ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

১০০ বেডে ২১৫ রোগী, ডাক্তার-নার্সের সংকট

ছোটন সাহা, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১০৭ ঘণ্টা, জুলাই ৮, ২০১৭
১০০ বেডে ২১৫ রোগী, ডাক্তার-নার্সের সংকট বেড সংকটে মেঝেতে রোগীরা/ছবি: বাংলানিউজ

ভোলা: ডাক্তার, নার্স ও শয্যা সংকটসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত জেলার ১৮ লাখ মানুষের একমাত্র চিকিৎসা সেবাকেন্দ্র ভোলা সদর হাসপাতাল। বর্তমানে ২২ চিকিৎসকের জায়গায় ৬ ও ৫৬ নার্সের পরিবর্তে ৪০ জন থাকায় ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম।

শুক্রবার (৭ জুলাই) রাত পর্যন্ত ১শ বেডের হাসপাতালটিতে ২১৫ জন রোগীকে চিকিৎসা নিতে দেখা যায়।

হাসপাতালের নারী, মেডিসিন, সার্জারি ও শিশু ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, শয্যা সংকটের কারণে মেঝেতে রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছেন।

এসব ওয়ার্ডে গড়ে দু’জন করে নার্স থাকার কথা থাকলেও নার্স রয়েছে মাত্র একজন করে। এতে রোগীদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন ডাক্তার ও নার্সরা।

মেডিসিন ওয়ার্ডে দায়িত্বরত স্টাফ নার্স নাজনিন আক্তার বলেন, হাসপাতালে যত সংখ্যক নার্স থাকার কথা তত সংখ্যক নেই। যে কারণে রোগীদের চিকিৎসা দিতে অনেক সমস্যা হচ্ছে। হাসপাতালটিতে ৫০ শয্যার জনবলও নেই।

মেডিসিন ওয়ার্ডের মেঝেতে চিকিৎসা নিতে দেখা যায় আছিয়া, মনি, বিবি ফাতেমা, আসমা, আমেনা ও নামিনসহ একাধিক রোগী। তাদের স্বজনরা জানান, বেড না থাকায় ফ্লোরে বিছানা পেতে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।

মেডিসিন ওয়ার্ডে ২৪টি বেডের বিপরীতে ৪০ জন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন।
নারী সার্জারি ওয়ার্ডেরও প্রায় একই অবস্থায়। সেখানকার দায়িত্বরত নার্স ইশরাত জাহান বলেন, ওয়ার্ডে ১৬টি বেড থাকলেও সেখানে রোগী রয়েছে ৩২ জন।

শিশু ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, ২৪টি বেডে রোগী রয়েছে ৪০ জন। ধারণক্ষমতা চেয়ে বেশি রোগী থাকায় চিকিৎসা নিতে কষ্ট হচ্ছে রোগীদের।

ইলিশা ইউনিয়নের চর মনসা থেকে আসা এক রোগীর মা বলেন, একটি বেডে দু’টি শিশুকে রেখে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। এতে আমাদের নানা ধরনের সমস্যা হচ্ছে। একই অবস্থা অধিকাংশ বেডের।

শিশু ওয়ার্ডে দায়িত্বরত নার্স শাহনাজ বলেন, একজন নার্স ও একজন স্টুডেন্ট দিয়ে চিকিৎসা চালাতে হচ্ছে। এসব ওয়ার্ডে দিনের বেলা তিনজন ও রাতে অন্তত দু’জন করে স্টাফ নার্স থাকা প্রয়োজন। কিন্তু নার্স সংকটের কারণে আমাদের সব রোগীকে চিকিৎসা দিতে সমস্যা হচ্ছে।

এদিকে  পুরুষ মেডিসিন ও সার্জারি ওয়ার্ডে রোগীর তেমন চাপ না থাকলেও ডাক্তার ও নার্স সংকটের কারণে অনেকেই ঠিকমতো সেবা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ রোগীদের।  

জানতে চাইলে ভোলা সদর হাসপাতালে আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) শরিফুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, চিকিৎসক সংকট থাকায় আমাদের রোগীদের চিকিৎসা দিতে সমস্যা হচ্ছে। তবুও রোগীদের সাধ্যমতো চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করছি। হাসপাতালে ২২ জন চিকিৎসকের জায়গায় রয়েছেন মাত্র ৬ জন। রয়েছে নার্সের সংকট। বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।

সুত্র জানায়, ১০০ বেডের ভোলা সদর হাসপাতালটিতে শুক্রবার রাত পর্যন্ত ২১৫ জন রোগী চিকিৎসা নিয়েছে। জেলার ৬টি উপজেলায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থাকলেও উন্নত চিকিৎসার জন্য ভোলা সদর হাসপাতালে আসতে হয় রোগীদের। কিন্তু প্রায়ই শয্যা সংকটে মেঝেতে চিকিৎসা নিতে হয় রোগীদের। গরমের দিনে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় রোগীদের।


বাংলাদেশ সময়: ০৬৫৮ ঘণ্টা, জুলাই ০৮, ২০১৭
এএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।