ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

শিশু হাসপাতালে ভর্তি ৮৭ শতাংশই ডেঙ্গুর ডেন-২ ধরনে আক্রান্ত

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৪, ২০২৩
শিশু হাসপাতালে ভর্তি ৮৭ শতাংশই ডেঙ্গুর ডেন-২ ধরনে আক্রান্ত

ঢাকা: ঢাকা শিশু হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিতে আসা শিশুদের ৮৭ শতাংশ ডেন-২ এবং ১৩ শতাংশ ডেন-৩ ধরনে আক্রান্ত হয়েছে বলে রোগতত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগ, বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে পরিচালিত এক গবেষণা থেকে এ তথ্য জানা যায়।

শনিবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে শেরেবাংলা নগরের ঢাকা শিশু হাসপাতালে এ গবেষণার ফলা প্রকাশ করা হয়।

রোগতত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগ, বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে ও অর্থায়নে এবং আইসিডিডিআরবির সহযোগিতায় শিশুদের মধ্যে ডেঙ্গু ভাইরাস সংক্রমণের রোগতাত্ত্বিক ও সেরোটাইপ নির্ধারণের এ গবেষণা কার্যক্রম পরিচালিত হয়।

বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের পরিচালনা বোর্ডের সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লা সভাপতিত্বে গবেষণা ফলাফল উপস্থাপন করেন প্রধান গবেষক, বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলম ও আইসিডিডিআরবি জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান।

গবেষণায় দেখা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট মাসের সময়কালের মধ্যে বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে ডেঙ্গু ভাইরাস সংক্রমণে আক্রান্ত এক হাজার ৩৯ জন ভর্তি শিশু রোগীর মধ্য থেকে ৭২২ জন শিশু রোগীকে রোগতাত্ত্বিক গবেষণার জন্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ডেঙ্গু ভাইরাসের সেরোটাইপ নির্ধারণে এবং অন্যান্য ভাইরাসের উপস্থিতি সনাক্তকরণে ৭২২ জন শিশু রোগী হতে ১০৪ জন রোগীর রক্ত ও ন্যাজোফ্রানজিয়াল সোয়াব (Nasopharyngeal Swab) সংগ্রহ করে আইসিডিডিআরবির পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করা হয়। পাশাপাশি ডেঙ্গু ভাইরাস সংক্রমণের উপসর্গ ছিল কিন্তু NSI অথবা IgM পরীক্ষায় ডেঙ্গু ভাইরাসের উপস্থিতি সনাক্তকরণ সম্ভব হয়নি এমন ৫০ জন ভর্তি রোগীর রক্ত ও ন্যাজোফ্রানজিয়াল সোয়াব সংগ্রহ করে আইসিডিডিআরবির পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করা হয়।  

গবেষণায় থেকে জানা যায় যে, NSI ও IgM নেগেটিভ ৫০টি নমুনার মধ্যে RT-PCR পরীক্ষার মাধ্যমে ১৭টি (৩৪ শতাংশ) ফলস নেগেটিভ (False Negative) পাওয়া যায় ও ডেঙ্গু নেগেটিভ রোগীর মধ্যে ১৯ শতাংশ রোগী এবং ডেঙ্গু পজেটিভ রোগীর মধ্যে ১২ শতাংশ রোগী অন্যান্য ভাইরাসের সংক্রমণে (ইনফ্লুয়েঞ্জা ও রেসপাইরেটরি সিনসাইটাল ভাইরাস) আক্রান্ত ছিল। ১১৩টি ডেঙ্গু পজেটিভ নমুনায় ৮৭ শতাংশ ডেন-২ এবং ১৩ শতাংশ ডেন-৩ এর উপস্থিতি পাওয়া যায়।

জিনোম সিকোয়েন্স পরীক্ষায় দেখা যায়, বর্তমানে শিশুদের ভেতর ৮৭ শতাংশ ডেন-২ এর যে উপস্থিতি পরিলক্ষিত হচ্ছে তার জীনগত বৈশিষ্ট্য ২০১৮ সালের ডেন-২ এর জীনগত বৈশিষ্ট্যের কাছাকাছি এবং ১৩ শতাংশ ডেন-৩ এর উপস্থিতি পরিলক্ষিত হচ্ছে তার জীনগত বৈশিষ্ট্য ২০১৭ সালের ডেন-৩ এর জীনগত বৈশিষ্ট্যের কাছাকাছি।

এছাড়া গবেষণায় অংশ নেওয়া রোগীদের মধ্যে ৮৭ শতাংশ ঢাকা মহানগরীর। যার মধ্যে উত্তর সিটি কর্পোরেশনে ৮২ শতাংশ, দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে ১৮ শতাংশ রোগী পরিলক্ষিত হয়। অংশ নেওয়া ৭২২ জন রোগীর মধ্যে ৭১ শতাংশ (৫১৬) রোগী বিপদ সংকেতসহ (Warning Sign) এবং ২৯ শতাংশ (২০৬) রোগী বিপদসংকেত বিহীন ভর্তি ছিল, যাদের মধ্যে ১৭ জন মৃত্যুবরণ করে। মৃত ১৭ জন রোগীর মধ্যে ১৬ জনই বিপদ সংকেতসহ (Warning Sign) ভর্তি হয়েছিল।

বিপদসংকেত বিহীন ২০৬ জন রোগীর মধ্যে ১১ শতাংশ (২৩ জন) রোগীর আইসিইউতে ভর্তির প্রয়োজন হয়েছিল। ৭২২ জন রোগীর মধ্যে ১০ শতাংশ রোগী অন্যান্য রোগের উপস্থিতি (Comorbidity) এবং ৩১ শতাংশ রোগী ডেঙ্গু জ্বরের সংক্রমণ হতে উদ্ভূত বিভিন্ন ধরনের জটিলতা (Complication) নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল।

গবেষণায় অংশ নেওয়া রোগীদের মধ্যে ৯০ শতাংশ রোগী সুস্থ হয়ে ফিরে গিয়েছে, আট শতাংশ রোগী স্বেচ্ছায় অন্যত্র চলে গিয়েছিল এবং দুই শতাংশ রোগী মৃত্যুবরণ করেছিল।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৪, ২০২৩
আরকেআর/এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।