চাঁদপুর: জেলায় গরীব ও অসহায় রোগীদের অনেকটা ভরসাস্থল হচ্ছে ২৫০ শয্যা চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতাল। চলমান প্রচণ্ড তাপদাহে অসুস্থ হয়ে এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন রেকর্ড সংখ্যক রোগী।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সকালে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, রোগীর ভিড়ে পা ফেলার যায়গা নেই। জ্বর, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, টাইফয়েডসহ গরমজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে আউটডোরে টিকিট কাউন্টারের সামনে নারী-পুরুষরা ভিড় করছেন।
অন্যদিকে, হাসপাতালের পুরুষ, শিশু ও নারী ওয়ার্ডে রোগীর চাপ বেশি হওয়ায় হাসপাতালের করিডোর ও বারান্দার মেঝেতে শুয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন রোগীরা। ২৫০ শয্যা হাসপাতালে বর্তমানে প্রতিদিন ৪০০ থেকে সাড়ে ৪০০ রোগী চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন।
গরমে অসুস্থ হয়ে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের মধ্যে শিশু রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। ভর্তি রোগীর প্রায় ৭০ শতাংশই শিশু।
জেলার সদর উপজেলার মৈশাদী ইউনিয়নের বাসিন্দা মাসুম বিল্লাহ। তিনি এক বছরের শিশুকে নিয়ে হাসপাতালে আছেন গত চারদিন ধরে। তিনি জানান, গরমজনিত কারণে মেয়ের ঠান্ডা ও নিউমোনিয়ার চিকিৎসা চলছে। তবে শিশু ওয়ার্ডে অনেক রোগী, যার কারণে সেখানে বেড না পেয়ে বারান্দায় থাকতে হচ্ছে।
শিশু ওয়ার্ডে ঘুরে একাধিক শিশুর অভিভাবকের সঙ্গে কথা হয়। তারা বলেন, জ্বর, পাতলা পায়খানা ও বমি হওয়ার কারণে হাসপাতালে এসে শিশুদের চিকিৎসা নিচ্ছেন। রোগী বেশি হওয়ায় কাঙ্ক্ষিত সেবা পাওয়া যাচ্ছে না। এছাড়া প্রয়োজনীয় অনেক ওষুধ বাইরে থেকে কিনে আনতে হয়।
হাসপাতালটির শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. আসমা বেগম বলেন, প্রচণ্ড গরমের কারণে শিশু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। ফলে হাসপাতালের নির্ধারিত বেড ছাড়া মেঝেতে এবং করিডরে শিশুদের চিকিৎসা সেবা নিতে হচ্ছে। অতিরিক্ত শিশু ভর্তি হওয়ার কারণে আমাদেরও চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
এ সময় তিনি শিশুদেরকে প্রতিনিয়ত গোসল করানো, ৬ মাস বয়স পর্যন্ত শিশুদের বুকের দুধ পান করানো এবং শিশুকে পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানোর পরামর্শ দেন।
চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. একেএম মাহবুবুর রহমান বলেন, আমাদের ২৫০ শয্যার বিপরীতে হাসপাতালে রোগী ভর্তি আছে প্রায় চার শতাধিক। এর মধ্যে শিশু ওয়ার্ডে ৪২ বেডের বিপরীতে রোগী ভর্তি আছে ১৬১ জন। আমাদের চিকিৎসক ও নার্সরা সেবা দিতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, এই গরমে প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের না যাওয়াই ভালো। সবাই ছায়াযুক্ত স্থানে থাকবেন এবং বেশি বেশি পানি পান করবেন। বিশেষ করে অভিভাবকদের শিশুদের প্রতি আলাদা নজরদারি ও যত্নশীল হওয়া প্রয়োজন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০২৪
এসআইএ