ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

২০২০ সালেই ম্যালেরিয়ামুক্ত হবে ৫১ জেলা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০০৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০১৯
২০২০ সালেই ম্যালেরিয়ামুক্ত হবে ৫১ জেলা বৈঠকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, কালের কণ্ঠের সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলনসহ অতিথিরা, ছবি: ডিএইচ বাদল

ঢাকা: ২০২১ লক্ষ্য হলেও ২০২০ সালের মধ্যেই দেশের ৫১টি জেলা ম্যালেরিয়ামুক্ত হবে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক।

তিনি বলেছেন, আমরা যেভাবে কাজ করে যাচ্ছি, সেভাবে করলে লক্ষ্যের অনেক আগেই আমরা লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছে যেতে পারব। একইসঙ্গে এই গতিতে কাজ চললে ২০৩০ সালের আগে পুরো বাংলাদেশ ম্যালেরিয়ামুক্ত হবে।

সোমবার (২৮ অক্টোবর) রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের কনফারেন্স হলে ‘ম্যালেরিয়া নির্মূলে অগ্রগতি ও ভবিষ্যৎ করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন মন্ত্রী। কালের কণ্ঠ ও ব্র্যাক যৌথভাবে এ বৈঠক আয়োজন করে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, কমিউনিকেবল ডিজিজের ক্ষেত্রে সফলতা অর্জনের পর এখন আমাদের লক্ষ্য নন-কমিউনিকেবল ডিজিজ। আমরা ডেঙ্গুতেও ব্যাপক সফলতা দেখিয়েছি। একটি বিষয় অবাক করে, পৃথীবিতে ছোট একটি প্রাণী, মশার কামড়ে যত লোক মারা গেছে, অন্যকোনো পোকামাকড়ের কামড়ে এত লোক মারা যায়নি। তাই এদিকে আমাদের বিশেষ নজর রাখতে হবে। এছাড়া ডেঙ্গুতে ফিলিপাইনের মতো দেশে হাজারের অধিক মানুষ মারা গেছে। এদিক বিবেচনাতে আমরা ব্যাপক সফল।

মশা দ্বারা সৃষ্ট রোগগুলোর ক্ষেত্রে সচেতনতাই মুখ্য উল্লেখ করে জাহিদ মালেক বলেন, এসব ক্ষেত্রে সচেতনতা অর্জন করাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ। মশারি লাগলে আমরা আরও দেব। এছাড়া সরকারি পর্যায়ে প্ল্যানে ঘাটতি থাকলে সেদিকে লক্ষ্য রেখে কাজ করতে হবে। চিকিৎসা ব্যবস্থাকে জোরদার করতে হবে। যাতে মৃত্যু প্রতিরোধ করা যায়।

ম্যালেরিয়া নির্মূলে দেশের ক্রস বর্ডার ট্রান্সমিশন থামাতে হবে। কেননা, বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ম্যালেরিয়া ভারতে রয়েছে। সেখান থেকে প্রচুর আক্রান্ত লোক বাংলাদেশে আসে। এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ক্রস বর্ডার ট্রান্সমিশন রোধে যথাযথ পদক্ষেপ দ্রুত গ্রহণ করা হবে। ম্যালেরিয়া নির্মূলের টাস্কফোর্স দ্রুত গঠন করা হবে। আমাদের বাজেট আছে বা বরাদ্দ আছে। শুধু কাজগুলো সম্পাদন করাই মূল লক্ষ্য আমাদের।

কালের কণ্ঠের সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলনের সঞ্চালনায় বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ, সাবেক মহাপরিচালক ও ম্যালেরিয়া বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এমএ ফয়েজ, কালের কন্ঠের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোস্তফা কামাল, ব্র্যাকের কমিউনিকেবল ডিজিজেস ও ওয়াশ কর্মসূচির পরিচালক ড. মো. আকরামুল ইসলাম, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কমিউনিকেবল ডিজিজেস সারভাইল্যান্সের মেডিক্যাল অফিসার ডা. মিয়া সেপাল, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ, রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রিন্সিপাল সায়েন্টিফিক অফিসার ড. এএসএম আলমগীর, অধিদপ্তরের মনিটরিং অ্যান্ড ইভালুয়েশন এক্সপার্ট ডা. নজরুল ইসলাম, জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল কর্মসূচির ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. এমএম আক্তারুজ্জামান প্রমুখ।

বৈঠকে জানানো হয়, ম্যালেরিয়া নির্মূলে আশাব্যঞ্জক সাফল্য থাকলেও এখনও দেশের প্রায় ১৮.৩৯ মিলিয়ন মানুষ ম্যালেরিয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন। দেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে ১৩টি জেলায় এর প্রাদুর্ভাব বেশি। তবে ২০১৮ সালে দেশে ম্যালেরিয়া আক্রান্ত সংখ্যা ১০ হাজার ৫২৩ জন; যা ২০১৫ সালের তুলনায় ৭৪ শতাংশ কম।

বক্তারা বলেন, আমাদের গবেষণা আরও বাড়াতে হবে। মশারির ওপর নির্ভর করে থাকলে হবে না। ম্যালেরিয়ায় ওষুধের ওপর রেজিস্ট্যান্স বেড়েছে। এ লক্ষ্যে কাজ করতে হবে। আবার মশারি দেওয়ার ক্ষেত্রেও স্থানীয় রাজনৈতিকদের প্রভাব দূর করতে হবে। না হলেলে টার্গেটেড মানুষ মশারি পাবেন না। এছাড়া চিকিৎসায় নির্ধারিত গাইডলাইন মানা হচ্ছে কি-না, তা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করতে হবে। মশা নির্মূলের কাজে নামতে হবে। সব ধরনের মশা নির্মূলের কাজ সারাবছর ধরে চালাতে হবে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য মন্ত্রণালয়কেও এগিয়ে আসার অনুরোধ জানান বক্তারা।

বাংলাদেশ সময়: ২০০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১৯
এমএএম/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।