এতদিন সমান পাঁচবার করে ব্যালন ডি’অর পুরস্কার জয়ের রেকর্ড ছিল মেসি ও রোনালদোর ঝুলিতে। এখন সেই রেকর্ডে শুধুই মেসির নাম।
২০০৯
২০০৮-০৯ মৌসুমে ট্রেবল জয়ের স্বাদ পায় বার্সেলোনা। সেবার ব্যালন ডি’অর এর দাবিদার হিসেবে মেসি ছিলেন এককথায় অপ্রতিদ্বন্দ্বী। যেখানে একজন খেলোয়াড়ের সর্বোচ্চ ৪৮০ পয়েন্ট পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, সেখানে মেসি ৪৭৩ পয়েন্ট নিয়ে অর্জন করেন নিজের প্রথম ব্যালন ডি’অর। দ্বিতীয় স্থানে থাকা রোনালদোর পয়েন্ট ছিল ২৩৩ আর মেসির বার্সা সতীর্থ জাভি তৃতীয় স্থানে ছিলেন ১৭০ পয়েন্ট নিয়ে।
২০১০
এবার টানা দ্বিতীয়বারের মতো ব্যালন ডি’অর ঘরে তোলেন মেসি। তার দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে ভর করে সেবার টানা দ্বিতীয়বার লা লিগার শিরোপা জিতে নেয় বার্সেলোনা। ফলশ্রুতিতে ইউরোপিয়ান গোল্ডেন শু যায় মেসির হাতে। তবে সেবার বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই বিদায় নেয় আর্জেন্টিনা আর শিরোপা জেতে স্পেন। ফলে স্পেনের আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা ও জাভি সেবার বর্ষসেরার তালিকায় ক্লাব সতীর্থ মেসিকে জোর টক্কর দেন।
মোট পয়েন্ট তথা ভোটের ২২.৬৫ শতাংশ অর্জন করেন মেসি, যেখানে ইনিয়েস্তা ১৭.৩৬ শতাংশ আর জাভি অর্জন করেন ১৬.৪৮ শতাংশ ভোট। দুই সতীর্থকে হারিয়ে ব্যালন ডি’অর জেতা মেসির জন্য বিশেষ কীর্তি। আরও একটা কারণে ওই পুরস্কার বিশেষ হওয়ার দাবি রাখে। কারণ সেবারই প্রথম এই পুরস্কারে ফ্রেঞ্চ ফুটবলের সঙ্গে যুক্ত হয় ফিফা। অর্থাৎ, সেবারই প্রথম শুধু ক্রীড়া সাংবাদিক নয়, বরং খেলোয়াড়, কোচ এবং মিডিয়ার সম্মিলিত ভোটের হিসাবে বর্ষসেরা নির্বাচিত করা হয়।
২০১১
বার্সেলোনার হয়ে মেসির একইসঙ্গে উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ ও লা লিগা জয় তথা ডাবল জয় ফের মন জিতে নেয় ফুটবলবোদ্ধাদের। ফলে ব্যালন ডি’অর জয়ের হ্যাটট্রিকের অনন্য কীর্তি গড়েন তিনি। এবারও প্রতিদ্বন্দ্বীদের চেয়ে যোজন যোজন এগিয়ে পুরস্কার জিতে নেন মেসি। তার ৪৭.৮৮ ভোটের বিপরীতে দ্বিতীয় স্থানে থাকা রোনালদোর অর্জন ছিল ২১.৬ শতাংশ ভোট আর পরের স্থানে থাকা জাভি পেয়েছিলেন ৯.২৩ শতাংশ ভোট।
২০১২
টানা চতুর্থবারের মতো ব্যালন ডি’অর জিতে নতুন ইতিহাস গড়েন মেসি। সেবার জার্ড ম্যুলারকে পেছনে ফেলে এক পঞ্জিকাবর্ষে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ডও গড়েন তিনি। ভাবা যায়, এক মৌসুমে সেবার ৯১ গোল করেছিলেন বার্সা ফরোয়ার্ড। এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, সেবার গোল্ডেন শু তার হাতেই উঠে। তবে ব্যক্তিগতভাবে মেসি সাফল্য পেলেও দলগতভাবে সেবার শুধুই কোপা দেল রে জয় করেছিল বার্সা। কিন্তু মেসির ব্যক্তিগত অর্জনের কোনো তুলনা ছিল না। ফলে ৪১.৬০ শতাংশ ভোট যায় তার ঝুলিতে। রোনালদো পান ২৩.৬৮ শতাংশ ভোট আর তৃতীয় স্থানে থাকা ইনিয়েস্তা পান ১০.৯১ শতাংশ ভোট।
২০১৫
টানা চারবার জেতার পর কয়েক বছর ব্যালন ডি’অর হাতে নিতে পারেননি মেসি। তবে ২০১৫ সালে ফের একবার তার পায়ের জাদুতে দ্বিতীয়বারের মতো ট্রেবল জিতে ইতিহাস গড়ে বার্সা। সেবার ৪১.৩৩ শতাংশ ভোট পেয়ে ব্যালন ডি’অর জিতে নেন মেসি। দ্বিতীয় স্থানে থাকা রোনালদো পান ২৭.৭৬ পয়েন্ট আর নেইমার জুনিয়র ৭.৮৬ শতাংশ ভোট নিয়ে অর্জন করেন তৃতীয় স্থান। সেবারই শেষবারের মতো ফিফা আর ফ্রেঞ্চ ফুটবলের যৌথ উদ্যোগে এই পুরস্কার দেয়া হয়েছিল।
২০১৯
সর্বশেষ আসরে নিজের ষষ্ঠ ব্যালন ডি’অর জিতে নতুন ইতিহাস গড়েছেন মেসি। সমান পাঁচটি করে এই পুরস্কার জেতার যে রেকর্ড তিনি এতদিন ভাগ করেছিলেন রোনালদোর সঙ্গে, সেই রেকর্ডের মালিক এখন শুধুই তিনি। এবার দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন লিভারপুলের ডাচ ডিফেন্ডার ভার্জিল ফন ডাইক আর রোনালদোকে সন্তুষ্ট থাকতে হয় তৃতীয় স্থান নিয়েই। ৩২ বছর বয়সী মেসি গত মৌসুমে লা লিগায় ৩৬ গোল করে শিরোপা জিতিয়েছেন বার্সাকে। সেইসঙ্গে ব্যক্তিগত পুরস্কার ইউরোপিয়ান গোল্ডেন শু জেতেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৩, ২০১৯
এমএইচএম