ঢাকা: ‘মানবদেহে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন আইন-২০১৫’র নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
সোমবার (২৯ জুন) জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভুইঞা সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘দ্য কোর্ট ফিস (সংশোধন) অ্যাক্ট-২০১৫’র চূড়ান্ত অনুমোদন, ‘দ্য ক্যাডেট কলেজ (সংশোধন) অ্যাক্ট-২০১৫’র খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, ১৯৯৯ সালের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন আইনটি বাস্তবায়নের জন্য এর আগে বিধিমালা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। বিধিমালার খসড়া করে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর পর বিধিমালায় মৌলিক বিষয় চলে আসে। সে কারণে মৌলিক বিষয়গুলো আইনে সন্নিবেশিত করার সিদ্ধান্ত হয়।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আগের আইনটির খুব বেশি পরিবর্তন হচ্ছে না। আইনটিতে সংযোজন হচ্ছে মৌলিক বিষয়। সংযোজনও আইনের ক্ষেত্রে একটি সংশোধন।
মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভুইঞা জানান, সংযোজন প্রস্তাবের মধ্যে থাকছে- অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ট্রান্সপ্লান্টের প্রক্রিয়াপদ্ধতি ও মৃত ব্যক্তির অঙ্গদানের পদ্ধতি। এ ক্ষেত্রে থাকবে ট্রান্সপ্লান্ট কমিটি, মেডিকেল বোর্ড, ডাটাবেজ সংরক্ষণ ব্যবস্থা। ডাটাবেজ সংরক্ষণ হবে গোপনীয়। তথ্যঅধিকার আইন এ ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না।
তিনি বলেন, অনুমোদন ছাড়া কোনো প্রতিষ্ঠান অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ট্রান্সপ্লান্ট করতে পারবে না। যদি কেউ ট্রান্সপ্লান্ট করতে চায়, তাহলে অনুমোদন নিতে হবে। অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন ও প্রতিস্থাপনের জন্য নির্ধারিত ফরম থাকবে, যেন ম্যানিপুলেশনে কোনো ঝামেলা না হয়।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজনে উচ্চ কমিটি থাকবে। মতামতের জন্য থাকবে মেডিকেল বোর্ড। কোনো সার্জন কোনো কমিটির সদস্য থাকবেন না। ট্রান্সপ্লান্ট কমিটিতে অধ্যাপক বা পরিচালকের নিচের কেউ থাকতে পারবেন না। কমিটি হবে স্বাধীন।
তিনি আরও জানান, আইনটির কাঠামোগত পরিবর্তন আনা হচ্ছে। কোন বিষয় আইনে সন্নিবেশিত হবে আর কোন বিষয় বিধিমালায় থাকবে তা ঠিক করার পর মন্ত্রিসভায় চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য উঠানো হবে।
মোশাররাফ হোসাইন ভুইঞা জানান, মানুষের মস্তিষ্কের মৃত্যুর (ব্রেইন ডেথ) পর তার বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ অসুস্থ ব্যক্তির দেহে সংযোজন করার সুযোগ রাখা হচ্ছে আইনে। মৃত ব্যক্তির বা তার উত্তরাধিকারের সম্মতিতে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ অন্যকে দান করার ক্ষেত্রে নির্ধারিত ফরম থাকবে।
মিথ্যা তথ্য দিলে দুই বছরের কারাদণ্ড এবং পাঁচ লাখ টাকা জরিমানার বিধানও এ আইনে রাখা হচ্ছে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। একইসঙ্গে মন্ত্রিসভার বৈঠকে মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন-২০১২’র সংশোধন প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
বাংলাদেশ সময় : ১৩৩৫ ঘণ্টা, জুন ২৯, ২০১৫/আপডেট ১৬৪৪ ঘণ্টা
এমআইএইচ/এসএমএ/এসইউ/এইচএ/