দিয়েছে পিএসজি।
এই মুহূর্তে নেইমারের প্রথম পছন্দ বার্সেলোনা। কিন্তু বার্সার জন্য আজীবন অপেক্ষা না করে প্যারিস ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদেই চলে যেতে প্রস্তুত হতে পারেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। নেইমারের চাহিদার কথা ভালোই বুঝতে পারছেন মেসি। এজন্য ক্লাবের সিনিয়রদের সঙ্গে তিনি আলোচনাও চালিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে, আগামী মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগ জিততে হলে নেইমারের গুরুত্ব বোঝাতে তিনি বেশ তৎপর।
তবে নেইমারকে নিয়ে বার্সারও কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। এক্ষেত্রে আবার মেসি ইস্যু একটা বড় সমস্যা। কারণ, ২০২০ সালের জুনে মেসির সঙ্গে বার্সার বর্তমান চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে। সেসময় মেসিকে রেখে দিতে হলে বড় অঙ্কের অর্থ গুণতে হবে কাতালান জায়ান্টদের। এজন্যই এই মুহূর্তে নেইমারের জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ করা তাদের জন্য একটু কঠিন। তাছাড়া এই মৌসুমে ২৫০ মিলিয়ন ইউরো খরচ হয়ে গেছে নতুন খেলোয়াড় কিনতে গিয়েই।
বার্সা প্রেসিডেন্টের জন্য সামনে ১০টি কঠিন দিন অপেক্ষা করছে। তিনি যদি নেইমারকে কিনতে ব্যর্থ হন, তাহলে সমর্থকদের কাছ থেকে যেমন সমালোচিত হতে হবে, তেমনি প্রথমবারের মতো তাকে নিজের ড্রেসিং রুম থেকেও বিরোধিতার মুখে পড়তে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৬ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০১৯
এমএইচএম