ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

লালমনিরহাটে শীতের সঙ্গে বাড়ছে ঠাণ্ডাজনিত রোগী

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০২২
লালমনিরহাটে শীতের সঙ্গে বাড়ছে ঠাণ্ডাজনিত রোগী

লালমনিরহাট: হিমালয় পাদদেশের জেলা লালমনিরহাটে তাপমাত্রা ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে। সেই সঙ্গে হাসপাতালগুলোতে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা।

জানা গেছে, হিমালয়ের পাদদেশের জেলা হওয়ায় লালমনিরহাটে কিছুটা আগেই শীতের প্রভাব পড়ে। বিদায়ও নেয় দেশের অন্যান্য জেলার তুলনায় বেশ কিছুটা সময় দেরিতে। যার কারণে শীতের প্রভাব কিছুটা দীর্ঘ সময় থাকে এ জেলায়। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ জুড়ে চলছে শৈত্য প্রবাহ। ঘন কুয়াশার সঙ্গে যুক্ত হওয়া শৈত্য প্রবাহে অনেকটাই বিপাকে পড়েছেন মাধারণ মানুষের সঙ্গে অন্যান্য প্রাণীরাও। মাঝে মধ্যে দুপুর গড়িয়ে সূর্যের দেখা মিললেও বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) তারও দেখাই মেলেনি। ফলেশীতের প্রকোপ বেড়েছে কয়েকগুণ।

ঘন কুয়াশার সঙ্গে শৈত্য প্রবাহের ঠাণ্ডা বাতাসে অসুস্থ্ হয়ে পড়ছে সব প্রাণী। মানুষ, জীব জন্তুসহ ফসলের ক্ষেতেও এর প্রভাব পড়েছে। নানান রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষসহ গৃহপালিত পশুপাখি এবং ফসলের ক্ষেত।

ঘন কুয়াশায় ফসলের ক্ষেতেও নানা রোগ দেখা দিচ্ছে। কৃষকরা আলুসহ সব সবজি ক্ষেতে এবং আমনের বীজতলায় শীত সহনীয় বিভিন্ন কীটনাশক স্প্রে করছেন। কিন্তু ঘন কুয়াশা আর শৈত্য প্রবাহের কারনে তাতে খুব একটা কাজ হচ্ছে না। গৃহপালিত পশুপাখি নিয়েও বিপাকে পড়েছেন খামারিসহ কৃষকরা।

শীতজনিত নানান রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ, বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা। জেলার ৫টি সরকারি হাসপাতালেই রোগীদের ভিড় বেড়েছে। প্রতিদিন নতুন নতুন রোগী আসছেন সব হাসপাতালে। আন্তঃবিভাগ ও বহিঃবিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছেন তারা। খুব সহজে ছাড়ছে না শীতজনিত রোগ। জ্বর, সর্দ্দি, কাশি, নিউমেনিয়াসহ নানান ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ।

প্রিয়তমা রানী তার এক বছরের ছেলে দেবজিৎকে নিয়ে এসেছেন আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। সেখানকার শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. আজমল হককে তিনি জানান, ছেলে দীর্ঘ এক মাস ধরে জ্বর, সর্দ্দি, কাশিতে ভুগছে। কোনো ওষুধে কাজ হচ্ছে না। কাশির কারণে রাতে ঘুমাতেও পারছে না। তাই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে এসেছেন। ছেলেকে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন চিকিৎসক।

জেলার বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে রোগীদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। ডিসেম্বর মাসেই রোগী বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। প্রতিটি হাসপাতালে শুধু বহিঃবিভাগে দৈনিক রোগী আসছেন ৩/৪ শত। তাদের অধিকাংশ শীতজনিত রোগে আক্রান্ত। এর মধ্যে শিশু আর বৃদ্ধের সংখ্যাই বেশি।

আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. আজমল হক বাংলানিউজকে বলেন, হাসপাতালে সপ্তাহের ৬দিনই রোগী দেখি। ডিসেম্বর থেকে প্রতিদিন শতাধিক রোগী দেখতে হচ্ছে। শীত বাড়ায় শিশুরা বেশি রোগাক্রান্ত হচ্ছে। হাসপাতালে আসা অধিকাংশ শিশু নিউমেনিয়ায় ভুগছে। তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করে গ্যাস দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

ঠাণ্ডাজনিত রোগ থেকে শিশুদের রক্ষায় শিশুদের সাধ্যমত উষ্ণতা দিতে, ঠাণ্ডা লাগতে পারে এমন স্থানে শিশুদের না নেওয়া, সমস্যা হলে বিলম্ব না করে দ্রুত সরকারি হাসপাতালে আসা এবং ঠাণ্ডাবাসি খাবার বাদ দিয়ে পর্যাপ্ত শীতকালিন সবজি ও ফলমূলে শিশুদের খাদ্যাভ্যাস করায় পরামর্শ দেন এই চিকিৎসক।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০২২
এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।