এমন করুণ অবস্থায়ও হাল না ছেড়ে নিজের সবটুকু দিয়ে চেষ্টাও করেছেন সুস্থ হওয়ার। ঘুরেছেন বিভিন্ন ডাক্তারের চেম্বারে চেম্বারে।
ঠিক এমন সময় জলিল মিয়ার সামনে হাজির হয় খুলনা আদ-দ্বীন আকিজ হাসপাতালের ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের টিম। হতদরিদ্র এই বৃদ্ধের চিকিৎসার সকল দায়ভার নিয়ে তাকে আনা হয় ঢাকা মগবাজার আদ-দ্বীন হাসপাতালে। সেখানে জলিল মিয়ার চিকিৎসা হয় স্পাইন সার্জন অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ডা. শহিদুল ইসলামের অধীনে। মাত্র এক মাসের চিকিৎসায় সম্পূর্ন সুস্থ হয়ে নিজের পায়ে হেঁটে হাসপাতাল থেকে বের হন জলিল মিয়া।
জলিল মিয়ার চিকিৎসার সকল খরচ, থাকা-খাওয়া এমনকি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার গাড়ি ভাড়াটাও বহন করেছে আদ-দ্বীন কর্তৃপক্ষ।
এভাবে শুধু জলিল মিয়াই নন, আদ-দ্বীনের অর্থোপেডিকস ও ট্রমাটোলজি বিভাগে বিনা খরচে বিশ্বমানের চিকিৎসা নিয়ে অসংখ্য পঙ্গু মানুষ ভালো হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
ওই একই ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পে খুলনার ফুলতলা থেকে চিকিৎসা নিতে আসেন আসাদ শেখ (২২)। আসাদ নারিকেল গাছ থেকে পড়ে মেরুদন্ডের হাড় ভেঙ্গে পঙ্গু হয়ে যান। পরে ঢাকায় এনে তাকেও ফ্রি চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করে তোলে আদ-দ্বীন। এক সময়ে জীবনের মায়া ত্যাগ করা আসাদ এখন চাকরি করেন সুতার মিলে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকার মগবাজারের আদ-দ্বীন হাসপাতালের এই বিভাগে মেরুদন্ডের হাড় ভাঙ্গা, কোমর ভাঙ্গাসহ অর্থোপেডিকস ও ট্রমাটোলজি বিষয়ে বিশ্বমানের চিকিৎসা দেয়া হয় খুবই অল্প খরচে।
বিভাগের প্রধান প্রফেসর ডা. এম এ বাসেদ বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের এখানে অর্থোপেডিকস ও ট্রমাটোলজি বিষয়ে সুপার বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দিয়ে চিকিৎসা করানো হয়। এখানে মাত্র ১৬০ টাকায় এই ডাক্তারের সেবা পেলেও বাইরে প্রাইভেট চেম্বারে একই ডাক্তার দেখাতে আপনাকে ৬/৭ গুণ বেশি ফি দিতে হবে।
এছাড়া রোগী একবার ভর্তি হলে তার আর কোনো ডাক্তার-খরচ (বিশেষজ্ঞ কনসালট্যান্সি ফি) দিতে হয় না বলেও জানান তিনি। ভর্তি হয়ে বেডেও থাকেন ৫০ভাগ কম খরচে।
জানা গেছে, বাংলাদেশে যে ক’জন অর্থোপেডিক সার্জন রয়েছেন বষীয়ান ও অভিজ্ঞ ডা. বাসেদ তাদের একজন। এছাড়া তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এই একই বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। অস্ট্রেলিয়া থেকে নিয়েছেন ইমারজেন্সি সার্জারির উপর উচ্চতর ডিগ্রি।
তিনি বলেন, আমি পৃথিবীর ৩৭টি দেশের অর্থোপেডিক চিকিৎসা-সেবার সাথে পরিচিত। এতোগুলো দেশের মধ্যে আদ-দ্বীনই এতো কম খরচে বিশ্বমানের সেবা দিচ্ছে। এজন্যই প্রতিদিন আমাদের এখানে বহির্বিভাগে গড়ে ১৫০ জন অর্থোপেডিক রোগী সেবা নিচ্ছেন।
হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. নাহিদ ইয়াসমিন বলেন, আমরা মানুষকে সেবা দেয়ার লক্ষ্যেই এই প্রতিষ্ঠান চালু করেছি। এখানে মুনাফা বড় কথা নয়। আমাদের লক্ষ্য কোনো মানুষ যেনো টাকার অভাবে চিকিৎসাহীন না থাকে।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৫৫ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০১৭
এসআইজে/জেএম
চিকুনগুনিয়ার ফ্রি চিকিৎসা আদ্-দ্বীন হাসপাতালে!
আদ-দ্বীনে মনোরম পরিবেশে ছাত্রীদের মেডিকেল শিক্ষা
দেশের সবচেয়ে বড় ‘নবজাতক নিবিড় পরিচর্যা ইউনিট’ আদ দ্বীনে