শীতকালে বেশির ভাগ মানুষ গোসলের সময় গরম পানি ব্যবহার করে থাকে। গ্রাম-গঞ্জসহ ঢাকার বিভিন্ন রাস্তা-ঘাটে দেখা যায় শীত তাড়াতে আগুন পোহাতে।
গরম পানিতে গোসল ও আগুন পোহাতে গিয়ে বয়স্কদের পাশাপাশি শিশুরা বেশি দগ্ধ হচ্ছে বলে মনে করছেন ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের চিকিৎসকরা।
ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের জরুরি বিভাগে গিয়ে দেখা যায়, গরম পানি দিয়ে গোসল করতে গিয়ে ও আগুন পোহাতে গিয়ে অসাবধানতাবশত দগ্ধ হয়েছেন অনেকেই। দগ্ধ রোগীদের চিকিৎসকরা দ্রুত চিকিৎসা দিচ্ছেন।
মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের জরুরি বিভাগের (নার্স) তপন কুমার বাংলানিউজকে জানান, বেশ কিছুদিন ধরে শৈত্যপ্রবাহের কারণে গরম পানি ও আগুন পোহাতে গিয়ে দগ্ধ হয়ে অসংখ্য রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে ও নিচ্ছেন।
জরুরি বিভাগে থাকা রেজিস্টার খাতা দেখে তিনি বলেন, গত ৮ জানুয়ারি ২৪ ঘণ্টায় দগ্ধ হয়ে বার্ন ইউনিটে চিকিৎসা নিয়েছে মোট ১০৪ জন। তাদের মধ্যে অধিকংশ রোগী শীত তাড়াতে গরম পানি ও আগুন পোহাতে গিয়ে দগ্ধ হয়েছেন। মঙ্গলবারও সকাল ৯টা পর্যন্ত মোট ১৫জন দগ্ধ রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
খিলগাঁওয়ের সিপাইবাগ থেকে গরম পানিতে দগ্ধ হয়ে ঢামেক বার্ন ইউনিটে চিকিৎসা নিয়েছেন নিটন খান (৪০) নামে এক ব্যক্তি।
তিনি বাংলানিউজকে জানান, তিনি বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। বেশি ঠাণ্ডা পড়ায় সকালে গরম পানি দিয়ে গোসল করার সময় তার বুক ও পেট ঝলসে গেছে। তাই তিনি চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে এসেছেন।
ঢাকা মেডিকেল বার্ন ইউনিটে মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. এনায়ের করিব বাংলানিউজকে জানান, সাধারণত শীতে ঠাণ্ডার জন্য হাসাপাতালে পোড়া রোগীর সংখ্যা বেশি থাকে। তবে এবারের শীতে পোড়া রোগীর সংখ্যা একটু বেশি। গরম পানিতে ও আগুন পোহাতে দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ও এখনো নিচ্ছে। এদের মধ্যে বয়স্কদের পাশাপাশি শিশুদের সংখ্যা বেশি।
তিনি আরো জানান, শীতকালে দগ্ধ রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় বার্ন ইউনিটের শুধু জরুরি বিভাগেই চারজন চিকিৎসকসহ নার্স, ওয়ার্ডবয়সহ সবার সহযোগিতায় যাওয়া রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
ডা. এনায়েত কবির জানান, দগ্ধদের মধ্যে যাদের ভর্তির প্রয়োজন মনে হচ্ছে, তাদের ভর্তি নেওয়া হচ্ছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে পরামর্শক্রমে বাসায় বিশ্রামের জন্য বলা হচ্ছে।
তিনি আরো জনান, যখন কোনো ব্যক্তি গরম পানি ও আগুনে দগ্ধ হবে। তখন সেই তাকে প্রাথমিক চিকিৎসায় পোড়া অংশে পানি ঢালার জন্য পরামর্শ দেন। তারপরে রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৯, ২০১৮
এজেডএস/এএটি