ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

শৈত্যপ্রবাহে হাসপাতালে বাড়ছে দগ্ধ রোগীর সংখ্যা

আবাদুজ্জামান শিমুল, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৯, ২০১৮
শৈত্যপ্রবাহে হাসপাতালে বাড়ছে দগ্ধ রোগীর সংখ্যা হাসপাতালে দগ্ধ রোগীরা চিকিৎসা নিতে এসেছেন। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: গত কয়েক দিন ধরে সারাদেশে বইছে শৈত্যপ্রবাহ। এর কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ফলে বাড়ছে ঠাণ্ডাজনিত রোগ-ব্যাধি। এ অবস্থায় তবুও জীবিকার তাগিদে মানুষ কাজ-কর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি শীত তাড়াতে মানুষ অতিরিক্ত গরম কাপড় গায়ে জড়িয়ে ঘর থেকে বাইরে বের হচ্ছেন।

শীতকালে বেশির ভাগ মানুষ গোসলের সময় গরম পানি ব্যবহার করে থাকে। গ্রাম-গঞ্জসহ ঢাকার বিভিন্ন রাস্তা-ঘাটে দেখা যায় শীত তাড়াতে আগুন পোহাতে।

অসাবধানতাবশত গরম পানি ও আগুনে হাসপাতালগুলোতে দগ্ধ রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলছে।

গরম পানিতে গোসল ও আগুন পোহাতে গিয়ে বয়স্কদের পাশাপাশি শিশুরা বেশি দগ্ধ হচ্ছে বলে মনে করছেন ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের চিকিৎসকরা।

ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের জরুরি বিভাগে গিয়ে দেখা যায়, গরম পানি দিয়ে গোসল করতে গিয়ে ও আগুন পোহাতে গিয়ে অসাবধানতাবশত দগ্ধ হয়েছেন অনেকেই। দগ্ধ রোগীদের চিকিৎসকরা দ্রুত চিকিৎসা দিচ্ছেন।

মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের জরুরি বিভাগের (নার্স) তপন কুমার বাংলানিউজকে জানান, বেশ কিছুদিন ধরে শৈত্যপ্রবাহের কারণে গরম পানি ও আগুন পোহাতে গিয়ে দগ্ধ হয়ে অসংখ্য রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে ও নিচ্ছেন।

জরুরি বিভাগে থাকা রেজিস্টার খাতা দেখে তিনি বলেন, গত ৮ জানুয়ারি ২৪ ঘণ্টায় দগ্ধ হয়ে বার্ন ইউনিটে চিকিৎসা নিয়েছে মোট ১০৪ জন। তাদের মধ্যে অধিকংশ রোগী শীত তাড়াতে গরম পানি ও আগুন পোহাতে গিয়ে দগ্ধ হয়েছেন। মঙ্গলবারও সকাল ৯টা পর্যন্ত মোট ১৫জন দগ্ধ রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

খিলগাঁওয়ের সিপাইবাগ থেকে গরম পানিতে দগ্ধ হয়ে ঢামেক বার্ন ইউনিটে চিকিৎসা নিয়েছেন নিটন খান (৪০) নামে এক ব্যক্তি।

তিনি বাংলানিউজকে জানান, তিনি বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। বেশি ঠাণ্ডা পড়ায় সকালে গরম পানি দিয়ে গোসল করার সময় তার বুক ও পেট ঝলসে গেছে। তাই তিনি চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে এসেছেন।

ঢাকা মেডিকেল বার্ন ইউনিটে মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. এনায়ের করিব বাংলানিউজকে জানান, সাধারণত শীতে ঠাণ্ডার জন্য হাসাপাতালে পোড়া রোগীর সংখ্যা বেশি থাকে। তবে এবারের শীতে পোড়া রোগীর সংখ্যা একটু বেশি। গরম পানিতে ও আগুন পোহাতে দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ও এখনো নিচ্ছে। এদের মধ্যে বয়স্কদের পাশাপাশি শিশুদের সংখ্যা বেশি।

তিনি আরো জানান, শীতকালে দগ্ধ রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় বার্ন ইউনিটের শুধু জরুরি বিভাগেই চারজন চিকিৎসকসহ নার্স, ওয়ার্ডবয়সহ সবার সহযোগিতায় যাওয়া রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

ডা. এনায়েত কবির জানান, দগ্ধদের মধ্যে যাদের ভর্তির প্রয়োজন মনে হচ্ছে, তাদের ভর্তি নেওয়া হচ্ছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে পরামর্শক্রমে বাসায় বিশ্রামের জন্য বলা  হচ্ছে।

তিনি আরো জনান, যখন কোনো ব্যক্তি গরম পানি ও আগুনে দগ্ধ হবে। তখন সেই তাকে প্রাথমিক চিকিৎসায় পোড়া অংশে পানি ঢালার জন্য পরামর্শ দেন। তারপরে রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৯, ২০১৮
এজেডএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।