ঢাকা: যেহেতু চিকিৎসকদের ভুলের কারণেই ফিস্টুলা বেশি হয়, তাই এটা চিকিৎসকদের জন্য লজ্জার। মাতৃমৃত্যু রোধে এমডিজি অর্জন করলেও এক্ষেত্রে দেশ অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
ফিস্টুলার চিকিৎসায় যথাযথ প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করা, বিভিন্ন টেকনিক সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞানলাভ ও চিকিৎসা বিজ্ঞানের নিত্য নতুন প্রযুক্তি ও সর্বশেষ আবিষ্কার সম্পর্কে চিকিৎসকদের ধারণা থাকটা জরুরি বলেও মনে করেন তারা।
বুধবার (২৭ মে) দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ‘ফিস্টুলা হোক নির্বাসিত, নারী হোক সম্মানিত’ শীর্ষক এক সেমিনারে চিকিৎসকরা এসব কথা বলেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও ইউএনএফপিএ’র যৌথ আয়োজনে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ডা. এ এইচ এম টি এ চৌধুরী বলেন, আমাদের লজ্জা আমাদেরই ঢাকতে হবে, তাই ফিস্টুলা দূরীকরণে চিকিৎসকদের এগিয়ে আসতে হবে। একই সঙ্গে ফিস্টুলা রোগীদের সুচিকিৎসা ও এ রোগ প্রতিরোধে প্রয়োজন প্রসূতিবিদ, স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ, ইউরোলজিস্ট, অ্যানেসথেশিওলজিস্ট, সমাজকর্মীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের যৌথ প্রয়াস।
সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. ইসমাইল খান, উপ-পরিচালক প্রফেসর ডা. শহীদুল্লাহ, অবস্টেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনিকোলোজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশ (ওজিএসবি)-এর সভাপতি প্রফেসর ডা. রওশন আরা বেগম, ফিস্টুলা বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. আনোয়ারা বেগম ও প্রফেসর ডা. সায়েবা আক্তার, প্রফেসর ডা. আনোয়ারুল আজিম, প্রফেসর সুব্রত কুমার মন্ডল, প্রফেসর ডা. ইফফাত আরা, প্রফেসর ডা. ফেরদৌসি ইসলাম, ইউএনফিপিএ’র প্রতিনিধি ডা. আয়শা সিদ্দিকা প্রমুখ।
বিশেষজ্ঞরা জানান, বিশ্বের মোট ফিস্টুলা রোগীর মধ্যে ৮০ ভাগই চিকিৎসকের ভুলের কারণে এই সমস্যায় আক্রান্ত হন। বাকি ২০ ভাগ প্রসবজনিত ফিস্টুলায় আক্রান্ত হয়ে থাকে। শুধুমাত্র ফিস্টুলার কারণে আক্রান্তদের মধ্যে বছরে বাংলাদেশে ১৫ শতাংশ বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে থাকে। অসংখ্য নারীকে পরিবার পরিজন থেকে বিচ্ছিন হয়ে একঘরে অমানবিক জীবন যাপন করতে হয়।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, হাজার হাজার মহিলা প্রতিদিন ফিস্টুলা নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তাদের চিকিৎসা নিশ্চিত করা চিকিৎসা পেশা ও প্রতিষ্ঠান সমূহের পবিত্র দায়িত্ব।
চিকিৎসকরা বলেন, অস্ত্রপচারজনিত ফিস্টুলা দেশে ক্রমেই বাড়ছে। দক্ষ হাতে অপারেশন নিশ্চিত করার মাধ্যমে আমাদের এই সমস্যার সমাধান করতে হবে।
এছাড়া প্রয়োজন ব্যতীত গর্ভবতী মায়েদের সিজার না করা, প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিভিন্ন ক্লিনিকে অদক্ষদের মাধ্যমে ঢালাওভাবে রোগীদের অস্ত্রপচার বন্ধ করা ইত্যাদি বিষয়ের প্রতি গুরুত্বারোপ করেন চিকিৎসকরা।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৩ ঘণ্টা, মে ২৭, ২০১৫
এমএন/এমজেএফ/