স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত গণবিজ্ঞপ্তিটিতে সোমবার (১৬ মার্চ) ১০ দফা নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একই দিন শিক্ষা মন্ত্রণালয় ৩১ মার্চ পর্যন্ত দেশে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, বর্তমান সময়ে করোনা ভাইরাস বিশ্বময় আতঙ্কের সৃষ্টি করছে। দেশে সব মিলে ৮ জন করোনা রোগী শনাক্ত করা হয়েছে এবং তাদের মধ্য থেকে ৩ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি চলে গেলেও নতুন আরো ৩ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। কাজেই এই ভাইরাস প্রতিরোধে এখনই জনসচেতনা বৃদ্ধি করা জরুরি প্রয়োজন।
পড়ুন>>স্কুল-কলেজে ছুটি, থাকতে হবে বাড়িতেই
গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ মোকাবেলায় সারাবিশ্বে হোম কোয়ারেন্টাইন (নিজ গৃহে সার্বক্ষণিক অবস্থান) একমাত্র কার্যকর উপায় হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। দেশে প্রত্যাগত প্রবাসী বাংলাদেশিদের মাধ্যমে বাংলাদেশে এই ভাইরাস সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকি রয়েছে। এমতাবস্থায়, বিদেশ প্রত্যাগত নাগরিকদের হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করা অতীব জরুরি।
করোনা ভাইরাস সংক্রমণ মোকাবেলায় জাতীয়, বিভাগীয়, সিটি করপোরেশন এলাকায়, পৌরসভা, জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদ পর্যায়ে কমিটি গঠিত হয়েছে। হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিতকরণে সংশ্লিষ্ট কমিটি প্রযোজ্য ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত কার্যক্রম গ্রহণ করবেন-
১. হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তিবর্গ ১৪ দিন ঘরের বাইরে বের হবেন না এবং নিজ বাড়ির নির্ধারিত একটি কক্ষে অবস্থান করবেন।
২. পরিবারের অন্যান্য সদস্য দেশে প্রত্যাগত সদস্যের হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করবেন।
৩. গঠিত কমিটিসমূহ সম্প্রতি বিদেশ প্রত্যাগত ব্যক্তিদের বাড়ী চিহ্নিত করবেন এবং তাদের গৃহে সার্বক্ষণিক অবস্থানের বিষয়ে তদারকি করবেন।
৪. গঠিত কমিটিসমূহ হোম কোয়ারেইন্টাইন নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট এলাকার জনপ্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ (যেমন: পৌর মেয়র, পৌর কাউন্সিলর, ইউপি চেয়ারম্যান, ওয়ার্ড মেম্বার, ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা, স্বাস্থ্য সহকারী, কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার, পরিবার কল্যাণ সহকারী, পরিবারকল্যাণ পরিদশির্কা, গ্রাম পুলিশ, স্থানীয় সাংবাদিক) বিদেশ প্রত্যাগত ব্যক্তি সম্পর্কে অবহিত করে হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে প্রয়োজন অনুযায়ী সম্পৃক্ত করতে হবে।
৫. কোয়ারেন্টাইনকৃত ব্যক্তির আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব উক্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসতে পারবেন না।
৬. যদি কোয়ারেন্টাইনকৃত ব্যক্তি উপর্যুক্ত নিয়ম ভঙ্গ করেন, তবে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিবর্গ সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এবং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সহায়তা গ্রহণ করবেন।
৭. প্রয়োজনে ৩নং ক্রমিকে বর্ণিত ব্যক্তিবর্গ সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, উপজেলা চেয়ারম্যান, সিভিল সার্জন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তাকে অবহিত করবেন।
৮. হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তিগণ অসু্স্থ হলে স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ এবং প্রয়োজনে স্থানীয় সিভিল সার্জন, হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করবেন। তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
৯. কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তিগণ যদি নিয়ম ভঙ্গ করেন তাহলে সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন, ২০১৮ অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। উক্ত আইনে দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তাগণ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
১০. প্রতিদিন এ বিষয়ে জেলা ভিত্তিক একটি প্রতিবেদন তৈরিপূর্বক সংশ্লিষ্ট সিভিল সার্জন নিয়ন্ত্রণ কক্ষ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ই-মেইল controlroomdghs@yahoo.com ও মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের ই-মেইল hsdcontrolroom@gmail.com এ প্রেরণ করবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৮ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০২০
এমআইএইচ/এমএ