ঢাকা: সরকারি হাসপাতালের সেবার মান নিয়ে অভিযোগের অন্ত নেই আমাদের। প্রতিনিয়তই প্রশ্ন উঠছে নানা মহল থেকে।
এরকম হাজারো অভিযোগ মাথায় নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে দেশের সরকারি হাসপাতালগুলো। অভিযোগ যতই থাক, গরিব-অসহায়রা তবু তো কম খরচে পাচ্ছে তাদের ন্যূনতম চিকিৎসা। কখনো-সখনো বিপদে সবার আগে প্রাথমিক সেবাও পাচ্ছে সব শ্রেণীর মানুষ। তাই শুধু সমালোচনা নয়, হাসপাতালগুলোর কাজের স্বীকৃতি দিতে উদ্যোগী হয়েছে ১৮টি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান।
শনিবার সকালে জাতীয় বাতজ্বরজনিত হৃদরোগ প্রতিরোধ কেন্দ্র হাসপাতালের কর্মীদের ধন্যবাদের মাধ্যমে প্রতীকীভাবে দেশের সব রাষ্ট্রায়াত্ত্ব হাসপাতালের কর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে প্রতিষ্ঠানগুলো।
এ ১৮টি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের পক্ষ থেকে জানানো হয়, রাষ্ট্রায়ত্ত্ব হাসপাতাল জনগণের। নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যেও রাষ্ট্রায়ত্ত্ব হাসপাতালগুলো জনগণকে চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছে।
২০১২ সালের এক তথ্য বিবরণী তুলে ধরে বলা হয়, জনগণের হাসপাতালের কর্মীরা ১৩ কোটি ৮২ লাখ ৮১ হাজার ১১৫ জনকে বর্হিবিভাগে এবং ৪৫ লাখ জনকে হাসপাতালে রেখে সেবা দিয়েছে। বর্তমানে প্রতি ৩ হাজার ২৯৭ জনে ১ জন চিকিৎসক, ১১ হাজার জনে ১ জন নার্স ও ২৭ হাজার ৮৪২ জনে ১ জন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট রয়েছে।
সীমিত লোকবল, সীমিত সম্পদের পাশাপাশি নানাবিধ সমস্যার কারণে রাষ্ট্রায়াত্ত্ব হাসপাতালগুলোর সেবা নিয়ে প্রতিনিয়ত প্রশ্ন ওঠে। তথাপি গরিব সাধারণ মানুষের চিকিৎসার আশ্রয়স্থল এসব হাসপাতাল।
হাসপাতালগুলোর সেবা নিয়ে নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু সেবার নূন্যতম স্বীকৃতি নেই। স্বীকৃতি এক ধরনের ইতিবাচক উদ্যোগ, যা মানুষকে উৎসাহী ও উদ্ধুদ্ধ করে। এ জন্যই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়, যেন হাসপাতালগুলো উৎসাহ নিয়ে কাজ করতে পারে।
এ কর্মসূচির অন্যতম আয়োজক অ্যাডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম বলেন, রাষ্ট্রের হাসপাতালগুলোতে কোটি কোটি মানুষ বিনামূল্যে ও স্বল্পমূল্যে স্বাস্থ্যসেবা পায়। কিছু নেতিবাচক ঘটনা প্রচার হলেও, অবদান কখনোই তুলে ধরা হয় না। সরকার পরিচালিত স্বাস্থ্য ব্যবস্থার মানোন্নয়নের লক্ষ্যেই এ প্রচারণা কার্যক্রম। ইতোমধ্যে এ ধরনের কার্যক্রম ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে পালিত হয়েছে।
নিরাপদ ডেভলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ইবনুল সাইদ রানা বলেন, স্বাস্থ্য মানুষের অধিকার। রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ও রাষ্ট্রীয় চিকিৎসা সেবার মাধ্যমেই মানুষের স্বাস্থ্য সেবা পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব। রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্যসেবা ইতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরার মাধ্যমেই এ ব্যবস্থা শক্তিশালী করা সম্ভব।
১৮টি সংগঠনের মধ্যে আরও ছিল লুৎফর রহমান ফাউন্ডেশন, মাস্তুল, নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ পরিবেশ বাঁচাও অন্দোলন (বাপা), ইয়ুথ ফাউন্ডেশন, অরুণ উদয় তরুণ দল ও মাদকবিরোধী সংগঠন প্রত্যাশা।
জাতীয় বাতজ্বর ও হৃদরোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের ডা. কামরুন নাহার চৌধুরী ও শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পক্ষে ডা. শাহজাদা সেলিম কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীদের আনুষ্ঠানিকভাবে ধন্যবাদ জানিয়ে এ ধরনের কার্যক্রম অন্য সরকারি হাসপাতালেও চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী তরুণরা সম্মিলিতভাবে এ কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০১৪