ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

করোনা শঙ্কায় ভুগছেন ফেনী হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীরা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১৩ ঘণ্টা, মে ৭, ২০২০
করোনা শঙ্কায় ভুগছেন ফেনী হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীরা ফেনী জেনালের হাসপাতাল। ছবি: বাংলানিউজ

ফেনী: ২৫০ শয্যার ফেনী জেনালের হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তিকৃত এক রোগী কোভিড-১৯ পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। এতে তার চিকিৎসায় হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসাকর্মীরা করোনার ঝুঁকিতে পড়েছেন।

একটি সূত্র জানায় কিছু স্বাস্থ্যকর্মী কোয়ারেন্টিনে গেছেন। জানা যায়, বৃহস্পতিবার (৭ মে) পঁচিশের অধিক স্বাস্থ্যকর্মীর নমুনা সংগ্রহ করার কথা রয়েছে।

এর আগে বুধবার (৬ মে) ওই রোগীর করোনা শনাক্ত হয়।

ফেনী জেনারেল হাসপাতালে তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবুল খায়ের মিয়াজী বলেন, জেলা সদর হাসপাতাল ফেনীর ফ্লু আইসোলেশান ওয়ার্ডে ভর্তিকৃত মিরসরাই নিবাসী রোগীর কোভিড-১৯ পজিটিভ, বৃহস্পতিবার ওই রোগীর সংস্পর্শে আসা গ্রুপের স্বাস্থ্ কর্মীদের নমুনা সংগ্রহ করা হবে। পরবর্তী গ্রুপ দায়িত্ব পালন করবেন।

একসঙ্গে অধিকসংখ্যক চিকিৎসাকর্মী কোয়ারেন্টিনে গেলে হাসপাতালে চিকিৎসাসেবার যেমন ব্যাঘাত ঘটবে, তেমনি ঝুঁকির পরিমাণও কম নয় বলছেন স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টরা।

সবমিলিয়ে হাসপাতালের পরিস্থিতি কি হতে যাচ্ছে তা নিয়ে কর্মকর্তারা রয়েছেন দুশ্চিন্তায়! পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর্মীদের পরিবারও রয়েছেন ঝুঁকির তালিকায়।

ফেনী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক স্বাস্থ্যকর্মকর্তা ডা. ইকবাল হোসেন ভূঞা জানান, গত ২ মে শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসাপাতালে ওই মিরসরাইয়ের কিশোরীকে আনা হয়। সেদিনই তার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য চট্টগ্রাম পাঠানো হয়। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করতে বললে তার পরিবার সম্মত হয়নি। পরে ৪ মে তার অবস্থা খারাপ হলে তাকে ফের হাসপাতালে নিয়ে আসে তার পরিবার। আইসোলেশনে ওয়ার্ডে রেখে তার চিকিৎসা শুরু হয়। তার বুকের এক্সরে করে দেখা যায় ফুসফুসে পানি জমেছে। অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে উঠছে। শ্বাসকষ্ট বেড়ে চলেছে।

ডা. ইকবাল হোসেন ভূঞা আরও জানান, বুধবার বিকেলে তার কোভিড-১৯ সংক্রমণের প্রমাণ মেলে। ওইদিন তাকে সন্ধ্যা ৭টার দিকে করোনা ডেডিকেটেড অ্যাম্বুলেন্সযোগে চট্টগ্রামে পাঠানো হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের এক স্বাস্থ্যকর্মকর্তা জানিয়েছেন, ওই রোগীর চিকিৎসায় নিয়োজিত এক মেডিসিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ কয়েকজন স্বাস্থ্যকর্মী খুব কাছ থেকে তার চিকিৎসা করেছে।

ওই কর্মকর্তা বলেন, যতই সুরক্ষা পোশাক পরে চিকিৎসা দেওয়া হোক না কেন, তবু আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। নমুনা পরীক্ষায় যদি চিকিৎসকদের করোনা পজিটিভ হয়, তাহলে হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত হবে।

বিএমএ ফেনীর সভাপতি ডা. সাহেদুল ইসলাম কাওসার কমিউনিটি সংক্রমণের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

বুধবার সন্ধ্যায় ফেসবুকে প্রকাশ করা এক স্ট্যাটাসে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ফেনী জেনারেল হাসপাতালে গত কয়েকদিন ধরে ভর্তিকৃত একজন রোগীর কোভিড-১৯ পজিটিভ মানে বেশকিছু চিকিৎসাকর্মী কোয়ারেন্টিনে এ যেতে হচ্ছে। এমতাবস্থায় ট্রান্সমিশন রোধের একমাত্র উপায় হলো শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা।

ওই পোস্টে তিনি আরও বলেন, ফেনী জেলা অন্য অনেক জেলা থেকেই ভালো অবস্থায় ছিলো এতদিন। একটি খারাপ টার্নের দিকে মোড় নিচ্ছে হয়তোবা। তাই এক্ষুণি সর্বোচ্চ সতর্কতা প্রয়োজন।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যানুযায়ী, বুধবার পর্যন্ত ফেনীতে ৭ জনের দেহে করোনা পজিটিভ এসেছে। এদের মধ্যে ৪ জন নারী ও ৩ জন পুরুষ। আক্রান্তদের মধ্যে ২ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১২১১ ঘণ্টা, মে ০৭, ২০২০
এসএইচডি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।