শনিবার (৯ মে) রাতে হাসপাতালের কর্মকর্তারা বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
ঢামেকের দ্বিতীয় শ্রেণির হাসপাতাল শাখার বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান জুয়েল জানান, দেশে করোনা প্রভাব বিস্তারের সঙ্গে সঙ্গে শনিবার পর্যন্ত আমাদের হাসপাতালে ৮৫ জন নার্স কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়েছেন।
তিনি আরো জানান, এখন পর্যন্ত সবাই মোটামুটি ভালো আছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব শুরুর পর অনেক রোগী তথ্য গোপন করে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিয়েছে। তাদের সেবা দিয়েছে আমাদের এই নার্সরা। তাদের সংস্পর্শে এসে তারা আক্রান্ত হয়েছে বলে আমরা মনে করি। এছাড়া করোনা শুরুর প্রথম দিকে সুরক্ষা সামগ্রী যেমন পিপিই, সুরক্ষা চশমা ও অন্যান্য অনেক কিছুই পর্যাপ্ত পরিমাণে সাপ্লাই ছিল না। এগুলো না থাকার কারণে আমাদের নার্সরা বেশি আক্রান্ত হয়েছে।
ঢামেকের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি আবু সাঈদ জানান, করোনা শুরুর পর থেকে এই পর্যন্ত আমাদের ১৫ জনের বেশি কর্মচারী আক্রান্ত হয়েছে। এদের মধ্যে দুইজন বাইরের একটি সরকারি হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়েছে। অন্যরা হোম আইসোলেশনে আছে।
তিনি আরো জানান, হাসপাতাল থেকে যে সুরক্ষা সামগ্রী আমাদের দেওয়া হচ্ছে সেগুলো পর্যাপ্ত নয়।
ঢামেকের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী কল্যাণ সমিতির সভাপতি আব্দুর রব জানান, করোনা প্রাদুর্ভাব শুরু থেকে শনিবার পর্যন্ত তাদের ৬ জন টেকনোলজিস্ট করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। এদের মধ্যে একজন এক্স-রে বিভাগে ডিউটি করতেন ও বাকিরা ঢামেকের প্যাথলজি বিভাগের। তারা সবাই হোম আইসোলেশনে আছেন।
ঢাকা মেডিকেল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন জানান, দেশে করোনা প্রাদুর্ভাব শুরুর পরেই আমাদের হাসপাতালে অনেক রোগী এসেছিল। সেইসব রোগী তথ্য গোপন করার কারণে ডাক্তার, নার্সরা তাদের সংস্পর্শে এসে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। পড়ে সেইসব রোগীকে পরীক্ষা করে দেখা যায় করোনা পজিটিভ। প্রথমদিকে রোগীরা তথ্য গোপন করার কারণে তাদের সংস্পর্শে এসেই আমাদের হাসপাতালে ডাক্তারসহ অনেকেই আক্রান্ত হয়েছে। আমাদের হাসপাতালে এখন পর্যন্ত করোনায় আনুমানিক ২০ জন চিকিৎসক আক্রান্ত হয়েছে।
তিনি আরো জানান, হাসপাতালে জেনারেল আইসিইউতে শনিবার দুইজন নার্স, একজন ওয়ার্ড বয় করোনা পজিটিভ হয়েছে। যারা আক্রান্ত হয়েছে তারা সম্পূর্ণ পরিপূর্ণ সুরক্ষা সামগ্রী পরে ডিউটি করছিল। যেহেতু তারা পরিপূর্ণ সুরক্ষা সামগ্রী পরা অবস্থায় ছিল তাদের দ্বারা কোনোমতেই কোনো রোগী করোনায় আক্রান্ত হতেই পারে না। নতুন করে যারা আইসিউতে ছিলেন তাদেরকে হোম আইসোলেশনে নেওয়া হয়েছে।
করোনা থাবার কারণে হাসপাতাল লকডাউন করা হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো জানান, হাসপাতালের কোনো বিভাগ লকডাউনের প্রশ্নই উঠে না। হাসপাতাল যদি লকডাউন হয়ে যায় তাহলে রোগীরা কোথায় যাবে?
বাংলাদেশ সময়: ২৩৫৪ ঘণ্টা, মে ০৯, ২০২০
এজেডএস/এমএইচএম