ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

সফল চিকিৎসায় পাইলস থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০১৮
সফল চিকিৎসায় পাইলস থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত সেমিনার/ছবি- শাকিল আহমেদ

ঢাকা: পায়ুপথের সব রোগকেই সাধারণ মানুষ পাইলস বলে জানেন। তবে পায়ুপথের সব রোগই পাইলস নয়। কোনোটা ফিশার, কোনোটা ফিস্টুলা, কোনোটা পাইলস, ফোঁড়া, প্রোলাপস, রক্ত জমাট, পলিপ বা টিউমার। সবগুলোর সঙ্গেই কোষ্ঠকাঠিন্য কমবেশি সবচেয়ে বড় কারণ।

‘বিশ্ব পাইলস দিবস’ উপলক্ষে মঙ্গলবার (২০ নভেম্বর) বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সেমিনারে এমনটাই জানালেন ব্রিটিশ আর্মড ফোর্সেস (অব.) কর্নেল এবং দ্য রয়েল লন্ডন হসপিটালের কনসালট্যান্ট কলোরেক্টাল সার্জন ডা. রাকিবুল আনোয়ার।

দিবসটি উপলক্ষে ‘বাংলাদেশে পাইলস চিকিৎসার সমস্যা ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক এ আলোচনা সভার আয়োজন করে রাজধানীর আর এ হাসপাতাল।

আলোচক বলেন, মলদ্বার দিয়ে রক্ত এলেই রোগী যেন মনে না করেন যে তার পাইলস হয়েছে। একজন কোলোরেক্টাল সার্জন দিয়ে পরীক্ষা করেই তার নিশ্চিত হওয়া উচিত। আমরা পাইলসকে চারটি ভাগে ভাগ করি। পর্যায়- এক, দুই, তিন ও চার। এগুলো লক্ষণের ভিত্তিতে ভাগ করে থাকি। এক. পাইলসে শুধু রক্ত যাবে। এখানে সাধারণত ব্যথা হয় না। পায়খানার পরপর টাটকা রক্ত যায়। দুই. পাইলসে টাটকা রক্ত যাবে এবং রক্তগুচ্ছ বা পাইলসটা গোটার মতো বের হয়ে আসবে। মলত্যাগের পর এটা চলে যাবে।

তৃতীয় পর্যায়ে এ রক্তগুচ্ছ বাইরে বের হবে এবং হাত দিয়ে সেটা ভেতরে ঢুকিয়ে দিতে হবে। চতুর্থ পর্যায়ে এটি কখনোই ঢোকানো যাবে না। বাইরে একটি টিউমার বা মাংসপিণ্ড জাতীয় জিনিস সবসময় বের হয়ে থাকবে। সেটা তার মলত্যাগে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। ব্যথা হবে, এমনকি গ্যাংগ্রিন বা অন্য সমস্যা তৈরি করতে পারে।

চিকিৎসা নিয়ে তিনি বলেন, পাইলসের চিকিৎসার ক্ষেত্রে বিভিন্ন ওষুধ দিয়ে নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। তাই প্রাথমিক অবস্থায় পাইলসের জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ সেবন করতে হবে। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে বিনা অপারেশনের মাধ্যমে ব্যথামুক্তভাবে পাইলসের চিকিৎসা করা সম্ভব। যেমন- বেন্ডিং, ইনজেকশন (স্কেলেরথেরাপি), ইনফ্রারেড কোয়াগুলেশন ইত্যাদি।

এসময় তিনি জোর দেন কোষ্ঠ্যকাঠিন্য থেকে সাবধানতা অবলম্বনের জন্যেও। বলেন, কোষ্ঠকাঠিন্য যাতে না হয়, সেদিকে নজর রাখতে হবে। এজন্য বেশি বেশি শাকসবজি, ফলমূল খেতে হবে। দৈনিক অন্তত ৮ গ্লাস পানি পান করতে হবে। মাংস (খাসি, গরু) কম খেতে হবে। ইসবগুলের ভূষি রাতে ভিজিয়ে সঙ্গে সঙ্গে খেতে হবে। এরপরও কোষ্ঠবদ্ধতা থাকলে ওষুধের মাধ্যমে মল নরম রাখতে হবে। কেননা কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণে পায়ুপথের রক্তনালি ফেটে রক্তজমাট বাঁধতে পারে। কখনও কখনও প্রচণ্ড ব্যথা হতে পারে। সেক্ষেত্রে অপারেশনও লাগতে পারে।

তিনি বলেন, পাইলস অতি সাধারণ রোগ। অনেকের ধারণা, পাইলস ভালো হয় না এবং এটির কোনো চিকিৎসা নেই। এমন ধারণা ঠিক নয়। সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে পাইলসের সফল চিকিৎসা সম্ভব এবং পাইলস থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০১৮
এইচএমএস/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।