খুলনা: খুলনা শিশু হাসপাতাল থেকে স্থায়ী ভাবে বরখাস্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো: আল আমিন রাকিব ও সহকারি প্রশাসনিক কর্মকর্তা শীলা হালদারকে চাকরিতে পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অ্যাডহক কমিটি। বিষয়টি জানাজানি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের মাঝে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।
শিশু হাসপাতালের ল্যাব ইনচার্জ এস এম ইমরান বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের শাসনামলে দলীয় কোটায় শিশু হাসপাতালে চাকরি পান সিটি কলেজ শাখা ছাত্রলীগ নেতা আল আমিন রাকিব। সাবেক এমপি মিজানুর রহমান মিজানের আস্থাভাজন হিসেবে তিনি নিয়োগ পেয়েই একক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেন। ক্ষমতার অপব্যবহার, অসদাচারণ, আর্থিক অনিয়ম সহ নানা দুর্নীতিতে জড়িত হন। ৫ আগস্টের পর দীর্ঘদিন নির্যাতন ও জুলুমের শিকার ডাক্তার, নার্স ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ফুঁসে ওঠে। তাদের তীব্র ক্ষোভ ও লাগাতার আন্দোলনের মুখে গত বছরের ১৪ আগস্ট এ দুজনকে স্থায়ীভাবে বহিস্কার করা হয়। কর্তৃপক্ষ আমাদের নিশ্চিত করেছিল যে তারা আর চাকরিতে নেই। হঠাৎ করে শনিবার রাতের অন্ধকারে একটা নীল নকশা আঁকা হয়েছে।
হাসপাতালের তৃতীয় শ্রেনীর স্টাফ এম ডি আলী আসগর বলেন, আওয়ামী দোসর সাবেক প্রশাসনিক র্কমর্কতা ও সহকারী কর্মকর্তাকে গত বছর স্থায়ীভাবে বহিস্কার করা হয়েছিলো। তাদেরকেই আবার কেন ফিরিয়ে আনতে চাচ্ছেন? এসময় আরও বক্তব্য রাখেন মো: আলী আকবর, মো: মামুন, মো: আশারাফুর রহমান তুফান, মো: আলমগীর গাজী, মো: মনিরুল ইসলাম, দেবদাস বিশ্বাস প্রমুখ। সোমবার সকাল থেকে পুনরায় বিক্ষোভ কর্মসূচি চলবে বলে সভা থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়।
জানা গেছে, গত ২৪ মে শিশু হাসপাতালের অ্যাডহক কমিটি সভায় এই দুজনের বরখাস্তের বিষয়টি চূড়ান্ত নিস্পত্তির জন্য ৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে মতামত ও সুপারিশ প্রদান করবে মর্মে সিদ্ধান্ত হয়। কমিটির সদস্যরা সার্বিক বিষয় বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা করে তাদের পূর্ববর্তী কর্মদক্ষতা বিবেচনায় নিয়ে কর্মস্থলে যোগদানের সুপারিশ করেন।
যোগাযোগ করা হলে কমিটির সদস্য মুনীর আহমেদ বলেন, হাসপাতালে কর্মীদের কাজে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা, অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা দূর করার জন্য রাকিবের মতো দক্ষ লোকের দরকার। যে প্রক্রিয়ায় তাদেরকে বরখাস্ত করা হয়েছিল তা বিধিসম্মত ছিলনা। মিটিংয়ে ৫জন সদস্য সর্বসম্মতভাবে দুইজনকে কাজে ফিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার ডা. অনুপ কুমার দে বলেন, তারা দুজন স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করে চলে গিয়েছিল। অ্যাডহক কমিটি তাদেরকে আবারও ফিরিয়ে আনবে- এ খবর শুনে হাসপাতালের সবাই ক্ষোভে ফেটে পড়েছে। আমরা ডাক্তার সহ অন্য কেউ চাইনা তারা ফিরে আসুক।
তবে আল আমি রাকিব বলেন, হাসপাতালে ফেরার বিষয়ে আমার আগ্রহ নেই। আমি ভিন্ন পেশায় যোগ দিয়েছি। চেয়েছিলাম হাসপাতালের কাছে আমার পাওনা টাকা গুলো দিয়ে দেওয়া হবে। কমিটি আমাকে পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জানতাম না।
এমআরএম