বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, করোনা ভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে নিজে ও জনগণকে কিভাবে সচেতন করা যায়, সে বিষয়ে আমাদের চেষ্টা করা। আমি, আপনি কেউ কিন্তু এই ভাইরাস থেকে নিরাপদ নই।
কারণ: যাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কম বা অন্যান্য বড় অসুখ ভুগছেন। যেমন- ডায়বেটিক, হৃদরোগ, অ্যাজমা রোগীরা এই ভাইরাসের আক্রান্ত হওয়া বেশি ঝুঁকির মধ্যে আছেন। আমরা যেহেতু স্বল্পআয়ের দেশে বাস করছি, তাই আমাদের হাতের কাছে অর্থাৎ ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে যা আছে তা দিয়ে প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় যোগ করতে পারি।
যেসব খাবার সংক্রমণ প্রতিরোধ সক্ষমতা বাড়ায়:
দুধ বা দুধজাতীয় খাবার। যেমন-টকদই ও ছানা। খাদ্যশস্য (যেমন- লাল চাল, লাল আটা, মিষ্টি আলু), মাছ, মুরগি ও ডিম। প্রচুর রঙিন শাকসবজি। এছাড়া ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ ফল বা টক জাতীয় ফল। যেমন-লেবু, কমলা, আমলকী, মালটা, পেয়ারা, আনারস, বেদানা ইত্যাদি।
মৌসুমি সবজি, মাশরুম এবং আদাসহ চিকেন ক্লিয়ার স্যুপ, আদা, ব্ল্যাক ও জিঞ্জার-টি। আমাদের প্রতিদিনের ডায়েটে এন্টি-ভাইরাল খাবারগেুলো অন্তর্ভুক্ত করা খুবই জরুরি।
রসুনের রয়েচে অ্যালাইসিন নামক প্রাকৃতিক উপাদান। যা ভাইরাসের বিরুদ্ধে কাজ করে। একটি কাঁচা রসুন চিবিয়ে অথবা সূপের সঙ্গে যোগ করে খেতে পারেন।
আরও একটি প্রক্রিয়ায় আমরা গ্রহণ করতে পারি:
(১ টেবিল চামচ রসুনকুচি+১ টেবিল চামচ মধু+১টা লবঙ্গ) একসঙ্গে খেতে পারি। এটি দারুণভাবে ইমিউন সুরক্ষার একটি প্রক্রিয়া। এছাড়া আদা, মধু ও মাশরুম খাওয়ার পরিমাণ বাড়াতে হবে।
রান্নার জন্য সয়াবিন বা সরিষা তেলের পরিবর্ততে নারিকেল তেল ব্যবহার করতে পারি। নারিকেল তেলে লরিক অ্যাসিড ও কাপ্রিলিক অ্যাসিড করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে। এছাড়া বিভিন্ন ভেষজ যেমন- তুলসী, থানকুনি, অরিগানো, মেথি-রোগ প্রতিরোধ বাড়াতে সহায়ক।
যেসব খাবার আমাদের এড়িয়ে চলতে হবে:
শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ঘরে বসে বাইরের অর্ডার ফুড একদম বাদ দিতে হবে। অতিরিক্ত মসলাদার খাবার, ভাজাপোড়া খাবার। বাইরের হোটেল বা রাস্তার খাবার। ধূম ও মদপান।
খাবারের পাশাপাশি প্রতিদিন কিছু ব্যায়াম, পর্যাপ্ত বিশ্রাম এবং সবচেয়ে বেশি লক্ষ্য রাখতে হবে ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতার ক্ষেত্রে। প্রতিদিনের খাবারে যদি আমরা ৬০%-৬৫% অ্যান্ট্রি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবারগুলো (ওপরে উল্লেখিত) রাখি তবেই আমাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে আমরা সক্ষম হবো। তাই অসুস্থ হওয়ার আগে প্রতিরোধ খুবই জরুরি। আর এই প্রতিরোধের এজন্য অনাক্রম্যতা (টিকা) সুরক্ষা বুস্ট-আপ করাটাও খুবই জরুরি।
লেখক:চিফ ডায়েটিশিয়ান তপতী সাহা, স্কয়ার হসপিটালস লিমিটেড
বাংলাদেশ সময়: ১৯২০ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০২০
এএটি