ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

প্রথম মাসেই ১০ হাজার করোনা টেস্ট কিট বানাবে গণস্বাস্থ্য

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০১ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০২০
প্রথম মাসেই ১০ হাজার করোনা টেস্ট কিট বানাবে গণস্বাস্থ্য

সাভার: বাংলাদেশের ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রকে স্বল্প খরচে করোনা ভাইরাসের টেস্ট কিট তৈরির অনুমোদন দিয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশে ৭ দিনের মধ্যে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন হতে যাচ্ছে করোনার টেস্ট কিট।

বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ) দুপুরে বাংলানিউজকে করোনা টেস্ট কিট তৈরির অনুমোদনের খবর নিশ্চিত করেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

এর আগে সোমবার অনুমোদনের জন্য আবেদন করে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র।

 

ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, যুক্তরাজ্য থেকে কাঁচামাল আনতে স্পেশাল প্যাকিং ও কুরিয়ারসহ যাবতীয় প্রসেসিংয়ের জন্য ৫-৭ দিন সময় লাগবে। তারপর তা নিয়ে আমরা বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় কাজ করে দশ দিনের মধ্যে নমুনা কিট তৈরি করতে পারবো। আর ১ মাসের মধ্যে অন্তত ১০ হাজার কিট বাজারে সরবরাহ করতে পারবো। প্রথম মাসেই ১০ হাজার কিট সরবরাহ করতে পারবো।

২০১৯ সালে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান থেকে ১৭৬ দেশে ছড়িয়ে গেছে করোনা ভাইরাস। আর এ ভাইরাসের টেস্ট কিট উৎপাদনের জন্য এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই কাজ শুরু করে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র।

গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিক্যাল কলেজের ভাইস প্রিন্সিপ্যাল ডা. মুহিব উল্লাহ খন্দকার বলেন, যে পদ্ধতিতে এই কিট তৈরি করা হবে তাকে বলা হয় ‘ডট ব্লট টেকনোলজি’।

এই কিট কীভাবে নতুন করোনা ভাইরাস শনাক্ত করবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আক্রান্ত ব্যক্তির রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে এই কিটে ভাইরাস শনাক্ত করা যাবে। এর জন্য স্পুটাম নেওয়ার প্রয়োজন নেই। প্রথমে সন্দেহজনক ব্যক্তির রক্তের নমুনা নেওয়া হবে। সেই রক্ত থেকে ‘সিরাম’ আলাদা করতে হবে। কিটে সেই সিরাম রেখে তার ওপর এন্টিজেনের বিক্রিয়া ঘটানো হবে।

যদি বিক্রিয়া হয় তাহলে সন্দেহজনক ব্যক্তির শরীরে ভাইরাসের প্রাথমিক উপস্থিতি রয়েছে বলে প্রমাণ হবে। বিক্রিয়া না করলে তিনি আক্রান্ত নন বলে বিবেচিত হবে।

সাভারের গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে ইতোমধ্যে এই কিট এর উৎপাদনের জন্য হাইটেক ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে।

গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, এই পদ্ধতিতে ৫ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যে অত্যন্ত স্বল্পমূল্যে করোনাভাইরাস শনাক্ত করা যাবে। এটা করতে রিএজেন্ট লাগে। কেমিক্যাল রিএজেন্টগুলো সহজলভ্য নয়। এগুলো পাওয়া যায় সুইজারল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের অঙ্গ সংগঠন গণস্বাস্থ্য-আরএনএ বায়োটেক লিমিটেড কোভিড-১৯ শনাক্তে এই কিট তৈরি করেছে। প্রতিষ্ঠানটির উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন একটি দল গত ফেব্রুয়ারি থেকে কিট তৈরি ও উৎপাদনের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। এ দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ড. বিজন কুমার শীল, যিনি ২০০৩ সালে সিঙ্গাপুরে সার্স পিওসি কিট তৈরি করা দলের সদস্য ছিলেন।

এ দলের অন্য সদসস্যরা হলেন- ড. নিহাদ আদনান, ড. মোহাম্মদ রঈদ জমির উদ্দিন এবং ড. ফিরোজ আহমেদ। বাণিজ্যিক উৎপাদনের জন্যে তারা কর্মীদের ইতিমধ্যে ট্রেইনিং এর ব্যবস্থা শুরু করেছেন।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র এই কিট মাত্র ২০০ টাকায় সরবরাহ করতে পারবে। তবে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের অনুরোধ রয়েছে সরকার যেন জনসাধারণের কাছে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকায় এই টেস্ট ছড়িয়ে দিতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০১ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০২০
এইচএডি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।